ইমরান-শাসনে কি ছায়া ফেলবেন সেনাপ্রধানই
প্রকাশিত : ১১:৫৫, ২৭ জুলাই ২০১৮
ক্রিকেট খেলতে ভালবাসেন। পছন্দ উইকেট কিপিং। পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ৫৮ বছর বয়সি কমর জাভেদ বাজওয়ার সেই ক্রিকেট প্রেমই ইমরান খানের সঙ্গে সম্পর্ককে আরও মধুর করবে কি-না, তা সময়েই বলবে। তবে পাক ভোটের ফলে স্পষ্ট, দেশের প্রাক্তন ক্রিকেট ক্যাপ্টেনকে এখন থেকে চলতে হবে এক জন ক্রিকেট প্রেমীর পছন্দ-অপছন্দকে মাথায় রেখে। সরকার চালাতে সেনার চাপকে অস্বীকার করা ইমরানের পক্ষে কঠিন।
পাকিস্তানের ভোটের ফলের পরে ইমরানের সঙ্গে বাজওয়ার সম্পর্ক কেমন হতে পারে, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়ে গেছে। কারণ সেনার চোখের মণি হয়েই ভোটে জিতেছেন ইমরান। তবে সবচেয়ে বড় দল হলেও একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা মেলেনি। সরকার চালাতে ইমরানকে নির্ভর করতে হবে মুত্তাদিয়া মজলিস-ই আমল-এর মতো দল ও নির্দলদের উপর। যারা সেনার কথায় ওঠেবসে। সেখানেও সরকারের চাবি হাতে রাখবে সেনা।
পাক সেনাপ্রধানের পদে রাহিল শরিফের অবসরের পরে বাজওয়াকে নিয়োগ করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। কারণ তিনি ছিলেন পাকিস্তানের পাঁচ জন সিনিয়র জেনারেলের অন্যতম। বিশেষ করে নিয়ন্ত্রণরেখা ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরে সেনার নেতৃত্ব দেওয়ায় দীর্ঘ অভিজ্ঞতা রয়েছে তার। ভারতের প্রাক্তন সেনাপ্রধান বিক্রম সিংহের নেতৃত্বে এক সময়ে কঙ্গোয় রাষ্ট্রপুঞ্জের শান্তিরক্ষা বাহিনীতে কাজ করেছিলেন বাজওয়া। পাক সেনাপ্রধান হওয়ার পরে তার ‘অসাধারণ পেশাদারিত্বের’ প্রশংসায়ও করেছিলেন বিক্রম সিংহ। আর পাক সেনাপ্রধানের দুই ছেলে আলি ও সাদ জানিয়েছেন, ভারতকে নিয়ে বিশেষ আগ্রহ রয়েছে তাদের বাবার। নিজের লাইব্রেরিতে রেখেছেন ভারত সংক্রান্ত বইপত্র। ভারতকে নিয়ে তার সামরিক রণকৌশলের কারণেই সেনাপ্রধান হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছিল বাজওয়াকে। কূটনীতিকেরা মনে করছেন, আগামী দিনে ইমরানের ভারত নীতিতে ছায়া ফেলবেন সেনাপ্রধান।
সন্দেহের পিছনে কারণও রয়েছে। ইমরানকে প্রধানমন্ত্রী করার চেষ্টায় সেনা ও গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই এবার খোলাখুলি মাঠে নেমেছিল। অনেকেই বলছেন, অতীতে কখনও বেনজির ভুট্টোর পাকিস্তান পিপলস পার্টি কখনও বা নওয়াজ শরিফের পাকিস্তান মুসলিম লীগের পাশে থেকে কাজ করেছে সেনা ও আইএসআই। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেনাকর্তারা বুঝেছেন, এই দলগুলোকে সব সময়ে বশ করে রাখা সম্ভব নয়। আর পানামা পেপারস কেলেঙ্কারিতে শরিফ পরিবার ফেঁসে যাওয়ার পরে ইমরানের মধ্যেই দেশের ভবিষ্যত নেতাকে দেখতে পায় সেনা। সেই মতোই এগিয়েছে ছক। ফলও মিলেছে প্রত্যাশিত পথেই।
তবে পাকিস্তানের অতীত বলছে, দেশের কোনও প্রধানমন্ত্রীই পুরো মেয়াদ শেষ করতে পারেননি। সেনাই নিয়ন্ত্রণ করেছে শাসন ক্ষমতা। সেনার আজকের ‘চোখের মণি’ ইমরানের ভবিষ্যৎ কী হবে, সময়ই তা বলবে।
সূত্র: আনন্দবাজার
একে//
আরও পড়ুন