ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪

‘আমি পঙ্গু মানুষ, আমাকে কেউ বাঁচান’

প্রকাশিত : ১৪:৩৭, ৩০ মার্চ ২০১৯

‘আমি পঙ্গু মানুষ, আমাকে কেউ একটু বাঁচান। আমি তো বের হতে পারছি না।’ চিৎকার আর আহাজারি করছিলেন দুর্ঘটনায় চলনশক্তি হারানো মঞ্জুর হাসান। কিন্তু না, তাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেননি সহকর্মীদের কেউ। আগুনের খবর পেয়ে এফ আর টাওয়ারের ভবনের ২১ তলার সবাই যার যার নিজের প্রাণ বাঁচাতে বেরিয়ে যান। অসহায় মঞ্জুরের যেন কিছুই করার ছিল না। অফিসে চেয়ারে বসে মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে তাকে। ধীরে ধীরে পুরো অফিস ধোঁয়াচ্ছন্ন হয়ে উঠলে শ্বাসবন্ধ হয়ে মারা যান তিনি।

স্বজনরা বলছেন, সহকর্মীদের কেউ একজন সহযোগিতা কররে তাকে বাঁচানো যেত। ২১ তলায় আগুন পৌঁছায়নি। ধোঁয়ায় দমবন্ধ হয়ে মারা গেছেন তিনি। পঙ্গু হওয়ার কারণে জানালার কাঁচগুলোও ভাঙতে পারেননি। কেন্দ্রীয়ভাবে এসি লাগানো থাকায় অফিসের ভেতর থেকে ধোঁয়া বের হতে পারেনি। ফলে ধোঁয়ার কুণ্ডলি পাকিয়ে তার মৃত্যু হয়েছে।

মঞ্জুর হাসানের ছোট ভাই শিমুল হাসান জানান, এফ আর টাওয়ারে আগুন লাগার পর তার ভাই পরিবারের সদস্যদের ফোন করেন। এ সময় তিনি বলেন ‘আমি মনে হয় আর বাঁচবো না। সবাই অফিস থেকে বের হয়ে যাচ্ছে। কেউ আমাকে বের করে নিয়ে যায়নি। আমি কোনও উপায় না পেয়ে অফিসের চেয়ারে বসে আছি। আমি হয়তো মরে যাবো। সবাইকে আমার জন্য দোয়া করতে বলিস। তোরা ভালো থাকিস। আমার দুই সন্তানকে দেখে রাখিস।’

বনানীর এফ আর টাওয়ারের ২১ তলার কাশেম গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ-এর প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত ছিলেন মঞ্জুর হাসান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে হিসাব বিজ্ঞান বিভাগে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করা মঞ্জুর কাশেম গ্রুপে চাকরিরত অবস্থায় ২০০০ সালে মতিঝিলে দুর্ঘটনায় পড়েন। তখন থেকেই চলনশক্তি হারানো মঞ্জুরকে কাশেম গ্রুপের কর্ণধার প্রধান কার্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেন। হুইল চেয়ারের মাধ্যমে অন্যের সহযোগিতায় অফিসে যাতায়াত করতেন তিনি।

আআ//একে//


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি