ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪

অর্শ্ব বা পাইলস রোগের লক্ষণ ও চিকিৎসা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:৪৬, ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ | আপডেট: ১২:৪৮, ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮

মলাদ্বারের নিম্নাংশ বা মলদ্বারের শিরাগুলো ফুলে গেলে সেগুলোকে সাধারণত অর্শ্ব বা পাইলস বলে। এই অর্শ্ব মলদ্বারের অভ্যন্তরেও হতে পারে আবার বাইরেও হতে পারে।

আক্রান্ত ব্যক্তির পায়খানের সঙ্গে রক্ত বের হয়। কখনো কখনো একদিন রক্ত দেখা দিলে আবার ৬ মাস পর রক্তের দেখা মেলে। দীর্ঘমেয়াদী কোষ্ঠকাঠিন্য বা ডায়রিয়া  শাকসব্জী ও অন্যান্য আঁশযুক্ত খাবার এবং পানি কম খাওয়াসহ বিভিন্ন কারণে অর্শ্ব বা পাইলস দেখা দিতে পারে।

সচেতনতা ও সঠিক সময়ে চিকিৎসা নিলে এ রোগ থেকে মুক্তি দিতে পারে জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের কলোরেকটাল সার্জারী বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. একেএম ফজলুল হক।

সম্প্রতি একুশে টিভি অনলাইনকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি একথা বলেন। সাক্ষাতকার নিয়েছেন একুশে টিভি অনলাইন প্রতিবেদক তবিবুর রহমান। একুশে টিভি অনলাইন পাঠকদের জন্য সাক্ষাতকারটি হুবহুব তুলে ধরা হলো।

একুশে টেলিভিশন অনলাইন: পাইলসের উপসর্গগুলো কি?

অধ্যাপক ডাঃ একেএম ফজলুল হক: পাইলস আক্রান্ত হলে পায়খানার সঙ্গে তাজা রক্ত যায়। মুরগী জবাই করলে যেমন তাঁজা রক্ত দেখা যায় তেমন রক্ত পায়খানে সঙ্গে ঝড়তে দেখা যায়। ফোঁটা ফোঁটা রক্ত বের হতে দেখা যায়।

এ রোগে আক্রান্ত হলে বিভিন্ন রকম উপসর্গ দেখা দিতে পারে। একদিন রক্ত বের হলে ৬ মাস পর আবার বের হতে থাকে। দিনে দিনে এটা ৬ মাস থেকে তিন মাস, ১ মাস, ১৫দিন ,৭দিন এভানে আক্রান্ত হওয়ার সময় যত বাড়ে রক্ত বেশি ঝড়তে থাকে।

অনেক সময় মলদ্বারের ভিতর থেকে মাংসপিন্ডি বাহিরে বের হয়ে আসে। এটি আবার অনেকেই আঙ্গুল দিয়ে ভিতরে ঢুকিয়ে দেয়। এমন অবস্থা হলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ দিতে হবে।

একুশে টেলিভিশন অনলাইন: অনেক সময় রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে দেওয়ালে পোষ্টারে দেখা যায়, অর্শ্ব বা পাইলসের সু চিকিৎসার দেওয়া হয়। এছাড়া কবিরাজী চিকিৎসার মাধ্যমে পাইলসের ১০০ ভাগ ভাল হয় বলেও জনশ্রুতি আছে, এ বিষয়ে আপনার মত কি?

অধ্যাপক ডাঃ একেএম ফজলুল হক: আমাদের দেশে শিক্ষার হার তুলনামূলক কম। সচেতন মানুষের সংখ্যাও কম। এই মানুষ গুলো এমন পোষ্টার দেখে করিবাজী চিকিৎসা নিয়ে থাকে।

করিরাজ পাইলসের চিকিৎসার নামে মলদ্বারে এসিড দেয়। যা স্বাস্থ্যে জন্য অনেক ক্ষতি। এমন এসিড দেওয়া অনেক রোগী আমার চিকিৎসা করতে হয়েছে। এটাকে অপচিকিৎসা বলে থাকি।

এছাড়া চিকিৎসার নামে অনেকে মলদ্বারে পাউডার দেয়। ফলে মলদ্বারের আশপাশে পচন ধরে। এটাকে অপচিকিৎসা বলে। এমন চিকিৎসা জীবনের জন্য হুমকি। সবার উদ্দেশ্যে বলছি পাইলস রোগীদের জন্য আমাদের দেশে অনেক ভালো চিকিৎসা আছে।

একুশে টেলিভিশন অনলাইন: পাইলসের প্রাথমিক চিকিৎসা কি?

অধ্যাপক ডাঃ একেএম ফজলুল হক: রোগীর অবস্থা কেমন আছে সেটা আগে আমরা পরীক্ষা করে নিই। প্রথমে আমাদের কাছে চিকিৎসা নিতে আসলে  কোলনস্কপি করে থাকি। এরপর সেই অনুযায়ী চিকিৎসা দিয়ে থাকি।

রোগটি প্রাথমিক পর্যায়ে থাকলে আমরা নিয়মিত বেশি করে শাক-সবজি খেতে বলি। সেটি অনুস্মরণ করলে ঠিক হয়ে যায়। এছাড়া বেশি করে পানি খাওয়া ও ফলমূল খেলেও প্রাথমিক পাইলস  ভালো হয়ে যায়।

একুশে টিভি অনলাইন: পাইলস রোগে আক্রান্ত হলে করণীয় কি ?

অধ্যাপক ডাঃ একেএম ফজলুল হক: কোষ্ঠকাঠিন্য যেন না হয় সে বিষয়ে সতর্ক থাকা এবং নিয়মিত মলত্যাগ করা। পর্যাপ্ত পরিমাণে শাকসব্জী ও অন্যান্য আঁশযুক্ত খাবার খাওয়া এবং পানি (প্রতিদিন ৮-১০ গ্লাস) পান করা।

সহনীয় মাত্রার অধিক পরিশ্রম না করা। রোজ ৬-৮ ঘন্টা ঘুমানো। টয়লেটে অধিক সময় ব্যয় না করা ইত্যাদি।

একুশে টিভি অনলাইন: পাইলস কখন অপারেশন করাতে হয় ?

অধ্যাপক ডাঃ একেএম ফজলুল হক: বেশির ভাগ দেখা যায় ১০ থেকে ১২ বছর পাইলস আক্রান্ত রোগী আমাদের কাছে চিকিৎসা নিতে আসে। তখন অধিকাংশ রোগীকে অপারেশন করতে হয়। অপারেশনের অধিকাংশ রোগী ভালো হয়ে যায়। সঠিক সময় চিকিৎসা নিলে অপারেশন ছাড়াই পাইলস ভালো হয়।

একুশে টিভি অনলাইন: মূল্যবান সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

অধ্যাপক ডাঃ একেএম ফজলুল হক: একুশে টিভি পরিবারকেও ধন্যবাদ।

/টিআর / এআর

 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি