আইসিসির রুলিং প্রত্যাখ্যান মিয়ানমারের
প্রকাশিত : ১১:৪৩, ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮
রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তন ইস্যুতে মিয়ানমারকে বিচারের মুখোমুখি করার এখতিয়ার আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত আইসিসি’র আছে এমন এক রুলিং প্রত্যাখ্যান করে মিয়ানমার। আইসিসির সদস্য না হওয়ায় দেশটির ওপর সংস্থাটির কোন ধরণের বিচারিক এখতিয়ার নেই বলে ‘কঠোরভাবে’ জানিয়ে দেয় মিয়ানমার সরকার।
গত বৃহস্পতিবার নজিরবিহীন এক রুলিং-এ আইসিসি জানায়, সদস্য রাষ্ট্র না হলেও মানবতা বিরোধী অপরাধের জন্য মিয়ানমারের বিচার করতে সক্ষম সংস্থাটি।
এরই প্রেক্ষিতে মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টের দপ্তর থেকে আইসিসির এই রুলিং প্রত্যাখ্যান করে বিবৃতি দেওয়া হয়। প্রেসিডেন্টের দপ্তর থেকে আইসিসিকে ‘ত্রুটিপূর্ণ কার্যপ্রণালীর ফলাফল এবং সন্দেহজনক আইনী যোগ্যতাসম্পন্ন’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। একই সাথে এই সংস্থার প্রতি সম্মান প্রদর্শনে মিয়ানমার কোনভাবে দায়বদ্ধ নয় বলেও সাফ জানিয়ে দেয় দেশটির সরকার।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “ব্যক্তিগত বর্ণনার ওপর ভিত্তি করে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে যার কোন আইনী ভিত্তি নেই। এভাবে আদালতের ওপর আবেগীয় চাপ প্রয়োগের চেষ্টা চলছে”।
গত বছরের আগস্ট থেকে শুরু হওয়া সহিংসতায় মিয়ানমার থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় সাত লক্ষ রোহিঙ্গা পালিয়ে এসে বাংলাদেশে শরণার্থী আশ্রয় নেয়। বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গারা তাদের প্রতি মিয়ানমার পুলিশ ও সেনাবাহিনীর অত্যাচার নির্যাতনের বর্ণনা দেন।
গত মাসে জাতিসংঘের এক স্বতন্ত্র তদন্ত দল রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমারের সরকারি বাহিনীগুলোর নির্যাতনের প্রমাণ পায়। হত্যা, গণধর্ষণসহ গুরুতর যুদ্ধাপরাধ মিয়ানমার বাহিনীর দ্বারা সংঘটিত হয় বলে ঐ তদন্ত দলে প্রতিবেদনে জানায়।
এছাড়াও একই প্রতিবেদনে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী প্রধান মিন অং লেইনসহ আরও পাঁচ জেনারেলকে বিচারের মুখোমুখি করার সুপারিশ করা হয়।
এই প্রতিবেদনের সূত্র ধরে গত বৃহস্পতিবার স্বপ্রণোদিত হয়ে এক রুল জারি করে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত আইসিসি। তিন বিচারকের সমন্বয়ে গঠিক এক বেঞ্চ লিখিতভাবে জানায়, “রোহিঙ্গা মানুষদের ওপর যে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে তা মানবতাবিরোধী অপরাধের শামিল আর তা বিচার করার এখতিয়ার এই আদালতের আছে”।
রলিং-এর কারণ হিসেবে বলা হয়, “এর কারণে এই যে, এই অপরাধে এমন এক উপাদান আছে (সীমান্ত পাড়ি দেওয়া) যা এই আদালতের এক সদস্য রাষ্ট্রের (বাংলাদেশ) আইন অনুযায়ী অপরাধ”।
মিয়ানমার আইসিসির সদস্য না হলেও বাংলাদেশ যেহেতু সদস্য এবং সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে যেহেতু অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটেছে সেহেতু আইসিসি মিয়ানমারের বিচার করতে সক্ষম বলে জানিয়ে দেয় হেগ ভিত্তিক সংস্থাটি।
রুলিং জারি হওয়ার পর থেকে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ বেশ কিছু মানবাধিকার সংস্থার সাধুবাদ ও শুভেচ্ছা পায় আইসিসি।
সূত্রঃ আল জাজিরা
//এস এইচ এস//
আরও পড়ুন