ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৮ নভেম্বর ২০২৪

অতুলপ্রসাদ সেন’র প্রয়াণ দিবস

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৮:৫৫, ২৬ আগস্ট ২০২০ | আপডেট: ১৮:৫৬, ২৬ আগস্ট ২০২০

ছোটবেলায় বাংলা পাঠ্য বইয়ে তার কবিতা পড়েননি এমন কেউ নেই। তিনিই প্রথম বাংলায় গজল রচনা করেন। বাংলা সঙ্গীতের প্রধান পাঁচজন স্থপতির একজন বলা হয় তাকে। বাংলা গানে ঠুংরি ধারার প্রবর্তকও তিনি। তিনি অতুল প্রসাদ সেন। আজ (২৬ আগস্ট) তার প্রয়াণ দিবস। ১৯৩৪ সালের এই দিনে মারা যান তিনি।

পঞ্চকবির অন্যতম একজন এই গীত স্রষ্টা। সুরের সঙ্গে সমর্পিত ছিল এই কীর্তিমানের জীবনধারা। সঙ্গীতের মাঝেই খুঁজে নিয়েছিলেন জীবনের স্পন্দন। সেই সুবাদে সঙ্গীতের নানা শাখায় ছিল তার বিচরণ। বাংলা গানের কালজয়ী সৃষ্টিতে রেখেছেন স্বতন্ত্র স্বাক্ষর। একই সঙ্গে তিনি গান লিখেছেন, সুর করেছেন এবং গেয়েছেন। আনন্দ-বেদনাসহ যাপিত জীবনের ধারা ভাষ্য দিয়েছেন গানে গানে। দেশপ্রেম, ভক্তি ও প্রেম ছিল তার রচিত সঙ্গীতের মূল উপজীব্য।

১৮৭১ সালে ২০ অক্টোবার অতুল প্রসাদের জন্ম হয় ঢাকায় তার নানাবাড়িতে। তার আদি নিবাস শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার মগর গ্রামে। খুব অল্প বয়সেই বাবাকে হারিয়ে অতুল প্রসাদ নানা কালীনারায়ণ গুপ্তের কাছে বড় হন। নানার কাছেই সঙ্গীত ও ভক্তিমূলক গানে তার হাতেখড়ি। 

১৮৯০ সালে প্রবেশিকা পাসের পর তিনি কিছুদিন কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে অধ্যয়ন করেন। পরে বিলেত থেকে ব্যারিস্টারি পাস করে কলকাতা ও রংপুরে আইন ব্যবসা শুরু করেন। তিনি বঙ্গ-সাহিত্য সম্মিলন প্রতিষ্ঠার অন্যতম প্রধান উদ্যোক্তা ছিলেন। বাংলাভাষীদের কাছে তিনি একজন সংগীতজ্ঞ ও সুরকার হিসেবেই পরিচিত। তার গানগুলো প্রধানত স্বদেশি সংগীত, ভক্তিগীতি ও প্রেমের গান এ তিন ধারায় বিভক্ত। 

তবে ব্যক্তিজীবনের বেদনা তার গানে কমবেশি প্রভাব ফেলেছে। রবীন্দ্র-প্রভাববলয়ের মধ্যে বিচরণ করেও যারা বাংলা কাব্যগীতি রচনায় নিজেদের বিশেষত্ব প্রকাশ করতে সক্ষম হন, তিনি ছিলেন তাদের অন্যতম। বাংলা সংগীতে তিনিই প্রথম ঠুংরির চাল সংযোজন করেন। 

‘মোদের গরব, মোদের আশা/আ মরি বাংলা ভাষা’ গানটিতে তার মাতৃভাষার প্রতি মমত্ববোধ ফুটে উঠেছে। এ গান বাংলাদেশের ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের সময় বাঙালিদের মধ্যে অফুরন্ত প্রেরণা জুগিয়েছে। 

উনিশ শতকের শেষ থেকে বিশ শতকের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত রবীন্দ্র প্রতিভার প্রভাববলয়ের মধ্যে বিচরণ করেও যারা বাংলা কাব্যগীতি রচনায় নিজেদের বিশেষত্ব প্রকাশ করতে সক্ষম হন অতুল প্রসাদ ছিলেন তাদের অন্যতম। সমকালীন গীতিকারদের তুলনায় তার সঙ্গীত সংখ্যা সীমিত হলেও অতুল প্রসাদের অনেক গানে সাঙ্গীতকে মৌলিকত্ব পরিলক্ষিত হয় আর সে কারণেই তিনি বাংলা সঙ্গীত জগতে এক স্বতন্ত্র আসন লাভ করেছেন। তিনিই প্রথম বাংলায় গজল রচনা করেন। বাংলা সঙ্গীতের প্রধান পাঁচজন স্থপতির একজন বলা হয় তাকে। 

তার সর্বমোট গানের সংখ্যা মাত্র ২০৬টি এবং সে সবের মধ্যে মাত্র ৫০-৬০টি গান গীত হিসেবে প্রাধান্য পায়।

অতুল প্রসাদ প্রবাসী (বর্তমান নিখিল-ভারত) বঙ্গ-সাহিত্য সম্মিলন প্রতিষ্ঠার অন্যতম প্রধান উদ্যোক্তা ছিলেন। তিনি উক্ত সম্মিলনের মুখপত্র উত্তরার একজন সম্পাদক এবং সম্মিলনের কানপুর ও গোরখপুর অধিবেশনের সভাপতি ছিলেন। 

২৬ আগস্ট, ১৯৩৪ সালে তার তিরোধানের পর তাকে গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলাধীন কাওরাইদ ব্রহ্ম মন্দিরের পাশে সমাহিত করা হয়।

এমএস/এসি

 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি