আনিকার মৃত্যু নিয়ে ধোঁয়াশা, রহস্য উদঘাটনের দাবি
প্রকাশিত : ১১:১৩, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | আপডেট: ১১:১৫, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

জুলাইয়ে কোটাবিরোধী আন্দোলনে সরব ছিলেন। ইচ্ছে ছিল এলাকায় জজ হয়ে আসবেন, ছোট ছোট ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়ার প্রতি উৎসাহ দিবেন কিন্তু তাকে আসতে হয়েছে লাশ হয়ে। জজ হওয়া আর হলোনা, রাস্তায় মাইক হাতে আর কখনও প্রতিবাদী হয়ে দাঁড়াবেনা। বলছি নওগাঁর বদলগাছীর মেধাবী শিক্ষার্থী আনিকা মেহেরুন্নেসা শাহির কথা।
রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার নিউমার্কেট এলাকা থেকে পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করে। এই খবর ছড়িয়ে পড়লে তার গ্রামের বাড়িতে শোকের মাতম পড়ে যায়।
সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সরেজমিনে তার গ্রামের বাড়ি বদলগাছী উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়নের রহিমপুরে গিয়ে দেখা যায় শত বর্ষী দাদা সোলাইমান আলী মণ্ডল হতভম্ব হয়ে এদিক সেদিক দেখছেন। আর ফুফু আক্তার বানুর থামছেনা কান্না।
এদিকে মেধাবী ছাত্রীর এমনভাবে মৃত্যু মেনে নিতে পারছেনা পরিবারের লোকজনসহ প্রতিবেশীরা। তাই ঘটনার রহস্য উদঘাটন চাইলেন ফুফাত ভাই বকুল মিয়াসহ প্রতিবেশীরা।
জানা যায়, ইউপি চেয়ারম্যান ফিরোজ হোসেনের তিন মেয়ে ও এক ছেলের মধ্যে আনিকা মেহেরুন্নেসা শাহি ছিল মেজো। বাবার আদরের ২৪ বছরের এই মেয়ে ছোট থেকেই ছিল মেধাবী। তাই দেশের শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপিঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্যোগ বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২০২০-২১ সেশনে করতেন পড়াশোনা। ছিলেন কোটা বিরোধী আন্দোলনের সম্মুখ সারির প্রতিবাদী শিক্ষার্থী। পার্শ্ববর্তী জয়পুরহাট জেলায় গিয়ে শুরু করেছিলেন আন্দোলন। মাইক হাতে অন্যান্য সহপাঠীর সাথে দাঁড়ান রাস্তায়।
রোববার দিবাগত রাত ১১টার দিকে নিউমার্কেট থানা পুলিশ রাজধানীর নিউমার্কেট থানাধীন এলিফ্যান্ট রোডের মকসুদ টাওয়ারের ৮ তলার একটি কক্ষ থেকে আনিকার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় বুটেক্সের এক শিক্ষার্থীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে বলে জানা যায়।
এদিকে, নিহত ঢাবির ওই ছাত্রীর মৃত্যু নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে ধোঁয়াশা। যদিও এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা সেটা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে তার পরিবারসহ এলাকাবাসীর দাবি সঠিক তদন্তের মাধ্যমে তার মৃত্যুর রহস্য উদঘাটন হোক।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নিহত আনিকার চেয়ারম্যান বাবা ফিরোজ হোসেন ছিলেন আওয়ামী লীগের সাথে গভীরভাবে জড়িত। আনিকা আন্দোলনে প্রথম সারির হলেও তার বাবার কারণে তাকে বিভিন্ন কটু কথা শুনতে হতো। এমনকি মারাত্মক সাইভার ব্যুলিংয়ের শিকার হতে হয়েছে তাকে। যদিও আনিকা জয়পুরহাটে আন্দোলনের সময় অনেক অ্যাক্টিভ ছিলেন।
তবে যে কারণে হোক, আনিকার মৃত্যুর রহস্যের জট খুলবে এমনটাই দাবি সকলের।
বকুল নামের একজন বলেন, আমি গিয়ে দেখি আনিকা মেহেরুন শাহির মরদেহ ফ্যানের সাথে ঝুলছিল, কিন্তু অর্ধেক মেঝেতে লেগে ছিল। আমার জানামতে একটা ছেলের সাথে তার সম্পর্ক ছিল। আমরা ঢাকায় আছি, তার বাবা পাগল হয়ে গেছে। তবে আমরা যখন যাই, তখন দেখি লক ভাঙ্গা ছিল। মনে হয় তাকে কেউ নামানোর চেষ্টা করেছিল।
এএইচ
আরও পড়ুন