ইলিশের উচ্চ দাম নিয়ন্ত্রণে বাজারে অভিযান চালাবে ভোক্তা অধিদপ্তর
প্রকাশিত : ১৪:৪৬, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৩
বাজারে ইলিশের উচ্চদর নিয়ন্ত্রণে শিগগিরই অভিযানে নামবে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
সুস্বাদু এই মাছটির দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে বাজারে অভিযান ছাড়াও মাছ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করবে সংস্থাটি।
বৃহস্পতিবার ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত এক বিতর্ক অনুষ্ঠানে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ. এইচ. এম সফিকুজ্জামান এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, "ইলিশের দাম অত্যধিক বেড়েছে। ইলিশ প্রাকৃতিক দান। এটা কেউ চাষ করে না, কেউই ইলিশের খাবার দেয় না। অর্থাৎ, ইলিশের পেছনে কারও কোন খরচ নেই। খরচ শুধু ইলিশ ধরা এবং পরিবহনে। রুই-কাতল মাছ চাষ করতে অনেক টাকা খরচ করে খাবার দিতে হয়। অথচ বাজারে চাষের রুই-কাতলের চেয়ে ইলিশের দাম ৫-৬ গুণ বেশি। আমরা এটা নিয়ে শিগগিরই কাজ করবো।"
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, তারা অ্যাপসভিত্তিক বাজার মনিটর শুরু করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। শুরুতে বড় বড় রিফাইনারিগুলোর প্রতিদিনের তেল-চিনির উৎপাদনের তথ্য, মিলগেইট থেকে কোন জেলায় কী পরিমাণ পণ্য সরবরাহ হচ্ছে, সরবরাহ করা পণ্য আদৌ ওই জেলায় পৌঁছাচ্ছে, নাকি মাঝপথে অন্য কোথাও চলে গেছে, তা এই অ্যাপের মাধ্যমে মনিটর করা হবে।
"প্রতিদিন সারাদেশে যে পরিমাণ তেল, চিনি দরকার; মিল থেকে সেই পরিমাণ তেল, চিনি বাজারে ঢুকছে কি-না, তা এই অ্যাপের মাধ্যমে যাচাই করা হবে," জানান তিনি।
সফিকুজ্জামান বলেন, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর উদ্যোগ নেওয়ার পর ডাবের দাম কমতে শুরু করেছে। ডেঙ্গুর অজুহাতে যে ডাবের দাম ২০০ টাকায় উঠেছিল, এখন তা ১২০-১৩০ টাকায় নেমেছে। এটি আরও কমে ১০০ টাকায় নামবে বলে আশা করেন তিনি।
'বাজার মনিটরিং' বিষয়ে এক সংসদ বিতর্ক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এর সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, "ব্যবসায়ীরা এখন কম লাভে সন্তুষ্টি পাচ্ছেন না। তাদের অতি মুনাফা এবং অতি লোভের কারণে মূল্যস্ফীতি এখন 'লোভস্ফীতি'তে রূপান্তরিত হয়েছে।"
তিনি বলেন, "দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিম্নবিত্ত কিংবা মধ্যবিত্তদের জীবন দূর্বিষহ করে তুলেছে। মানুষের সঞ্চয় তলানিতে পড়েছে বা শেষ হয়ে গেছে। ধার কর্য করছে মানুষ। তারা কষ্টে আছে। ব্যবসায়ীরা এখন কম লাভে সন্তুষ্টি পাচ্ছে না। ব্যবসায়ীদের অতিমুনাফা, অতিলোভ বাজারদর বৃদ্ধির কারণ।"
"ব্যবসায়ীরা 'ফ্রাংকেস্টাইন' হয়ে গেছে। তাদের কঠোর হাতে রুখতে হবে। দ্রব্যমূল্যের আগুনে দাহ হওয়া ভোক্তাদের কেবল বাজার মনিটরিংয়ের মাধ্যমে স্বস্তি দেওয়া সম্ভব নয়। সরকার বলছে সিন্ডিকেট নেই। কিন্তু কয়েকজন ব্যবসায়ী মিলে বাজার নিয়ন্ত্রণ করলে সেটা কি সিন্ডিকেট নয়?" বলেন তিনি।
গোলাম রহমান বলেন, আমদানি-রপ্তানির দায়িত্ব বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাজ হলেও এ কাজ এখন আর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের হাতে নেই। ডিম-মুরগি আমদানির অনুমতি দেয় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি নিতে হয় কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে।
"এক সপ্তাহ ধরে বাজারে পেঁয়াজের কেজি ৫০ টাকার বেশি হলে যে কেউ অনুমতি ছাড়াই আমদানি করতে পারবে, কিংবা ডিমের হালি ৫০ টাকার বেশি হলে তা আমদানি করা যাবে। এক্ষেত্রে কোন মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে পারমিট নেওয়ার প্রয়োজন হবে না- এমন বিধান করা জরুরি হয়ে পড়েছে," জানান সাবেক এই বাণিজ্য সচিব।
এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।
এমএম//
আরও পড়ুন