কুরআনের নির্দেশ
আল্লাহ যাদের ক্ষমা করবেন, যাদের করবেন না
প্রকাশিত : ১৭:১২, ১৭ মে ২০১৯
রমজান আল্লাহর ক্ষমা ও করুণা পাওয়ার শ্রেষ্ঠ সময়। মাগফেরাতের দশক চলছে। ক্ষমা পাওয়ার জন্য আকুলিত হই। আল্লাহ ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু, রমজানে আল্লাহতায়ালা তার বান্দাদের জন্য দয়া ও ক্ষমার ভান্ডার উন্মুক্ত করে দেন। শুধু চাইতে হবে।
কুরআনে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন ইরশাদ করেন : ‘এখন তোমাদের প্রতিপালক তোমাদের ক্ষমা করতে পারেন। কিন্তু তোমরা যদি (পাপাচারের) পুনরাবৃত্তি করো, তবে আমিও (শাস্তিদানের পথে) ফিরে যাব। আর আমার নির্দেশ হচ্ছে, (পরকালে) সকল সত্য অস্বীকারকারীর জন্যে জাহান্নামের আগুনই হবে কারাগার।’ (সূরা বনি ইসরাইল ৮)
‘(মানুষকে এ ধরনের ঘটনার মুখোমুখি করা হয়) যাতে আল্লাহ সত্যবাদীদের তাদের অঙ্গীকার রক্ষার জন্যে পুরস্কৃত করতে পারেন এবং শরিককারীদের শাস্তি দিতে পারেন আবার (তারা অনুশোচনা করলে) ক্ষমাও করে দিতে পারেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ অতীব ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’ (সূরা আহজাব ২৪)
‘(কিন্তু ওরা তাকে অন্যায়ভাবে হত্যা করে ফেলল) এরপর তাকে বলা হলো, জান্নাতে প্রবেশ করো। তখন সে বলে উঠল, ‘হ্যায়! আমার সম্প্রদায় যদি জানতে পারত, কী কারণে আমার প্রতিপালক আমাকে ক্ষমা করেছেন এবং সম্মানিতদের অন্তর্ভুক্ত করেছেন।’ (সূরা ইয়াসীন ২৬-২৭)
‘তারা তাদের প্রতিপালকের পুরষ্কারে আনন্দে উচ্ছল হয়ে উঠবে। কারণ পার্থিব জীবনে তারা ছিল সৎকর্মীশীল। তারা রাতে সামান্য অংশই ঘুমিয়ে কাটাত, রাতের শেষ প্রহরে তারা ক্ষমা প্রার্থনা করত, তাদের ধন-সম্পত্তি থেকে অভাবী ও বঞ্চিতের হক আদায়ে অকাতরে ব্যয় করত।’ (সূরা জারিয়াত ১৬-১৯)
অন্যের ভুল ক্ষমা করার নির্দেশ : ‘নিশ্চয়ই যারা (এক) স্বচ্ছল ও অস্বচ্ছল অবস্থায় দান করে, (দুই) রাগ নিয়ন্ত্রণ করে, (৩) মানুষকে ক্ষমা করে, আল্লাহ তাদের ভালবাসেন।’ (সূরা আলে ইমরান ১৩৪)
‘হে নবী! (মানবীয় প্রকৃতির দিকে খেয়াল রেখে) তুমি ক্ষমাশীল হও। সৎকর্মে উদ্বুদ্ধ করো এবং আহাম্মকদের থেকে দূরে থাকো।’ (সূরা আরাফ ১৯৯)
‘তোমাদের মধ্যে যারা ধনসম্পত্তি ও প্রাচুর্যের অধিকারী, (তোমাদের বদনাম করা হলেও) তোমরা কখনো আত্মীয়-স্বজন, অভাবী ও আল্লাহর পথে হিজরতকারীদের সাহায্য করা থেকে বিরত থাকার শপথ করবে না। ওদের ক্ষমা করবে, দোষ-ত্রুটিকে উপেক্ষা করবে। তোমরা কি চাও না যে, আল্লাহ তোমাদের দোষত্রুটি ক্ষমা করুন? নিশ্চয়ই আল্লাহ অতীব ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’ (সূরা নূর ২২)
যাদের আল্লাহ ক্ষমা করবেন না : ‘কিতাবে যে বিধি-বিধান আল্লাহ নাযিল করেছেন, যারা তা গোপন করে এবং সামান্য বৈষয়িক স্বার্থের বিনিময়ে তা বিসর্জন দেয়, তারা আসলে আগুন ভক্ষণ করে। মহাবিচার দিবসে আল্লাহ ওদের সঙ্গে কথা বলবেন না এবং ওদের এ অপরাধ ক্ষমাও করবেন না। ওদের জন্যে অপেক্ষা করছে কঠিন পীড়াদায়ক শাস্তি।’ (সূরা বাকারা ১৭৪)
‘হে নবী! তুমি ওদের জন্যে ক্ষমা প্রার্থনা করো বা না করো- একই কথা। (এমনকি) তুমি ওদের জন্যে ৭০ বার ক্ষমা প্রার্থনা করলেও আল্লাহ ওদের কখনোই ক্ষমা করবেন না। কারণ ওরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে অস্বীকার করেছে। আল্লাহ সত্যত্যাগীদের কখনো সৎপথ দেখান না।’ (সূরা তওবা ৮০)
‘আল্লাহ তাঁর সঙ্গে শরিক করার মতো অপরাধ ক্ষমা করেন না। এ ছাড়া অন্যান্য অপরাধের জন্যে যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন। আল্লাহর সঙ্গে যে শরিক করে সে মহাপাপ করে।’ (সূরা নিসা ৪৮)
‘যারা সত্যে বিশ্বাস স্থাপন করার পর সত্য অস্বীকার করে, আবার বিশ্বাস করে পুনরায় অস্বীকার করে, তাদের সত্য অস্বীকার করার প্রবণতা বাড়তে থাকে। আল্লাহ তাদের ক্ষমা করবেন না আর তারা সত্যপথের সন্ধানও পাবে না।’ (সূরা নিসা ১৩৭)
আল্লাহ যাদের ক্ষমা করবেন : ‘তোমরা যদি আমার নির্দেশ অনুসরণ করে বড় বড় গুণাহের কাজ থেকে বিরত থাকো, তবে তোমাদের ছোটখাট পাপগুলো আমি ক্ষমা করে দেবো। আর তোমাদের সম্মানজনক স্থানে, জান্নাতে দাখিল করব।’ (সূরা নিসা ৩১)
‘আর আল্লাহ ওয়াদা করেছেন, যারা বিশ্বাস করে ও সৎকর্ম করে, তিনি তাদের ক্ষমা করবেন ও মহাপুরস্কার দেবেন।’ (সূরা মায়েদা ৯)
‘কিন্তু যারা পাপ করার পর অনুশোচনা করে পুনরায় বিশ্বাস স্থাপন করে, তোমার প্রতিপালক তো তাদের ব্যাপারে ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু।’ (সূরা আরাফ ১৫৩)
‘(অধিকাংশ মানুষই এরকম।) তাই শুধু সৎকর্মশীল ও বিপদে ধৈর্যশীলদের জন্যে রয়েছে ক্ষমা ও মহাপুরস্কার।’ (সূরা হুদ ১১)
এএইচ/