ঢাকা, রবিবার   ২২ ডিসেম্বর ২০২৪

উত্তরবঙ্গকে সমৃদ্ধ করি

শেখ মনোয়ার হোসেন

প্রকাশিত : ১৭:০৬, ৩০ জানুয়ারি ২০২৩ | আপডেট: ১৭:২৮, ৩০ জানুয়ারি ২০২৩

বাংলাদেশ আজ বিশ্বের বিস্ময় । বিধ্বংসী মহামারী করোনা মোকাবেলায় মাননীয় প্রধানমন্রী যে সাহসীকতা ও যোগ্যতার পরিচয় দিয়েছেন তাতে করে তাঁর অর্থনৈতিক কর্মপরিকল্পনার দিকে বিশ্বের অগ্রসরমান রাষ্ট্রসমূহ আক্ষরিক অর্থেই আগ্রহী হয়ে উঠেছে।

এই আগ্রহকে অর্থবহ করে প্রায়োগিক সাফল্যে উন্নীত করার জন্য আমাদের জ্ঞানীগুণী চিন্তাবিদ, বিজ্ঞানী, অর্থনীতিবিদ, সমাজতাত্ত্বিক, কূটনৈতিক, রাজনৈতিক, পেশাজীবী- সকলেরই দায়িত্ব ও কর্তব্য রয়েছে। বিশেষ করে বিদেশের চোখে উন্নয়নের ক্ষেত্রগুলোকে লাভজনকভাবে উপস্থাপনের মাধ্যমে বিনিয়োগবান্ধব হিসেবে দৃশ্যমান করা গেলে আমরা অতি দ্রুত কাঙিক্ষত অর্থনৈতিক সূচক অর্জন করতে সক্ষম হব।

বৈদেশিক বিনিয়োগের একটি মোক্ষম ক্ষেত্র উত্তরবঙ্গের বিশাল সম্ভাবনাময় জনপদ যথাযথ প্রচার/প্রচারণার অভাবে এখনো লোকচক্ষুর অন্তরালেই রয়ে গেছে। অথচ এই অঞ্চলটি দেশের সর্ববৃহৎ কৃষিপণ্যের যোগানদাতা । এ ছাড়াও উত্তরবঙ্গের প্রাণ প্রবাহ যমুনা পারে তৈরি হচ্ছে একাধিক অর্থনেতিক অঞ্চল এবং শিল্প পার্ক ।

বঙ্গবন্ধু সেতু নির্মাণের ধারাবাহিকতায় পদ্মা সেতু এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলওয়ে সেতু নির্মাণে উত্তরবঙ্গের আঞ্চলিক গুরুত্ব বহুলাংশে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি পাবে।

ভারত তো বটেই নেপাল ভুটান চীনসহ এশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রসমূহের সাথে আরো শক্তিশালী দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের একটি বড় সম্ভাবনা তৈরি করছে এ সকল গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। এর সাথে নৌবাণিজ্যের সম্ভাবনাও হাতছানি দিচ্ছে ।

এই উত্তরবঙ্গেরই অন্যতম একটি জেলা সিরাজগঞ্জ, যার রয়েছে সুপ্রাচীন সমৃদ্ধ ইতিহাস। ব্রিটিশ আমলে ট্রেন লাইনের কারণে কলকাতার সঙ্গে সহজ ও সরাসরি যোগাযোগ ছিল সিরাজগঞ্জের। তখন সিরাজগঞ্জকে বলা হতো গেটওয়ে অব ইস্ট বেঙ্গল। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও সিরাজগঞ্জের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল অতীতে। সিরাজগঞ্জের তাঁতবস্ত্র একসময় সারা বাংলার কাপড়ের চাহিদার একটি বড় অংশের জোগান দিত। এখনো বাংলাদেশের তাঁতবস্ত্র, দুগ্ধ, মৎস্য, মাংস, কাঁচা চামড়ার চাহিদার একটি বড় অংশের জোগান দেওয়া হয় সিরাজগঞ্জ জেলা থেকে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিরাজগঞ্জের উন্নয়নে নানা পদক্ষেপ নিয়েছেন। এসবের মধ্যে রয়েছে শিল্প পার্ক, ইকোনমিক জোন, ১০০০ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন, তিনশ’ মিলিয়ন ঘনফুট ক্ষমতাসম্পন্ন গ্যাস বিতরণ কেন্দ্র, সিরাজগঞ্জ থেকে বগুড়া হয়ে রংপুর পর্যন্ত সরাসরি রেললাইন স্থাপনের ওয়াদা করেছেন। এসব প্রকল্পের কিছু কাজ ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে।

এ ছাড়া বিশ্বব্যাংক যমুনাতীর বরাবর সিরাজগঞ্জ থেকে রংপুর পর্যন্ত চার লেনের রাস্তা নির্মাণ প্রকল্প হাতে নিয়েছে। সম্প্রতি জাইকা যমুনা নদীর ওপরে চার লেনের রেলসেতু স্থাপনের একটি প্রস্তাব সরকারের নিকট পেশ করেছে।

তাই সবার কাছে অনুরোধ, আপনাদের নিজ নিজ ক্ষেত্রে যার যেখানে কথা বলার সুযোগ আছে সেখানেই উত্তরবঙ্গের দেশি-বিদেশি বিনিয়োগের সাফল্য সম্ভাবনা তুলে ধরুন। প্রচার-প্রচারণায় এই জনপদকে উদ্ভাসিত করুন। তাহলেই অবহেলিত উত্তরবঙ্গ আগামী দিনে মাথার মুকুট হিসেবে দেশের শোভা বর্ধন করবে ।

লেখক: সিনেট সদস্য জাবি এবং উদ্যোক্তা ও পরিচালক, সিরাজগঞ্জ ইকোনমিক জোন। 


** লেখার মতামত লেখকের। একুশে টেলিভিশনের সম্পাদকীয় নীতিমালার সঙ্গে লেখকের মতামতের মিল নাও থাকতে পারে।
Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি