আনন্দ নিবাসের ছোঁয়ায় বদলে যাচ্ছে পথশিশুদের জীবন
প্রকাশিত : ১৮:০২, ১৭ মে ২০১৮ | আপডেট: ১৮:১৩, ১৭ মে ২০১৮
বাবার মৃত্যুর পর ঋতুর (ছদ্মনাম) মা আরেকটি বিয়ে করে। ঋতুর ঠাঁই হয় তার মায়ের নতুন সংসারে। তার নতুন বাবা আগেও আরেকটি বিয়ে করেছিল। সেই সংসারে সন্তান ছিল আরো ছয়জন। অভাব, অনটন লেগেই থাকতো। নতুন বাবা মেয়েটিকে সহ্য করতে পারতো না। সুযোগ পেলেই চলতো চড়, থাপ্পড়, গালাগালি। মেয়েটির মা মেয়েটিকে এক পরিচিত লোকের মাধ্যমে ঢাকায় বাসা-বাড়িতে কাজে পাঠিয়ে দেন। সেখানেও নতুন ঝামেলা। মেয়েটি একদিন কাজ করতে গিয়ে গ্লাস ভেঙ্গে ফেলে। শাস্তি হিসেবে মেয়েটিকে মেরে বাসা থেকে তাড়িয়ে দেয় পরিবারটি। তারপর থেকে মেয়েটির ঠাঁই হয় বাজারে। বিভিন্ন দোকানের সামনে ঘুরঘুর করে। কেউ কোন কাজ করে দিলে দু`চার টাকা দেয়। পেলে খায়, না পেলে খালি পেটে ঘুমায়। এভাবেই চলছিল ভাসমান জীবন।
কিন্তু একদিন ঘটনাচক্রে পরিচয় হয় এএসডিতে (এ্যাকশন ফর সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট) কর্মরত এক ‘আপার’ সঙ্গে। আপা তাকে নিয়ে যায় আনন্দ নিবাস- ২ এ। প্রথমদিকে মেয়েটার মধ্যে কিছুটা সংশয় ও দ্বিধা থাকলেও আস্তে আস্তে সে অভ্যস্ত হয়ে উঠে নতুন জীবনে। ঋতু পড়ছে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণীতে। ঋতু ভালো ছবি আঁকে, ভালো গান গায়। ইতোমধ্যে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় প্রথমস্থান অর্জন করেছে সে। মেয়েটির সঙ্গে আলাপ করার সময় জিজ্ঞেশ করলাম, বড় হয়ে কী হতে চাও। মেয়েটির ঝটপট উত্তর, পুলিশ। মেয়েটির নাম ঋতু (ছদ্মনাম)।
শুধু ঋতু নয়, এরকম অনেক পথশিশুর জীবনের গল্প বদলে দেওয়ার ঠিকানা আনন্দ নিবাস। এএসডি- র `ডেভেলপমেন্ট অব চিলড্রেন এ্যাট হাই রিস্ক` (DCHR) প্রকল্পের আওতায় আনন্দ নিবাস পরিচালিত হয়। এ প্রকল্পের আওতায় রয়েছে এরকম তিনটি আনন্দ নিবাস। যা রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থিত। অধিকার ও সুবিধা বঞ্চিত এবং মারাত্মক ঝুঁকিতে থাকা শিশুদের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনয়নে বিশেষ ভূমিকা পালন করাই এ প্রকল্পের উদ্দেশ্য বলে জানালেন প্রকল্পটির প্রধান প্রজেক্ট ম্যানেজার ফারহানা সুলতানা।
আনন্দ নিবাস- ২ এর আরেক অতিথি অন্তু। বয়স যখন মাত্র একমাস তখন তার বাবা তাদের ছেড়ে চলে যায়। তার মা তাকে নিয়ে আশ্রয় নেয় বাপের বাড়িতে। কিন্তু সেখানে বেশিদিন ঠাঁই মেলেনি অন্তুর। নিদারুণ অভাব-অনটনে ক্লিষ্ট হয়ে একদিন অন্তুকে নিয়ে তার মা পাড়ি জমায় ঢাকায়। মানুষের বাসায় গৃহকর্মীর কাজ নেয় তার মা। একপর্যায়ে তার মা আরেকটি বিয়ে করে। অন্তু`র নতুন বাবা অন্তু কে সহ্য করতে পারে না। একদিন তার বাবা-মা তাকে না জানিয়ে বাসা পরিবর্তন করে। অন্তু মাকে হারায়। শেষ হয়ে যায় তার পারিবারিক ঠিকানা।
যে বয়সে শিশুরা পড়াশুনা করে, স্কুলে যায়, মায়ের স্নেহে উষ্ণতা খোঁজে সেই বয়সে অন্তু পথশিশু হিসেবে নেমে আসে রাস্তায়। কেউ কিছু খেতে দিলে খায়, নয়তো উপোষ পেঠেই ফুটপাতে ঘুমায়। একদিন সে এএসডি`র DCHR-প্রকল্পের একজন কর্মীর চোখে পড়ে। এরপর ওই কর্মী তাকে নিয়ে যায় আনন্দ নিবাস- এ। অন্তু বর্তমানে রাজধানীর একটি স্কুলে ক্লাস সেভেনে পড়ছে। অন্তুর ছবি আঁকার হাত খুব ভালো। তাই তাকে একটি সাইনবোর্ড/ ব্যানার তৈরির দোকানে কাজ শেখার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে।
অন্তু এ প্রতিবেদককে জানায়, আনন্দ নিবাস তার জীবনে এনেছে ব্যাপক পরিবর্তন। এখানে সে তিনবেলা ভরপেট খেতে পারে। পায় নিয়মিত চিকিৎসা। পড়াশুনার পরিবেশ ভালো। আপু- ভাইয়ারা সবাই খুব আন্তরিক। অন্তুকে জিজ্ঞেস করলাম, সে বড় হয়ে কী হতে চায়। উত্তরে অন্তু জানায় সে বড় হয়ে একজন শিল্পী হতে চায়।
DCHR -এর প্রজেক্ট ম্যানেজার ফারহানা সুলতানা জানান, এই প্রকল্পের আওতায় তিনটি আনন্দ নিবাস পরিচালনা করছেন তারা। এর মধ্যে দুটি মেয়েদের ও একটি ছেলেদের। তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রথমে ভাসমান পথশিশুদের জরিপের আওতায় আনেন তারা। তারপর চারটি ক্যাটাগরিতে পথশিশুদের ভাগ করেন। এর মধ্যে প্রথম ধাপে রয়েছে সেসব পথশিশুরা যারা সব সময় রাস্তায় থাকে, দ্বিতীয় ধাপে আছে তারা, যারা বাবা-মাসহ রাস্তায় থাকে, আর যারা দিনের বেলায় ভাসমান কাজ করে রাতে কোনো না কোনো আত্মীয়ের বাসায় থাকে তাদের কে ফেলা হয় তৃতীয় ক্যাটাগরীতে, আর যারা দিনে কাজ করে রাতে বাবা মায়ের সঙ্গে থাকে তারা চতুর্থ ক্যাটাগরীর পথশিশু। সাধারণত প্রথম ক্যাটাগরির পথশিশু তারা, যারা দিন রাত চব্বিশ ঘন্টায় রাস্তায় থাকে তাদের কে DCHR- এর প্রকল্পের আওতায় বেশী আনা হয়। বর্তমানে তাদের তিনটি আনন্দ নিবাসে রয়েছে ৯০জন শিশু, যাদের বয়স সর্বনিম্ন চার বছর থেকে সর্বোচ্চ আঠারো বছর পর্যন্ত।
প্রকল্পটির প্রধান ফারহানা সুলতানা`র সঙ্গে কথা বলে জানা যায় ২০১২ সাল থেকে এখনো পর্যন্ত আনন্দ নিবাসে ভর্তি করানো হয়েছে ৪০৩ জন শিশু। এর মধ্যে ৩৩ জনকে বিভিন্ন সময়ে তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তবে তাদেরকেই পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয় যাদের পরিবার শিশুটির ভার বহনে ও সার্বিক নিরাপত্তাদানে সক্ষমতা রাখে। তবে ড্রপ আউট হয়ে যাওয়া শিশুর সংখ্যাও কম নয়। এখনো পর্যন্ত ১৫০ জনের বেশী শিশু ড্রপ আউট হয়েছে। DCHR- প্রকল্পের ভাষায় এখানে যারা আনন্দ নিবাস- এর গোছানো ও নিয়মানুবর্তী জীবন সহ্য করতে না পেরে পালিয়ে গেছে, তাদের কে বলা হয় ড্রপ আউট।
