আদিবাসী সুরক্ষা আইনসহ পাঁচ দফা দাবিতে সেমিনার অনুষ্ঠিত
প্রকাশিত : ১৭:২০, ৮ আগস্ট ২০১৮
আদিবাসী অধিকার সুরক্ষা আইন প্রণয়ন করা, সংবিধান সংশোধন করে আদিবাসী অধিকারের স্কীকৃতি দিয়ে তাদের আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকার সহ ভূমি ও সম্পদের উপর অধিকার নিশ্চিত করা, সমতলের আদিবাসীদের জন্য স্বতন্ত্র ভূমি কমিশন গঠণ করা, পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন অবিলম্বে কার্যকর করা, আদিবাসীদের উন্নয়নে বা আদিবাসী অধ্যুষিত অঞ্চলে কোন উন্নয়ন পদক্ষেপ গ্রহণের বেলায় তাদের অর্থপূর্ণ অংশীদারীত্ব নিশ্চিত করা সহ পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম।
আজ ( বুধবার) সকালে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে এ দাবি জানানো হয়। "আদিবাসী সহ প্রান্তিক মানুষের ভূমি থেকে উচ্ছেদ এবং তাদের মানবাধিকার" শীর্ষক সেমিনারটি আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস উপলক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন আয়োজক সংগঠনের সাধারন সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন অ্যাড. সুলতানা কামাল।
সেমিনারে বলা হয়, পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি সাক্ষরের পর ২০ বছর অতিক্রান্ত হলেও ভূমি কমিশন গঠণের ১৭ বছর পরও পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি নিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন প্রকৃত অর্থে কার্যকর হয়নি। চুক্তির পরও পাহাড়ে হাজার হাজার একর জমি দখল হয়ে গেছে।
রিজার্ভ ফরেস্ট, পর্যটন কেন্দ্র স্থাপন, ব্যবসায়ী এবং প্রভাবশালী আমলা ও রাজনৈতিক ব্যক্তিকে হার্টিকালচার ও রাবার চাষের নামে ইজারা প্রদান করে হাজার হাজার একর সামাজিক মালিকানাধীন জুমভূমি ও মৌজাভূমি বেদখল হয়ে গেছে। আভ্যন্তরীন উদ্বাস্তু ও প্রত্যাগত আদিবাসী শরণার্থীদের জায়গা জমি প্রত্যর্পণ ও পুনর্বাসন হয়নি। সব মিলিয়ে আজ পর্যন্ত পার্বত্য চট্টগ্রামে ভূমি সমস্যার সমাধান হয়নি বলে জানানো হয়।
মূল প্রবন্ধের উপর ভিত্তি করে আলোচনায় অংশগ্রহণ করে আলোচকবৃন্দ বলেন, যুগ যুগ ধরে আদিবাসীরা তাদের ভূমি হারিয়েছে। বিভিন্ন প্রকল্পের কারণে যেমন বাঁধ নির্মাণ, ন্যাশনাল পার্ক, ইকো পার্ক, সংরক্ষিত বনাঞ্চল, সামাজিক বনায়ন, মিলিটারী বেইস নির্মাণ ইত্যাদির কারণে আদিবাসীরা তাদের ভূমি হারিয়েছে। মধুপুরে আদিবাসীদের জীবন দিতে হয়েছে। এর কোন বিচার হয়নি। ভূমিগ্রাসী চক্র ক্রমাগতভাবে আদিবাসীদের জমিজমা কেড়ে নিয়েছে। জাল দলিল, হুমকী, আইনের ফাঁকে, নানা রকম মামলায় আদিবাসীরা বারবার সর্বশান্ত হয়েছে বলেও জানানো হয়। তারা বলেন, বছরের পর বছর আদিবাসীরা মামলা চালাতে গিয়ে আরো নি:স্ব হয়েছে।
সেমিনারে সূচনা বক্তব্য রাখেন এএলআরডি উপ নির্বাহী পরিচালক রওশন জাহান মনি। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন `নিজেরা করি`র সমন্বয়কারী খুশী কবীর, চাকমা রাণী ইয়েন ইয়েন, অধ্যাপক মেজবাহ কামাল, অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, অধ্যাপক আমেনা মহসিন, অ্যাড. রানা দাস গুপ্ত, আদিবাসী পরিষদের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ সরেন। সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা।
এসি
আরও পড়ুন