অভিশপ্ত হলুদ
প্রকাশিত : ১৯:৩৬, ৮ ডিসেম্বর ২০২২
অভিশপ্ত এক রং হলুদ। বিয়েতে গায়ে হলুদের প্রথাটি কে চালু করলো জানিনা। তবে ছোট বেলা থেকেই শুনে আসছি জন্ডিসের রং হলুদ। মানুষের জন্ডিস হলে গায়ের রং হলুদ হয়ে যায়।
ঢাকা শহরের বিভিন্ন গণবসতিপূর্ণ এলাকায় ড্রেনের পাইপ ফেটে মাঝে মধ্যে হলুদের যে ভয়ংকর চাকা বের হয়, সামনে পরলে বরাবরই তা দেখে শিহরে উঠে গা। ফুটবলেও হলুদ কার্ড সতর্ক সংকেত। অর্থাৎ এই ভুল দ্বিতীয়বার করলে বিপদ।
হলুদকে অপছন্দের আরও কারণ হলো রাস্তায় হলুদ বাতি দেখলেই থেমে যেতে হয়। তারমানে হলুদ জীবনকে থামিয়ে দেয়। চিকিৎসা বিজ্ঞানের মতে, হলুদ স্বাস্থ্যের জন্যও ক্ষতিকর। এজন্য প্রেসারের রোগীদের ডিমের হলুদ অংশ খেতে ডাক্তারের নিষেধ রয়েছে।
জীবনে যে কয়টি কীটপতঙ্গ ভয় করি তার মধ্যে বোলতা অন্যতম। কোনো কোনো এলাকায় এটাকে আবার বল্লা বলে। একবার তার বিষাক্ত হুল ফুটালে, বোঝা যায় কত ধানে কত চাল। সেই বোলতার রং কিন্তু হলুদ।
সবচেয়ে বাস্তব অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছি সাংবাদিকতার অঙ্গনে। এখানে মিথ্যা, বিভ্রান্তির ও উদ্দেশ্যমূলক সংবাদ পরিবেশনকে হলুদ সাংবাদিকতা বলা হয়। ফলে হলুদ সাংবাদিক একটা গালি। সাংবাদিকদের জন্য তা অত্যান্ত অপমানজনক। এ কারণে সচেতনভাবেই সব সময় হলুদের বিরোধীতা করে আসছি।
তবে দয়াকরে কেউ এর সঙ্গে বিশ্বকাপ এবং ব্রাজিলের ফুটবল দলের জার্সিকে মেলাবেন না। কারণ বন্ধু বান্ধবের অনেকেই এখানে হলুদের মাঝে ছন্দ খুঁজে পান। এজন্য কেউ কেউ হয়তো, জীবন দিয়ে দিচ্ছেন। সে কারণে হলুদকে যতই অপছন্দ করি না কেন, ওনাদের এই আত্মত্যাগের প্রতিও নিঃশর্ত শ্রদ্ধা আছে।
লেখক: সিনিয়র রিপোর্টার দৈনিক যুগান্তর
এসি
** লেখার মতামত লেখকের। একুশে টেলিভিশনের সম্পাদকীয় নীতিমালার সঙ্গে লেখকের মতামতের মিল নাও থাকতে পারে।