ফারহানা সুলতানার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শিশুদের বয়স আঠারো হওয়া পর্যন্ত তারা এ আনন্দ নিবাসে থাকার সুযোগ পায়। এর মধ্যে তাদেরকে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি পছন্দ ও দক্ষতা অনুযায়ী কোনো একটি কর্মমূখী শিক্ষায় দক্ষ করা হয়, যাতে পরবর্তীতে তারা সাবলম্বী হয়ে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে। তবে এর মধ্যে কোনো পরিবার যদি তার সন্তানকে ফেরত নিতে চায় ও ফেরত নেওয়ার পর ভরন-পোষনে সক্ষমতার নিশ্চয়তা দিতে পারে তাহলে কয়েকটি প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়ে শিশুদের তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
পথশিশুদের জীবনের গল্প পাল্টে দিচ্ছে আনন্দ নিবাস
-আলী আদনান
বাবার মৃত্যুর পর ঋতুর (ছদ্মনাম) মা আরেকটি বিয়ে করে। ঋতুর ঠাঁই হয় তার মায়ের নতুন সংসারে। তার নতুন বাবা আগেও আরেকটি বিয়ে করেছিল। সেই সংসারে সন্তান ছিল আরো ছয়জন। অভাব, অনটন লেগেই থাকতো। নতুন বাবা মেয়েটিকে সহ্য করতে পারতো না। সুযোগ পেলেই চলতো চড়, থাপ্পড়, গালাগালি। মেয়েটির মা মেয়েটিকে এক পরিচিত লোকের মাধ্যমে ঢাকায় বাসা-বাড়িতে কাজে পাঠিয়ে দেন। সেখানেও নতুন ঝামেলা। মেয়েটি একদিন কাজ করতে গিয়ে গ্লাস ভেঙ্গে ফেলে। শাস্তি হিসেবে মেয়েটিকে মেরে বাসা থেকে তাড়িয়ে দেয় পরিবারটি। তারপর থেকে মেয়েটির ঠাঁই হয় বাজারে। বিভিন্ন দোকানের সামনে ঘুরঘুর করে। কেউ কোন কাজ করে দিলে দু`চার টাকা দেয়। পেলে খায়, না পেলে খালি পেটে ঘুমায়। এভাবেই চলছিল ভাসমান জীবন।
কিন্তু একদিন ঘটনাচক্রে পরিচয় হয় এএসডিতে (এ্যাকশন ফর সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট) কর্মরত এক ‘আপার’ সঙ্গে। আপা তাকে নিয়ে যায় আনন্দ নিবাস- ২ এ। প্রথমদিকে মেয়েটার মধ্যে কিছুটা সংশয় ও দ্বিধা থাকলেও আস্তে আস্তে সে অভ্যস্ত হয়ে উঠে নতুন জীবনে। ঋতু পড়ছে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণীতে। ঋতু ভালো ছবি আঁকে, ভালো গান গায়। ইতোমধ্যে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় প্রথমস্থান অর্জন করেছে সে। মেয়েটির সঙ্গে আলাপ করার সময় জিজ্ঞেশ করলাম, বড় হয়ে কী হতে চাও। মেয়েটির ঝটপট উত্তর, পুলিশ। মেয়েটির নাম ঋতু (ছদ্মনাম)।
