আসিফা হত্যায় উত্তাল ভারত
অভিযুক্তদের রক্ষায় মাঠে বিজেপির মন্ত্রী
প্রকাশিত : ১১:২৯, ১৩ এপ্রিল ২০১৮ | আপডেট: ১৬:২৫, ১৩ এপ্রিল ২০১৮
কাশ্মীরে আসিফা বানু নামের ৮ বছর বয়সী এক শিশুকে গণধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় ফুঁসে ওঠেছে গোটা ভারত। গত ১৭ জানুয়ারি ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের কাথোয়া শহর থেকে আসিফার মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
এই ঘটনায় সারা দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। এরপরই অভিযানে নামে রাষ্ট্রের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। আটক করা হয় ৮ অভিযুক্তকে। তাদের মধ্যে চার পুলিশ সদস্যসহ এক সরকারি কর্মকর্তাও রয়েছে।
এদিকে অভিযুক্তদের আটকের ঘটনায় কট্টোর হিন্দুত্ববাদীরা রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেছে। তাদের বাঁধায় আদালতে অভিযোগপত্র দিতে পারেনি পুলিশ। এদিকে অভিযুক্তদের বাঁচাতে মাঠে নেমেছে ক্ষমতাসীন দল বিজেপির নেতারাও। গতকাল আদালতে চার্জশিট দাখিলের তারিখ থাকলেও ক্ষমতাসীন দলের দুই মন্ত্রীসহ হিন্দুত্ববাদী নেতাদের বাঁধার মুখে চার্জশীট দিতে পারেনি পুলিশ।
বিজেপি নেতাদের এমন আচরণে ক্ষুব্ধ দেশটির মানবাধিকার কর্মীসহ নারী আন্দোলনের নেতৃরা। দিল্লীর প্রধান নারী কমিশনার (নারী) মালিওয়ালা বলেন, আজ শুক্রবার থেকে নারী ও শিশুদের উপর যৌন হয়রানির ঘটনায় তিনি অনিদির্ষকালের জন্য অনশনে বসবেন। দিল্লীর রাস্তায় আজ শতাধিক নারী কর্মী জমায়েত হবে বলে জানান তিনি।
জানা যায়, এক সপ্তাহ ধরে আটকে রেখে ধর্ষণ করার পর পাথর ছুড়ে হত্যা করা হয় বানুকে। গত জানুয়ারিতে জম্মু ও কাশ্মীরের কাঠুয়া জেলার রাসানা গ্রামে আসিফাকে ধর্ষণের পর হত্যা করেন স্থানীয় এক মন্দিরের তত্ত্বাবধায়ক ও দুই স্পেশাল পুলিশ কর্মকর্তা।
তারা শিশু আসিফাকে এক সপ্তাহ ধরে আটকে রেখে ধর্ষণ করেন। পরে তাকে পাথর ছুড়ে হত্যার আগে আবারও ধর্ষণ করা হয়।অভিযুক্তরা হলেন স্থানীয় মন্দিরের তত্ত্বাবধায়ক সাঞ্জি রাম, স্পেশাল পুলিশ কর্মকর্তা দীপক খাজুরিয়া ও সুরেন্দ্র বর্মা, সাঞ্জি রামের বন্ধু পরভেশ কুমার ওরফে মন্নু, রামের নাবালক ভাতিজা ও ছেলে বিশাল জঙ্গোত্র ওরফে শম্মা।
পুলিশের দেওয়া ১৫ পৃষ্ঠার এক অভিযোগপত্রে আসিফাকে হত্যার বিষয়টি উন্মোচিত হয়েছে। অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, গত জানুয়ারিতে কাঠুয়া জেলার রাসানা এলাকায় মুসলিম বাখেরওয়াল সম্প্রদায়ের শিশু আসিফাকে অপহরণ করে দুই পুলিশ ও এক মন্দিরের তত্ত্বাবধায়ক। পরে তাকে এক সপ্তাহ আটকে রেখে ধর্ষণের পর পাথর ছুড়ে নির্মমভাবে হত্যা করে তারা।
আসিফাকে প্রথমবার ধর্ষণের পর তাকে মাদক দিয়ে অজ্ঞান করে রাখা হয়। এর পর পাথর ছুড়ে হত্যার আগে আবারও ধর্ষণ করা হয়।
অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়েছে, রাসানা অঞ্চল থেকে সংখ্যালঘু যাযাবর সম্প্রদায়ের মানুষদের তাড়িয়ে দেয়ার জন্যই পরিকল্পিতভাবে শিশুটি অপহরণের পর ধর্ষণের করে হত্যা করা হয়।
সূত্র: বিবিসি
এমজে/
আরও পড়ুন