ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪

অভিনয় দিয়ে দর্শকদের মন জয় করবো: জয়া চৌধুরী

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৭:৩২, ১৮ জানুয়ারি ২০১৮ | আপডেট: ১৭:৩৩, ১৮ জানুয়ারি ২০১৮

একাধিক ছবিতে কাজ করার মধ্য দিয়ে বর্তমানে ব্যস্ত সময় পার করছেন চিত্রনায়িকা জয়া চৌধুরী। ‘চার অক্ষরের ভালোবাসা’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে তার পথচলা শুরু। চলচ্চিত্র জগতে গুণী পরিচালক চাষী নজরুল ইসলামের হাত ধরেই পদার্পন জয়ার। তার পরামর্শ ও দিকনির্দেশনা পাথেয় হয়ে আছে জয়া চৌধুরীর। ইতিমধ্যে অনেকগুলো চলচ্চিত্রে কাজও করেছেন। বর্তমানে কাজ করছেন ‘বাঘিনী’ চলচ্চিত্রে। একুশে টিভি অনলাইনের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় নিজের ভালো লাগা, ভবিষ্যত পরিকল্পনাসহ নানা দিক নিয়ে কথা বলেন জয়া চৌধুরী। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আউয়াল চৌধুরী।   

ইটিভি অনলাইন: কিভাবে চলচ্চিত্রের সঙ্গে যুক্ত হলেন?

জয়া চৌধুরী: আমার গ্রামের বাড়ি রাজবাড়ী জেলার পাংশা থানায়। ২০১০ সালের দিকে আমি ঢাকায় বেড়াতে আসি। তখন আমার এক কাজিনের সঙ্গে এফডিসি ঘুরতে যাই। সেখানে দেখা হয় বিখ্যাত পরিচালক চাষী নজরুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি আমাকে দেখে বলেন, এই মেয়ে তোমার নাম কি? এখানে কেন এসেছ? আমি তখন তাকে আমার পরিচয় দেই। তিনি জানতে চাইলেন, কেমন লাগলো এফডিসি? আমি বললাম, অনেক সুন্দর। তখন কয়েকটি ফ্লোরে শ্যুটিং চলছিল। নায়ক-নায়িকাদের সঙ্গে কথা বলেছি। খুব ভালো লেগেছে।

ইটিভি অনলাইন: চাষী নজরুল ইসলামের কাছ থেকে কোনো সহযোগিতা পেয়েছিলেন?

জয়া চৌধুরী: অনেক সহযোগিতা পেয়েছি। তিনি আমার কাছে জানতে চাইলেন সিনেমায় কাজ করবো কি না। আমি বললাম করবো। নায়িকা হতে চাই। তখন তিনি হেসে বললেন শুরুতে নায়িকা হিসেবে না হলেও কাজ শুরু কর। তখন তিনি তার এসিসট্যান্ট তারেক ভাইয়ের সঙ্গে আমার পরিচয় করিয়ে দিলেন। তাকে বললেন ওকে কাজে লাগানো যায় কি না দেখ। ওই সময় চাষী ভাই’র দেবদাস ছবি নিয়ে কাজ করছিলেন। তিনি আমাকে সে ছবিতে একটা চরিত্রে কাজ করতে বললেন। কিন্তু আমি তখন কাজটি করতে পারি নাই। রাজবাড়ী চলে যাই।  

ইটিভি অনলাইন: তার সঙ্গে কি আর যোগাযোগ হয়েছিল? কিভাবে চলচ্চিত্রে কাজ শুরু করলেন?    

জয়া চৌধুরী: হ্যাঁ তার সঙ্গে সব সময় আমার যোগাযোগ হতো। তিনি আমাকে পথ দেখান। আমাকে পড়ার জন্য অনেকগুলো বই দিয়েছিলেন। আর বলেছিলেন, সুচিত্রা সেনের মতো বড় বড় অভিনেত্রীদের কাজ দেখবে। তাদের মতো চোখের চাহনি দেবে। একটা কথা- সততা তোমাকে অনেক দূর নিয়ে যাবে। এটাকে ভুলো না। বেছে বেছে কাজ করবে। তার এসব কথাগুলো এখনো আমাকে অনুপ্রাণিত করে। আমার কাজে সাহস জোগায়। তারপর কাজ শুরু করার চেষ্টা করি। অনেকের সঙ্গে কথা বলি। পাশাপাশি অভিনয় শেখার জন্য নিজেকে তৈরি করি।     

ইটিভি অনলাইন: চলচ্চিত্রের জন্য নিজেকে কিভাবে তৈরি করছেন?

