ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৬ নভেম্বর ২০২৪

আবরার ফাহাদের আইডি ‘রিমেম্বারিং’ করল ফেসবুক

নাজমুশ শাহাদাৎ

প্রকাশিত : ১৭:০৩, ৮ অক্টোবর ২০১৯ | আপডেট: ০০:০৭, ৯ অক্টোবর ২০১৯

মৃত কোন ব্যক্তির আইডি রিমেম্বারিং করে রাখে ফেসবুক। সাধারণত আইডির সঙ্গে যুক্ত থাকা বন্ধু এবং অন্যান্য ফেসবুক ব্যবহারকারী শুভাকাঙ্ক্ষীদের ‘আইডি মেমোরাইজড’ করার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ মৃত ব্যক্তির আইডিকে ‘রিমেম্বারিং’ করে। 

এরই ধারাবাহিকতায় নিহত বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের ফেসবুক আইডিতে ‘রিমেম্বারিং’ ট্যাগ যুক্ত করেছে ফেসবুক। রোববার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়টির দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে শিবির সন্দেহে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এরপরই বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে তার প্রোফাইলে ওই ট্যাগ যুক্ত করে ফেসবুক।

একইসঙ্গে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ তার প্রোফাইলের ওপরে লিখেছে, ‘We hope people who love Abrar will find comfort in visiting his profile to remember and celebrate his life.’

বুয়েটছাত্র আবরার ফাহাদের ফেসবুক আইডি ‘রিমেম্বারিং’ হওয়ায় এখন কেউই আর তার অ্যাকাউন্টে অ্যাক্সেস করতে পারবে না। এমনকি কেউ যদি তার ফেসবুক আইডির পাসওয়ার্ড হ্যাকও করে, তাও সে ওই আইডিতে অ্যাক্সেস করতে পারবে না। আবরারের আইডিতে এখন ফেসবুক কর্তৃপক্ষ ছাড়া আর কারো নিয়ন্ত্রণ থাকবে না। 

ফেসবুক কর্তৃপক্ষের নিয়মানুযায়ী, কোনও ফেসবুক ব্যবহারকারী মারা গেলে তার আইডি রিমেম্বারিং করার অপশন রয়েছে। এক্ষেত্রে ওই আইডির বন্ধু কিংবা অন্য ব্যবহারকারীদের আইডি মেমোরাইজড আবেদন করতে হয়। এরপর বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ আইডি ‘রিমেম্বারিং’ করে। 

এর আগেও খুন হওয়া ব্লগার ও মুক্তমনা লেখক নীলাদ্রি চ্যাটার্জি ওরফে ‘নিলয় নীল’, ওয়াশিকুর রহমান বাবু, অভিজিৎ রায় এবং অনন্ত বিজয় দাশের ফেসবুক আইডি ‘রিমেম্বারিং’ করে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ। 

এদিকে, বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় গ্রেফতার বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেলসহ ১০ নেতাকে ৫ দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত।

মঙ্গলবার সকালে এই ১০ আসামিকে আদালত চত্বরে হাজির করেছে চকবাজার থানা পুলিশ। ঢাকা মহানগর হাকিম সাদবীর ইয়াছির আহসান চৌধুরীর আদালত তাদের উপস্থাপন করেন। 

জানা যায়, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ আসামির প্রত্যেকের জন্য ১০ দিন করে রিমান্ড আবেদনের প্রেক্ষিতে মহানগর হাকিম সাদবীর ইয়াছির আহসান চৌধুরীর আদালত শুনানি শেষে এই রায় দেন।

আবরার হত্যার ঘটনায় পুলিশ যে কয়েকজনকে আটক করেছে, তাদের মধ্যে রয়েছেন—বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফুয়াদ, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এবং মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী অনিক সরকার, ক্রীড়া সম্পাদক ও নেভাল আর্কিটেকচার অ্যান্ড মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের একই বর্ষের মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, ছাত্রলীগ নেতা রবিন, মুন্না, তানভীরুল আরেফিন ইথান, অমিত সাহা ও আল জামি।

প্রসঙ্গত, ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেয়ার জের ধরে আবরার ফাহাদকে রোববার (৬ অক্টোবর) রাতে ডেকে নিয়ে যায় বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী। এরপর রাত ৩টার দিকে শেরেবাংলা হলের নিচতলা ও দুইতলার সিঁড়ির করিডোর থেকে তার মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

পরদিন সোমবার দুপুর দেড়টার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল মর্গে আবরারের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ লাশের ময়নাতদন্ত করেন। তিনি বলেন,‘ছেলেটিকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

এই ঘটনায় আবরার ফাহাদের বাবা বরকত উল্লাহ বাদী হয়ে সোমবার ১৯ জনকে আসামি করে রাজধানীর চকবাজার থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এদিন সন্ধ্যা পর্যন্ত ৯ জন ছাত্রলীগ নেতাকে আটক করে পুলিশ। নিহত আবরার বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি শেরেবাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষে থাকতেন।

এনএস/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি