আন্তরিকতার সঙ্গে রোহিঙ্গা সঙ্কটের সমাধান করুন : ফখরুল
প্রকাশিত : ১৭:১৭, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭ | আপডেট: ১৭:১৭, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭
দলীয় রাজনীতির পথে না হেঁটে জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে রোহিঙ্গা সঙ্কট মোকাবিলার জন্য সরকাররের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, আমরা দেখছি, এ ব্যাপারে সরকারের কোনো আন্তরিকতা নেই। তারা এই সমস্যার সমাধান কতটুকু সঠিকভাবে করতে চায় সে ব্যাপারে যথেষ্ট সন্দেহ দেখা দিয়েছে। অনেকে অনেক কথা বলছেন, আমরা সে কথা বলতে চাই না- নোবেল পুরস্কারের কথা বলছেন, অন্যান্য সুবিধার কথা বলছেন…।
আমরা বলতে চাই, আন্তরিকতার সঙ্গে সমস্যার সমাধান করুন। বিভেদ না করে, বিভক্তি না এনে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে দেশের সব অভ্যন্তরীণ শক্তিকে এক করে মিয়ানমারের চাপিয়ে দেওয়া এই যে সঙ্কট, এই সঙ্কট মোকাবিলায় একটি জাতীয় ঐক্যের চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করুন। বৃহস্পতিবার সকালে কক্সবাজারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ আহ্বান জানান ফখরুল।
ফখরুল অভিযোগ করেন, সরকার এখন পর্যন্ত রোহিঙ্গাদের কোনো ত্রাণ দিচ্ছে না। বিদেশ থেকে যেসব ত্রাণ আসছে, সেগুলো বিলি-বণ্টন করছে কেবল।
তিনি বলেন, প্রয়োজনে প্রধানমন্ত্রীর উচিৎ ভারত, চীন ও রাশিয়ায় যাওয়া, যেন কোনো নেতিবাচক অবস্থান তারা না নেয়।
মিয়ানমারে রাখাইন রাজ্যে নতুন করে দমন-পীড়নের মুখে গত এক মাসে প্রায় পাঁচ লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ও দেশ রোহিঙ্গা নির্যাতনের ঘটনায় মিয়ানমার সরকারের সমালোচনায় সোচ্চার হলেও চীন, রাশিয়া ও ভারত রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের দমনের নামে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর ওই অভিযানকে সমর্থন জানিয়ে আসছে।
এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার বৈঠকে বসছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ, যেখানে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস মিয়ানমারের পরিস্থিতি তুলে ধরবেন।
নিপীড়ন বন্ধ করে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টির জন্য বাংলাদেশ কূটনৈতিক যোগাযোগ চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু নিরাপত্তা পরিষদ মিয়ানমারের বিরুদ্ধে কোনো কঠোর অবস্থান নিতে গেলে চীন ও রাশিয়া তার বিরোধিতা করতে পারে বলে কূটনীতিকদের ধারণা।
মির্জা ফখরুল বলেন, নিরাপত্তা পরিষদের আলোচনায় রাশিয়া বা চীন যাতে ভিটো দিতে না পারে- সেজন্য কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদার করতে হবে বাংলাদেশকে।
বিএনপির ২২ ট্রাক ত্রাণ বিতরণে সরকারের বাধার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, আমরা পরে ওই ত্রাণ বিতরণ করেছি। আমাদের দলের পক্ষ থেকে ত্রাণ তৎপরতা অব্যাহত থাকবে। এখন একটা কনট্রোল রুমও খোলা হয়েছে।
রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে সেনাবাহিনীর সম্পৃক্ততা ও কর্মপরিধি বাড়ানোর দাবি জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে ত্রাণ কাজে সেনাবাহিনী মোতায়েন করায় পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। এটা অব্যাহত থাকুক। আমরা বলেছি, সেনাবাহিনীর কর্মপরিধি আরও বিস্তৃত করা প্রয়োজন।
কক্সবাজার সার্কিট হাউজ সড়কে বিএনপির জেলা কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এজেডএম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব মজিবর রহমান সারোয়ার, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, মাহবুবুর রহমান শামীম, প্রচার সম্পাদক শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, কেন্দ্রীয় নেতা লুৎফর রহমান খান কাজল, শরীফুল আলম, হারুনুর রশীদ হারুন, শহিদুল ইসলাম বাবুল, আমিরুজ্জামান খান শিমুল, শায়রুল কবির খান ও জেলা সভাপতি শাহজাহান চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
রোহিঙ্গাদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণের জন্য গত মঙ্গলবার বিকালে কক্সবাজারে যান বিএনপি মহাসচিব। বৃহস্পতিবার বিকালে তার ঢাকায় ফেরার কথা রয়েছে।
//এআর
আরও পড়ুন