শুধু ঋতু নয়, এরকম অনেক পথশিশুর জীবনের গল্প বদলে দেওয়ার ঠিকানা আনন্দ নিবাস। এএসডি- র `ডেভেলপমেন্ট অব চিলড্রেন এ্যাট হাই রিস্ক` (DCHR) প্রকল্পের আওতায় আনন্দ নিবাস পরিচালিত হয়। এ প্রকল্পের আওতায় রয়েছে এরকম তিনটি আনন্দ নিবাস। যা রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থিত। অধিকার ও সুবিধা বঞ্চিত এবং মারাত্মক ঝুঁকিতে থাকা শিশুদের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনয়নে বিশেষ ভূমিকা পালন করাই এ প্রকল্পের উদ্দেশ্য বলে জানালেন প্রকল্পটির প্রধান প্রজেক্ট ম্যানেজার ফারহানা সুলতানা।
আনন্দ নিবাস- ২ এর আরেক অতিথি অন্তু। বয়স যখন মাত্র একমাস তখন তার বাবা তাদের ছেড়ে চলে যায়। তার মা তাকে নিয়ে আশ্রয় নেয় বাপের বাড়িতে। কিন্তু সেখানে বেশিদিন ঠাঁই মেলেনি অন্তুর। নিদারুণ অভাব-অনটনে ক্লিষ্ট হয়ে একদিন অন্তুকে নিয়ে তার মা পাড়ি জমায় ঢাকায়। মানুষের বাসায় গৃহকর্মীর কাজ নেয় তার মা। একপর্যায়ে তার মা আরেকটি বিয়ে করে। অন্তু`র নতুন বাবা অন্তু কে সহ্য করতে পারে না। একদিন তার বাবা-মা তাকে না জানিয়ে বাসা পরিবর্তন করে। অন্তু মাকে হারায়। শেষ হয়ে যায় তার পারিবারিক ঠিকানা।
যে বয়সে শিশুরা পড়াশুনা করে, স্কুলে যায়, মায়ের স্নেহে উষ্ণতা খোঁজে সেই বয়সে অন্তু পথশিশু হিসেবে নেমে আসে রাস্তায়। কেউ কিছু খেতে দিলে খায়, নয়তো উপোষ পেঠেই ফুটপাতে ঘুমায়। একদিন সে এএসডি`র DCHR-প্রকল্পের একজন কর্মীর চোখে পড়ে। এরপর ওই কর্মী তাকে নিয়ে যায় আনন্দ নিবাস- এ। অন্তু বর্তমানে রাজধানীর একটি স্কুলে ক্লাস সেভেনে পড়ছে। অন্তুর ছবি আঁকার হাত খুব ভালো। তাই তাকে একটি সাইনবোর্ড/ ব্যানার তৈরির দোকানে কাজ শেখার ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে।
অন্তু এ প্রতিবেদককে জানায়, আনন্দ নিবাস তার জীবনে এনেছে ব্যাপক পরিবর্তন। এখানে সে তিনবেলা ভরপেট খেতে পারে। পায় নিয়মিত চিকিৎসা। পড়াশুনার পরিবেশ ভালো। আপু- ভাইয়ারা সবাই খুব আন্তরিক। অন্তুকে জিজ্ঞেস করলাম, সে বড় হয়ে কী হতে চায়। উত্তরে অন্তু জানায় সে বড় হয়ে একজন শিল্পী হতে চায়।
DCHR -এর প্রজেক্ট ম্যানেজার ফারহানা সুলতানা জানান, এই প্রকল্পের আওতায় তিনটি আনন্দ নিবাস পরিচালনা করছেন তারা। এর মধ্যে দুটি মেয়েদের ও একটি ছেলেদের। তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রথমে ভাসমান পথশিশুদের জরিপের আওতায় আনেন তারা। তারপর চারটি ক্যাটাগরিতে পথশিশুদের ভাগ করেন। এর মধ্যে প্রথম ধাপে রয়েছে সেসব পথশিশুরা যারা সব সময় রাস্তায় থাকে, দ্বিতীয় ধাপে আছে তারা, যারা বাবা-মাসহ রাস্তায় থাকে, আর যারা দিনের বেলায় ভাসমান কাজ করে রাতে কোনো না কোনো আত্মীয়ের বাসায় থাকে তাদের কে ফেলা হয় তৃতীয় ক্যাটাগরীতে, আর যারা দিনে কাজ করে রাতে বাবা মায়ের সঙ্গে থাকে তারা চতুর্থ ক্যাটাগরীর পথশিশু। সাধারণত প্রথম ক্যাটাগরির পথশিশু তারা, যারা দিন রাত চব্বিশ ঘন্টায় রাস্তায় থাকে তাদের কে DCHR- এর প্রকল্পের আওতায় বেশী আনা হয়। বর্তমানে তাদের তিনটি আনন্দ নিবাসে রয়েছে ৯০জন শিশু, যাদের বয়স সর্বনিম্ন চার বছর থেকে সর্বোচ্চ আঠারো বছর পর্যন্ত।
