অটো ব্লকের কারখানা দিয়ে সফল কুড়িগ্রামের মামুন
প্রকাশিত : ১৪:৩২, ১৬ মে ২০২৩
ইটের পরিবর্তে অল্প খরচে পরিবেশ বান্ধব ইউনিক ব্লক তৈরির কারখানা করে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন বুনছেন কুড়িগ্রামের মোঃ মিদুল হাসান মামুন (৩৮) নামের এক শিক্ষিত যুবক। কারখানা দেয়ার দুই বছরের মধ্যে বেশ সুনাম অর্জন করেছেন তিনি। সাধারণ ইটের তুলনায় সাশ্রয়ী, টেকশই ও পরিবেশ বান্ধব হওয়ায় এ ব্যবসায় বিনিয়োগে সফল হচ্ছেন। প্রতি মাসে গড়ে ৩-৪ লাখ টাকা আয় করছেন বলে জানান তিনি।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার কৃষ্ণপুর এলাকার মোঃ সাইফুর রহমানের ছেলে মামুন বেসরকারি চাকরি বাদ দিয়ে নিজেই নিজের আত্মকর্মসংস্থান করতে এ কারখানার উদ্যোগ নেন। কংক্রিট ব্লক পরিবেশ বান্ধব হওয়ায় আরও আগ্রহ বাড়ে তার। পরে ইউটিউব দেখে অটো ব্লক তৈরির ধারণা নিয়ে চীন থেকে মেশিন যন্ত্রাংশ এনে কারখানা দেন এই যুবক।
সরেজমিনে দেখা যায়, কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ঘোগাদহ ইউনিয়নের পূর্ব ধরলা ব্রীজ সংলগ্ন ‘সরকার কংক্রিট ব্লক’ নামের কারখানার ভিতরে উম্মুক্ত জায়গায় সারিবদ্ধভাবে সাজানো জার্মান প্রযুক্তিতে তৈরি ৭ ধরনের ব্লক। কংক্রিটের এই ব্লক নির্মাণে ব্যবহার করা হয় ২.৫ এফএম সিলেট বালু, ১.৫ এফএম লোকাল বালু, ওপিসি সিমেন্ট, হাইগ্রেড এডমিক্সার, কংক্রিট ও নুড়ি পাথর।
গুণগত মান ঠিক রাখতে উৎপাদনের আগে পরে ল্যাব টেস্টের মাধ্যমে এর পিএসআই নির্ণয় করা হয়। দিনে প্রায় ৭ থেকে ১০ হাজার ব্লক তৈরি করতে পারে প্রতিষ্ঠানটি। ইমরাত ও রাস্তা তৈরিতে ব্লকে চাহিদা বেড়ে চলছে। তবে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা বা অর্থিক সহযোগিতার ব্যবস্থা করলে অটো ব্লকের বাণিজ্যিক সমৃদ্ধি সম্ভব বলে জানান ওই উদ্যোক্তা।
সরকার কংক্রিট ব্লকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ মিদুল হাসান মামুন বলেন, দিন যত যাচ্ছে এটির চাহিদা তত বাড়ছে। সরকারি-বেসরকারি উন্নয়ন কাজ ছাড়াও শহরে-গ্রামে বাড়ি তৈরির কাজেও দিন দিন এর ব্যবহার বাড়ছে। কংক্রিটের ব্লক দিয়ে স্থাপনা নির্মাণ করলে সাধারণ ইটের চেয়ে ২৫% খরচ কম পড়ে। এছাড়া ভবনের লোড বিয়ারিং ক্যাপাসিটি সমানভাবে কমবে। পাশাপাশি মানের দিক থেকেও সাধারণ ইটের তুলনায় টেকসই-মজবুত। পরিবেশের কোনরকম ক্ষতিসাধন না করেই এটি উৎপাদন করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, কুড়িগ্রামে এটি প্রথম ব্লক তৈরি কারখানা। দিনে দিনে উদ্যোক্তা তৈরি হবে। সরকার যদি কংক্রিট কারখানা ব্লকে ভ্যাট এবং ট্যাক্স রিবেইট, ট্যাক্স হলিডে, ক্যাশ ইনসেনটিভ সুবিধা প্রদান করে তাহলে বিনিয়োগকারীরা আরও উৎসাহিত হবেন।
কুড়িগ্রাম জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোঃ রেজাউল করিম বলেন,কংক্রিট ব্লক এটি পরিবেশ বান্ধব ব্লক। আমরা ইতিমধ্যে জেলার কয়েকটি কংক্রিট ব্লক কারখানা মালিকের আবেদন পেয়েছি। জেলায় কংক্রিট ব্লক কারখানা গড়তে বিনিয়োগকারীদের উৎসাহিত করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ বলেন, আগামী ২০২৫ সালের মধ্যে প্রচলিত ইটভাটাগুলো বন্ধ হচ্ছে। সেক্ষেত্রে কংক্রিট ব্লক পরিবেশ বান্ধব হওয়ায় ভালো ভূমিকা রাখবে। জেলা প্রাশসনের পক্ষ থেকে কংক্রিট ব্লক কারখানার মালিকদের উৎসাহিত করতে সকল প্রকার সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।
এএইচ
আরও পড়ুন