এই গ্রামে পঞ্চাশ পেরোলেই অন্ধ হয়ে যান সব পুরুষ!
প্রকাশিত : ১১:০০, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২২
সবুজ-শ্যামল সুন্দরে ভরা এক পাহাড়ি গ্রাম। অথচ সেই সৌন্দর্য্যকে উপভোগ করার অধিকার নেই গ্রামবাসীদের একাংশেরই! কারণ এই গ্রামের পুরুষরা পঞ্চাশ পেরুলেই হয়ে যায় অন্ধ! উত্তর আমেরিকার দেশ পেরুর এক প্রত্যন্ত পাহাড়ি গ্রাম ‘প্যারান’-এ এটাই নাকি নিয়তি!
লাতিন আমেরিকা মানে ফুটবল। পেরুও তার ব্যতিক্রম নয়। ফুটবলের জন্যই দেশটি গোটা বিশ্বে পরিচিত। ইদানিং প্যারানের কথাও জানেন অনেকে। ছোট্ট পাহাড়ি গ্রাম প্যারান। গ্রামের জনসংখ্যা মাত্র ৩৬০ জন, যাদের ৭৫ শতাংশই অন্ধ।
এখানকার পঞ্চাশ বা তার বেশি বয়সিদের ৬০ শতাংশই নাকি অন্ধত্বের শিকার হন ৷ অবস্থা এতটাই ভয়াবহ যে, এই গ্রামটিকে মানুষ এখন ‘অন্ধদের গ্রাম’ নামে জানে।
কিন্তু একটি গ্রামের প্রৌঢ় পুরুষরাই শুধু অন্ধ হয়ে যাচ্ছেন কীভাবে?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখানে জিনগত সমস্যাই মূল কারণ। প্রায় ৩ হাজার ফুট উচ্চতায় অবস্থিত এই গ্রামের বেশির ভাগ মানুষই চোখের একটি জিনগত রোগে আক্রান্ত। জন্মগত সেই রোগের নাম “রেটিনাইটিস” ৷ যার ফলে একটা সময় চোখের “টানেল ভিশন” নষ্ট হয়ে যায় ৷ আর তার ফলেই জীবনের মাঝপথে নেমে আসে অন্ধকার!
জানা গিয়েছে, বহুকালে আগে সাতটি পরিবার নিয়ে গড়ে উঠেছে এই গ্রামটি ৷ আর তারাই নাকি সঙ্গে করে নিয়ে আসে অন্ধত্বের এই রোগ। তাছাড়া দূর্গম এই গ্রামে ডাক্তারের কথা ভাবতেও পারতোনা কেউ। কারণ এই গ্রামে আসার কোনও রাস্তাই ছিলোনা।
সম্প্রতি সোনা, রুপার খোঁজে এই গ্রামে হাজির হয় একটি খনন সংস্থা। তাদের মাধ্যমেই মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে গ্রাম সংযোগকারী একটি নতুন রাস্তা হয়েছে ৷
এই সংস্থার মাধ্যমেই গ্রামের বাসিন্দারা প্রথম চিকিৎসার সুযোগ পান। খনন সংস্থার চিকিৎসকরাই গ্রামের অন্ধ পুরুষদের চোখ পরীক্ষা করেন। এবং জানান, এই রোগ আসলে জন্মগত। এক্স ক্রোমোজোমের সমস্যাই রোগের কারণ।
চিকিৎসকরা আরও জানান, যে মায়েদের এক্স ক্রোমোজোমের সমস্যা রয়েছে তাদের পুত্র সন্তান জন্ম নিচ্ছে ভবিষ্যৎ অন্ধত্বের নিয়তি নিয়েই ৷ এই রোগের কোনও চিকিৎসা নেই বলেও জানিয়ে দিয়েছেন চিকিৎসকদের ওই দলটি ৷
সূত্র: সংবাদ প্রতিদিন
এমএম/