প্রকল্পটির প্রধান ফারহানা সুলতানা`র সঙ্গে কথা বলে জানা যায় ২০১২ সাল থেকে এখনো পর্যন্ত আনন্দ নিবাসে ভর্তি করানো হয়েছে ৪০৩ জন শিশু। এর মধ্যে ৩৩ জনকে বিভিন্ন সময়ে তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তবে তাদেরকেই পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয় যাদের পরিবার শিশুটির ভার বহনে ও সার্বিক নিরাপত্তাদানে সক্ষমতা রাখে। তবে ড্রপ আউট হয়ে যাওয়া শিশুর সংখ্যাও কম নয়। এখনো পর্যন্ত ১৫০ জনের বেশী শিশু ড্রপ আউট হয়েছে। DCHR- প্রকল্পের ভাষায় এখানে যারা আনন্দ নিবাস- এর গোছানো ও নিয়মানুবর্তী জীবন সহ্য করতে না পেরে পালিয়ে গেছে, তাদের কে বলা হয় ড্রপ আউট।
ফারহানা সুলতানার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শিশুদের বয়স আঠারো হওয়া পর্যন্ত তারা এ আনন্দ নিবাসে থাকার সুযোগ পায়। এর মধ্যে তাদেরকে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি পছন্দ ও দক্ষতা অনুযায়ী কোনো একটি কর্মমূখী শিক্ষায় দক্ষ করা হয়, যাতে পরবর্তীতে তারা সাবলম্বী হয়ে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে। তবে এর মধ্যে কোনো পরিবার যদি তার সন্তানকে ফেরত নিতে চায় ও ফেরত নেওয়ার পর ভরন-পোষনে সক্ষমতার নিশ্চয়তা দিতে পারে তাহলে কয়েকটি প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়ে শিশুদের তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
জানা গেছে আনন্দ নিবাসের বেশিরভাগ শিশুকে সংগ্রহ করা হয়েছে রাজধানীর মীরপুর মাজার এলাকা, হাইকোর্ট এলাকা ও গাবতলী বাস স্টেশন এলাকা থেকে। এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের তাগিদে ওরা যখন রাস্তায় ঘুরে তখন প্রকল্পটির কর্মীরা এসব পথশিশুদের তালিকাভুক্ত করে নিয়ে আসে আনন্দ নিবাসে। ১৯৮৮ সাল থেকে দেশের হতদরিদ্র, অবহেলিত, বঞ্চিত জনগোষ্টীকে নিয়ে এএসডি কাজ করছে। এএসডি- র DCHR প্রকল্পটির মাধ্যমে শিশুদেরকে ঝুঁকিপূর্ণ কাজ থেকে প্রত্যাহার করে উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা প্রদানের মাধ্যমে মূল ধারার প্রাথমিক শিক্ষার সাথে সম্পৃক্ত করা, প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বয়স ভেদে শোভন কাজে শিশুদের নিয়োগ দেওয়া, শিশুদের জন্য বিশ্রাম ও বিনোদনের আয়োজন করাই এ প্রকল্পের উদ্দেশ্য।
(আগামী পর্বে থাকছে অধিকাংশ পথশিশুর পছন্দ অপরাধ জগৎ)
এমজে/
এএ/ এমজে