অনলাইনে একাদশে ভর্তিতে নানামুখি সমস্যা
প্রকাশিত : ১৯:৪৩, ২৭ আগস্ট ২০২০
এসএসসি বা সমমানে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি কার্যক্রম চলছে অনলাইনে। তিন ধাপে চলছে এ কার্যক্রম। তবে অনলাইনের এ কার্যক্রমে দেখা দিয়েছে নানামুখি সমস্যা। এগুলোর মধ্যে পছন্দের কলেজ না পাওয়া, জিপিএ-৫ পেয়েও ভর্তির জন্য কোন কলেজ না পাওয়া ছাড়াও রয়েছে বিভিন্ন সমস্যা।
জানা যায়, চলতি বছর ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড এবং কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে মোট পরীক্ষায় অংশ নেয় ২০ লাখ ৪০ হাজার ২৮ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে ১৬ লাখ ৯০ হাজার ৫২৩ জন শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হয়েছেন। কারিগরি শিক্ষা বোর্ড থেকে এসএসসি ও দাখিল ভোকেশনাল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিল ৯৫ হাজার ৮৯৫ জন শিক্ষার্থী। কারিগরি শিক্ষা বোর্ড আলাদাভাবে এইচএসসি ভোকেশনাল, বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ও বিভিন্ন ডিপ্লোমা কোর্সে ভর্তির আবেদন গ্রহণ করছে।
গত ৯ আগস্ট সকাল ৭টা থেকে ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে অনলাইন ভর্তির কার্যক্রম শুরু হয়। যা শেষ হবে ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে। একাদশ শ্রেণিতে (এইচএসসি ও আলিম শিক্ষার্থীদের) ভর্তির ১ম দফায় অনলাইনে আবেদন গ্রহণ ৯ আগস্ট থেকে শুরু হয়ে ২০ আগস্ট শেষ হয়। দ্বিতীয় পর্যায়ে আবেদন গ্রহণ ৩১ আগস্ট থেকে চলবে ২ সেপ্টেম্বর রাত ৮টা পর্যন্ত। পছন্দক্রম অনুসারে ১ম মাইগ্রেশনের ফল প্রকাশ হবে ৪ সেপ্টেম্বর রাত ৮টায়। দ্বিতীয় পর্যায়েরও ফল প্রকাশ হবে একই দিন (৪ সেপ্টেম্বর) রাত ৮টায়।
দ্বিতীয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের সিলেকশন নিশ্চায়ন ৫ সেপ্টেম্বর থেকে ৬ সেপ্টেম্বর বিকেল ৫টা পর্যন্ত। শিক্ষার্থী সিলেকশন নিশ্চায়ন না করলে ২য় পর্যায়ের সিলেকশন এবং আবেদন বাতিল হবে। তৃতীয় পর্যায়ের আবেদন গ্রহণ চলবে ৭ ও ৮ সেপ্টেম্বর। পছন্দক্রম অনুযায়ী ২য় মাইগ্রেশনের ফল এবং ৩য় পর্যায়ের আবেদনের ফল প্রকাশ হবে ১০ সেপ্টেম্বর রাত ৮টায়। তৃতীয় পর্যায়ে শিক্ষার্থীর সিলেকশন নিশ্চায়ন করতে হবে ১১ সেপ্টেম্বর থেকে ১২ সেপ্টেম্বর রাত ৮টা পর্যন্ত। সিলেকশন নিশ্চায়ন না করলে আবেদন বাতিল বলে গণ্য হবে আর কলেজভিত্তিক চূড়ান্ত ফল প্রকাশ হবে ১৩ সেপ্টেম্বর সকাল ৮টায়। ভর্তি চলবে ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।
ভর্তির আবেদনের প্রথম ধাপে সারাদেশের ১২ লাখ ৭৭ হাজার ৭২১ জন শিক্ষার্থী মনোনীত হয়েছেন। যদিও এ ধাপে আবেদন করেন ১৩ লাখ ৪২ হাজারের বেশি ভর্তিচ্ছু। অর্থাৎ প্রথম ধাপেই ভর্তির কার্যক্রম থেকে ছিটকে পড়লেন ৬৪ হাজার ৯৭২ জন। গত ২৫ আগস্ট রাতে ১ম ধাপের ফল প্রকাশ করা হয়েছে। মোবাইলে ক্ষুদে বার্তার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদেরকে তাদের ফলাফল জানানো হয়।
একইসঙ্গে পাঠানো একটি সিকিউরিটি কোডের মাধ্যম ভর্তি নিশ্চায়ন করা হবে। শিক্ষার্থীদের সিলেকশন নিশ্চায়ন গত ২৬ আগস্ট থেকে শুরু হয়ে ৩০ আগস্ট রাত ৮টা পরর্যন্ত কার্যক্রম চলবে। এ সময়ের মধ্যে সিলেকশন নিশ্চায়ন না করলে প্রথম পর্যায়ের সিলেকশন এবং আবেদন বাতিল বলে গণ্য হবে।
এদিকে জিপিএ-৫ পেয়েও একাদশে ভর্তির জন্য কলেজ পায়নি চট্টগ্রামের ৪৪২ জন শিক্ষার্থী। ভর্তির আবেদন করার সময় সর্বোচ্চ ১০টি কলেজ পছন্দের তালিকায় দেওয়ার সুযোগ থাকলেও এ সব শিক্ষার্থী ৫ থেকে ৬টি কলেজ দিয়েই তাদের আবেদন শেষ করেছেন এমনটি বলছেন চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তারা। ফলে ২৫ আগস্ট রাতে দেওয়া একাদশে ভর্তির প্রথম দফায় মনোনীতদের তালিকায় ঠাঁই পাননি তারা। তবে বোর্ডের পক্ষ থেকে এসব শিক্ষার্থীদের হতাশ না হতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
যারা প্রথম ধাপে এসব সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন তারা দ্বিতীয় ধাপে ফের আবেদন করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক অধ্যাপক জাহেদুল হক। এতে করে পুনঃরায় তাদের আবেদন ফি দিতে হবে না। তবে নতুন কলেজ যুক্তকরণ বা যে কলেজ বাদ দেওয়ার মাধ্যমে পূর্বের আবেদন বাতিল হয়েছে তা সংশোধন করতে হবে। তবে সেক্ষেত্রে অবশ্যই পছন্দের তালিকায় দশটি কলেজের নাম দিতে হবে। কলেজগুলোর মোট আসন সংখ্যার তুলনায় আবেদনকারীর সংখ্যা কম বলেও জানান জাহেদুল হক।
জানা যায়, গত মঙ্গলবার রাজধানীর নটর ডেম কলেজের একাদশ শ্রেণিতে ভার্চ্যুয়াল পদ্ধতিতে আবেদনকৃত শিক্ষার্থীদের ডেমো পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। অনলাইনে ডেমো পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিল। এতে সকল বিভাগের ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের অংশ নেয়ার সুযোগ ছিল। কর্তৃপক্ষ পরীক্ষা নিতে ব্যর্থ হয়েছে বলে অভিযোগ করেন অভিভাবকরা।
উল্লেখ্য, গত মার্চ মাসের শুরুতে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শেষ হলেও দেশে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় ফল প্রকাশ করতে দেরি হয়। গত ১০ মে থেকে একাদশে ভর্তির প্রক্রিয়া শুরুর ঘোষণা দিয়ে ভর্তি নীতিমালা জারি করা হলেও নির্ধারিত সময়ে ফল প্রকাশ করা সম্ভব হয়নি। গত ৩১ মে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়।
এমএস/এনএস/
আরও পড়ুন