ঐকমত্য কমিশনে মতামত
অস্পষ্টতা দূর করতেই সময় চেয়েছে বিএনপি
প্রকাশিত : ১৬:২১, ১৯ মার্চ ২০২৫

সংস্কারের বিষয়ে মতামত জানতে চেয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন যে চিঠি দিয়েছে, তার উত্তর দিতে সময় চেয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল- বিএনপি। শুধু বিএনপি নয়, আরও ১৫টি রাজনৈতিক দল পূর্ণাঙ্গ মতামত দেওয়ার জন্য অতিরিক্ত কয়েক দিন সময় চেয়েছে। তবে এরই মধ্যে মতামত জমা দিয়েছে ১৫টি দল।
বিএনপির নেতারা বলছেন, যে ফরম্যাটে মতামত চাওয়া হয়েছে তা যথাযথ নয়। শুধু টিক মার্ক দিয়ে মতামত দিলে অস্পষ্টতা থাকবে। তাতে লাভের চেয়ে ক্ষতিই বেশি হবে। তাই বিস্তারিতভাবে মতামত দেওয়ার জন্য সময় চাওয়া হয়েছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, মতামতের জন্য যে ছক করা কাগজ (স্প্রেডশিট) দেওয়া হয়েছে, তাতে মতামত দিলে স্পষ্ট হওয়া যাবে না। বরং বিভ্রান্তি ছড়াবে। সে কারণে আমরা আপত্তি জানিয়েছি। বলেছি, বিস্তারিত আকারে আমরা মতামত জানাবো। তার জন্য দু-একদিন সময় চেয়েছি। আশা করি দ্রুততম সময়ের মধ্যে মতামত জানাবো।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামানবলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু করার জন্য যেটা না করলেই নয়, সেগুলো সম্পন্ন করে নির্বাচন দিলেই সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সাত মাসেও সংস্কার এবং নির্বাচনের বিষয়ে দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি এখনো পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে না।
ঐকমত্য কমিশন সূত্রে জানা গেছে, যে দলগুলো মতামত জানিয়েছে সেগুলোর মধ্যে আছে- লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি), বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, জমিয়তে ওলামা ইসলাম বাংলাদেশ, জাকের পার্টি, ভাসানী অনুসারী পরিষদ, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট (এনডিএম) ও আমজনতার দল।
মতামত জানানো দলগুলোকে নিয়ে আগামীকাল বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) থেকে আলোচনায় বসবে ঐকমত্য কমিশন। জাতীয় সংসদ ভবনে এ আলোচনা হবে। কমিশন থেকে জানানো হয়েছে, প্রথম পর্যায়ে বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় এলডিপির সঙ্গে আলোচনায় বসার সময়সূচি নির্ধারণ করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে অন্য দলের সঙ্গেও আলোচনার সময়সূচি ঘোষণা করা হবে। আর পরে যারা মতামত দেবেন, ক্রমান্বয়ে তাদেরও আলোচনার জন্য কমিশন আমন্ত্রণ জানাবে।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ গত সোমবার জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, প্রতিটি সুপারিশের ক্ষেত্রে দুইটি বিষয়ে মতামত চাওয়া হয়েছে।
প্রথমটি হলো- সংশ্লিষ্ট সুপারিশের বিষয়ে একমত কি না। এতে তিনটি বিকল্প রাখা হয়েছে। সেগুলো হলো ‘একমত’, ‘একমত নই’ ও ‘আংশিকভাবে একমত’। এ তিনটি বিকল্পের যে কোনো একটিতে টিকচিহ্ন দিয়ে মতামত জানাতে অনুরোধ করা হয়েছে।
দ্বিতীয়টি হলো- প্রতিটি সুপারিশের বিষয়ে সংস্কারের সময়কাল ও বাস্তবায়নের উপায়। এক্ষেত্রে ছয়টি বিকল্প আছে। সেগুলো হলো- ‘নির্বাচনের আগে অধ্যাদেশের মাধ্যমে’, ‘নির্বাচনের আগে গণভোটের মাধ্যমে’, ‘নির্বাচনের সময় গণভোটের মাধ্যমে’, ‘গণপরিষদের মাধ্যমে’, ‘নির্বাচনের পরে সাংবিধানিক সংস্কারের মাধ্যমে’ ও ‘গণপরিষদ ও আইনসভা হিসেবে নির্বাচিত সংসদের মাধ্যমে’। এসব ঘরের যে কোনো একটিতে টিকচিহ্ন দিয়ে মতামত দিতে বলা হয়েছে। এর বাইরে প্রতিটি সুপারিশের পাশে দলগুলোর ‘মন্তব্য’ দেওয়ার একটি জায়গা রাখা হয়েছে।
উল্লেখ্য, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠন করা হয় গত ১২ ফেব্রুয়ারি। পাঁচটি সংস্কার কমিশন বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ যে ১৬৬টি সুপারিশ জমা দিয়েছে, সে বিষয়ে মতামত জানতে বিএনপিসহ মোট ৩৭টি রাজনৈতিক দলের কাছে গত ৬ মার্চ চিঠি দেয় ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশন’।
এসএস//
আরও পড়ুন