জয়া চৌধুরী: আমাদের এই প্রজন্মের মধ্যে চলচ্চিত্রে কাজ করার ক্ষেত্রে অনেক কম্পিটিশন তৈরি হয়েছে। আমি নিজেকে সেভাবেই তৈরি করার চেষ্টা করছি। সেজন্য সিঙ্গাপুরের একটি একাডেমিতে ভর্তি হয়েছি। সেখানে লাইট, ক্যামেরা, ডান্স, অভিনয়সহ সব বিষয়গুলো নিয়েই তারা প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। আমি চেষ্টা করছি সেখান থেকে ভালো কিছু অর্জন করার।    

ইটিভি অনলাইন: এ পর্যন্ত কোন কোন ছবিতে কাজ করেছেন?

জয়া চৌধুরী: ইতিমধ্যে আমি অনেকগুলো ছবিতেই কাজ করেছি। চাষী ভাই আমাকে সোহানুর রহমান সোহান ভাইসহ অনেকের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন। তার উপদেশগুলো মেনে চলার চেষ্টা করছি। আমার প্রথম চলচ্চিত্র ছিল জাকির খানের ‘চার অক্ষরের ভালোবাসা’। এটি ২০১৪ সালে মুক্তি পায়। এরপর কাজ করি ‘অনন্তকালের …ফর এভার’ ছবিতে। বর্তমানে ‘ফুলবানু’ ছবির কাজ শেষ হয়েছে। সামনে ছবিটি মুক্তি পাবে। এখন চলছে ‘বাঘিনী’ ছবির কাজ। সামনে আরো কয়েকটি ছবির কাজ শুরু হবে। সবমিলে চেষ্টা করছি ভালো কিছু করার।   

ইটিভি অনলাইন: আপনি সম্প্রতি ‘ফুলবানু’ ছবির কাজ শেষ করেছেন। এ ছবির কোনো অভিজ্ঞতা কি শেয়ার করা যায়?

জয়া চৌধুরী: ‘ফুলবানু’ ছবির কাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। এ ছবিতে আমার বিপরীতে কাজ করেছেন চিত্রনায়ক শাহ রিয়াজ। এ ছবির একটি গানের শ্যুটিং করা হয় এফডিসিতে। ‘অনেক যতন করে রেখেছি আমি তোকে, হাজারো তারার মাঝে’ এই স্যাড সঙটি করার আগে একটি ঘটনা আছে। সেটা হলো ছবিটির পরিচালক হাসিবুল ইসলাম মিজান স্যার এর স্ত্রী মারা গিয়েছেন। তিনি আমাদের তার স্ত্রীর কথা বলছিলেন। বলতে বলতে ঝরঝর করে কাঁদতে থাকেন। তখন তার গল্প শুনতে শুনতে গানটি লিখা হয়। এই গানটি লিখার সময় আমিও কাঁদছিলাম। তখন এসআই টুটুল ভাই বললেন এই গানটি অসাধারণ হয়েছে। গানটির সুর শুনার পর আমি হাউমাউ করে কেঁদে ফেলি। সেখানে সবাই কাঁদছিল। এই স্মৃতিটি আমাকে নাড়া দেয়। গানটি অনেক ভালো হয়েছে। দর্শকদেরও ভালো লাগবে বলে আশা করি।

ইটিভি অনলাইন: কাউকে অনুসরণ করেন?

জয়া চৌধুরী:  অ্যাঞ্জেলিনা জোলি আমার প্রিয় অভিনেত্রী। আর রোমান্টিক ছবির ক্ষেত্রে সুচিত্রা সেনকে ফলো করি। সুফিয়া লরেনের ‘সান ফ্লাওয়ার’ ছবিটি আমার ভীষণ প্রিয়। আমি প্রতি এক দুই দিন পর পরই ছবিটি দেখি। এই সিনেমাটি আমার কাছে অসম্ভব রকমের ভালো লাগে। আর বাংলাদেশের রাজ্জাক স্যারকে খুব ভালো লাগে। তার অভিনয় আমাকে মুগ্ধ করে। নায়ক ফারুক স্যারকেও ভালো লাগে। শাবনূর আপুর ছবিও দেখি। কবরি ম্যাডামও প্রিয়। আর জাফর ইকবালের স্টাইল আমার কাছে অন্যরকম লাগে।

সর্বশেষ বলবো, আমি সব ধরণের অভিনয়ই করে যেতে চাই। অভিনয় ছাড়া অন্যকিছু চিন্তা করতে পারিনা। অভিনয়ের মাধ্যমেই দর্শকদের মন জয় করতে চাই।

ইটিভি অনলাইন : আমাকে সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

জয়া চৌধুরী : ইটিভি পরিবারকেও অসংখ্য ধন্যবাদ।   

 

এসি/ এআর


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি