ঢাকা, সোমবার   ০২ ডিসেম্বর ২০২৪

অতিথি পাখির আগমনে মুখর ঠাকুরগাঁওয়ের রামরাই দিঘি

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৩:৫৩, ৩০ ডিসেম্বর ২০২২

প্রতি বছরের মতো এ বছরও ঝাঁকে-ঝাঁকে অতিথি পাখির সমাগম হয়েছে রামরাই দিঘিতে। অতিথি পাখির আগমনে মুখর এখন এই দিঘি। জেলার রাণীশংকৈল উপজেলায় ৪২ একর জমি জুড়ে অন্যতম প্রাচীনতম এই দিঘিতে অতিথি পাখি দেখতে জমেছে দর্শনার্থীদের ভীড়।

উপজেলা শহর থেকে ৪ কি.মি. দূরে উত্তরগাঁও মৌজায় বরেন্দ্র অঞ্চলের দ্বিতীয় বৃহত্তম জলাশয় রামরাই দিঘীর অবস্থান। প্রতিদিন ১ হাজারের বেশি পর্যটক আসেন দিঘিটির সৌন্দর্য উপভোগ করতে।

এ দেশের নদ-নদী, হাওর-বাওড়ের ভালোবাসার টানে হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে রামরাই দিঘীতে আসে এসব পাখি। শীত এলেই নতুন রূপে সাজে পুরো দিঘির জলাশয়। অতিথি পাখি ও জলাশয়ের প্রাকৃতিক নয়নাভিরাম দৃশ্য সত্যিই মনোমুগ্ধকর। প্রতিবছর শীত এলেই এসব বিদেশি পাখি এখানে এসে প্রকৃতিকে সাজায় নতুন সাজে। পাখি প্রেমী ও সৌন্দর্য পিপাসুরা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মন্ডিত পর্যটন কেন্দ্র’র পাখিগুলোকে দেখার জন্য ছুটে আসেন প্রতিনিয়ত।

রামরাই দিঘির পুরো এলাকা পরিণত হয়েছে পাখির স্বর্গরাজ্যে। সন্ধ্যা নামলেই দিঘীপাড়ের লিচু বাগানে আশ্রয় নেয় এসব পাখি। প্রতিদিনই দুর-দুরান্ত থেকে রামরাই দিঘিতে ছুটে আসছেন পাখি প্রেমী পর্যটকরা।

শীতজুড়ে ঠাকুরগাঁওয়ের রামরাই দিঘি অতিথি পাখির আনাগোনায় মুখরিত থাকে। পারিযায়ী এসব পাখির আগমনে পাঁচশ বছরের পুরোনো জেলার সবচেয়ে প্রাচীন ও বৃহত্তর এই দিঘির সৌন্দর্যে বাড়তি মাত্রা যোগ হয়েছে। অপূর্ব সৌন্দর্যে ঘেরা রামরাই দিঘির জলে পানচিল, পানকৌড়ি, পাতিহাঁসসহ নানা প্রজাতির হাজার-হাজার পাখির আগমনে দিঘির সৌন্দর্য আরও ফুটে উঠেছে। পাখির কিচিরমিচির শব্দ আর ওড়াউড়ির দৃশ্যধারণের চেষ্টায় মেতেছেন দূর-দূরান্ত থেকে আসা দর্শনার্থীরা। কেউ-কেউ আবার নৌকায় চড়ে পাখিদের খুনসুটি ক্যামেরায় ধারণের চেষ্টা চালাচ্ছেন। রামরাই দিঘির জলকেলিতে অতিথি পাখির অবাধ বিচরণ এখন নজর কাড়ছে সবার। দর্শনার্থীরা জানান, অতিথি পাখির আগমনে জায়গাটির সৌন্দর্য আরও ফুটে উঠেছে। অপরূপ সুন্দর লাগছে পাখির অবাধ বিচরণ। মনোমুগ্ধকর পরিবেশ উপভোগ করতে পেরে খুশি সবাই।

রামরাই দিঘি এলাকার বাসিন্দা আব্দুস সালাম জানান, সারাদিন অনেক মানুষ আসে এসব অতিথি পাখি দেখার জন্য। কেউ যেন পাখি শিকার করতে না পারে সে বিষয়ে আমরা এলাকাবাসী সজাগ আছি।

পাখি প্রেমী রেজাউল হাফিজ রাহী জানান, আমাদের এখানে যে অতিথি পাখি আসছে তার নাম ছোট সরালি। পাখিরা আমাদের দেশে অতিথি হয়ে আসে। অতিথি পাখিরা যাতে আমাদের এখানে নির্ভয়ে থাকতে পারে সে জন্য প্রশাসনকে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। অতিথি পাখির আগমনে এ এলাকার যেমন সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায় তেমনি এরা প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষায় সহযোগিতা করে। তাই অতিথি পাখি শিকারকে আমরা সবাই না বলি।

ঠাকুরগাঁও জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম জানান, এই ছোট সরালি জাতের অতিথি পাখি আমাদের দেশে প্রতি শীতেই আসে। এরা এখানে এসে ডিমও দেয়। অতিথি পাখি শিকার করা দ-নীয় অপরাধ। তাই সকলকে অতিথি পাখি শিকার না করার আহ্বান জানান তিনি।
ঠাকুরগাঁও  রানীশংকৈল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএও) খন্দকার মো. নাহিদ হাসান জানান, দিনাজপুরের রাম সাগরের মতো এখানেও একটি রামরাই দীঘি রয়েছে। যেটি আমাদের এই রাণীশংকৈলের শ্রী বৃদ্ধি করে। এই ছোট সরালি জাতের অতিথি পাখি আমাদের এই রামরাই দীঘিতে প্রতি শীতকালেই আসে। অতিথি পাখি শিকার করা দ-নীয় অপরাধ। তাই সকলকে অতিথি পাখি শিকার না করার আহ্বান জানান তিনি।

এসবি/ 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি