আন্তর্জাতিক দারিদ্র্য বিমোচন দিবস আজ
প্রকাশিত : ০৮:৪৭, ১৭ অক্টোবর ২০১৯
আজ ১৭ অক্টোবর, জাতিসংঘ ঘোষিত ‘আন্তর্জাতিক দারিদ্র্য বিমোচন দিবস’। জাতিসংঘের উদ্যোগে প্রতিবছরই সারা বিশ্বে এই দিনে দিবসটি পালিত হয়। বিশ্বজুড়ে দারিদ্র্য, ক্ষুধা ও মানুষের অসমতা দূর করাই দিবসটির মূল লক্ষ্য। আমাদের দেশেও গুরুত্বের সঙ্গে পালিত হয় দিবসটি।
১৯৯৫ সালকে জাতিসংঘ আন্তর্জাতিক দারিদ্র্য দূরীকরণ বর্ষ ঘোষণা করে। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের পর্যবেক্ষণে দেশে দেশে দারিদ্র্য ও বঞ্চনা বিশেষ গুরুত্ব পায়। উন্নয়নশীল দেশগুলোয় ৯০ দশকের উন্নয়নে দারিদ্র্য ও বঞ্চনা দূরীকরণ প্রাধান্য লাভ করে। এ বিবেচনায় দারিদ্র্য ও বঞ্চনা দূরীকরণের জন্য সচেতনতা বৃদ্ধির বিষয়টি মাথায় রেখে এক্ষেত্রে কতিপয় এনজিওর উদ্যোগকে ১৯৯২ সালের জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে অভিনন্দন জানানো হয়। বিশেষ করে ফ্রান্সভিত্তিক এনজিও এটিডি ফোর্থ ওয়ার্ল্ডসহ তাদের অতি দারিদ্র্য দূরীকরণ আন্দোলনের সফলতায় ১৭ অক্টোবর আন্তর্জাতিক দারিদ্র্য বিমোচন দিবস পালনের কথা পর্যালোচনা করা হয়। এ আলোকে সাধারণ পরিষদও উল্লিখিত সভায় ১৭ অক্টোবরকে আন্তর্জাতিক দারিদ্র্য দূরীকরণ দিবস ঘোষণা করে।
দেশে দেশে বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশে বিদ্যমান দারিদ্র্য এক জটিল ও বহুমাত্রিক সমস্যা, যার উদ্ভব জাতীয় ও আঞ্চলিক পরিসরে। দারিদ্র্য বিমোচনের কোনো একক উপায় নেই। এজন্য প্রয়োজন দেশকে স্বীয় অবস্থা বিবেচনা করে নিজস্ব কর্মসূচি নির্ধারণ। সেই সঙ্গে আন্তর্জাতিক সহায়তাদানের মাধ্যমে তাদের এ সমস্যা উত্তরণে সাহায্য করা।
১৯৯৫-এর বিশ্বস্বাস্থ্য রিপোর্টে আছে বিশ্বের সবচেয়ে নিষ্ঠুর হত্যাকারী ও ভোগান্তির উৎস হচ্ছে- দারিদ্র্য। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী দারিদ্র্যের কারণে শিশুরা ভ্যাকসিন থেকে বঞ্চিত তাই প্রতিবছর ২ মিলিয়ন শিশু মারা যাচ্ছে। বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা নেই ফলে প্রতিবছর ৩ মিলিয়ন শিশু মারা যাচ্ছে। কার্যকর ওষুধ ও চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হয়ে প্রতিবছর ৬ মিলিয়ন মা সন্তান জন্মদানকালে মারা যাচ্ছে। কমে যাচ্ছে আয়ুষ্কাল, বাড়ছে পঙ্গু প্রতিবন্ধী শিশুর সংখ্যা, হচ্ছে দুর্ভিক্ষ। দারিদ্র্যের কারণে হচ্ছে মানুষিক অসুস্থতা, বিষণ্নতা, আত্মহত্যা, পারিবারিক বিচ্ছিন্নতা।
জাতিসংঘ মনে করে দারিদ্র্য মানবাধিকারের জন্য বাধা। দারিদ্র্য বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে পরিবেশ সংরক্ষণে। তাই দারিদ্র্য দূরীকরণে নির্ধারণ করা প্রয়োজন কম মেয়াদি কৌশল। উন্নয়ন, টেকসই সম্পদ ব্যবস্থাপনা ও দারিদ্র্য দূরীকরণের বিষয়গুলোকে সমাধান করতে হবে সমন্বিতভাবে। এ কৌশলের লক্ষ্য হবে টেকসই জীবনযাত্রার জন্য সবাইকে সহায়তা প্রদান, আয় বৃদ্ধি, সম্পদের স্থানীয় নিয়ন্ত্রণ ও এনজিও এবং স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানকে শক্তিশালী করে মানবসম্পদ উন্নয়নের নীতি গ্রহণ।
এসএ/