একটি রান্নাঘরেই যতো অায়োজন
প্রকাশিত : ১৭:১১, ২৪ জুলাই ২০১৮ | আপডেট: ১৭:৩১, ২৪ জুলাই ২০১৮
দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় ও ব্যস্ত এই রান্নাঘরটির (কর্তৃপক্ষের দাবি) অবস্থান খোদ ঢাকা শহরেই। ব্যস্ত এলাকা নতুন বাজারের পূর্ব পাশে বেরাইদ এলাকায় ১৫ বিঘা জমির ওপর এটি অবস্থিত। প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা অাফরোজা খানের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় এখনো পর্যন্ত অার কোথাও এর কোন অাউটলেট নেই। নেই অালাদা কোন শাখা। একটি রান্নাঘরেই যত অায়োজন। তবে ঢাকায় অারও কয়েকটি অাউটলেটের কথা ভাবছেন স্বত্ত্বাধিকারী অাফরোজা খান। নিজে যেটা খান মানুষকে সেটা খাওয়ান অাফরোজা খান। তিনি বলেন, "নিজে যেটা খাই মানুষকেও সেটা খাওয়াই। অামি অামার সন্তানকে যেটা খাওয়াব না সেটা মানুষকেও খাওয়াব না।" নিজের ব্যক্তিত্ব ও সততার পরিচয় এভাবেই একুশে টেলিভিশন অনলাইনের কাছে তুলে ধরলেন খান কিচেন- এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক অাফরোজা খান।
তিনি বলেন, বাঙালির খাবারের কথা মনে উঠলেই মায়ের চেহারা মনে পড়ে। মা কতো মমতা দিয়ে খাবার রাঁধেন তার সন্তানের জন্য। বাইরের বাণিজ্যিক নগর জীবনে সেই অাবেগের কোন মূল্য নেই। অামি শুরু থেকেই দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ছিলাম এমন মনোভাব অামার সব কর্মীদের মাঝে ছড়িয়ে দেব। অাগে ভালোবাসা তারপর ব্যবসা। অনেক কিছু থাকতে কিচেন নিয়ে কেন তার মাথায় ভাবনা এলো এমন প্রশ্নে অাফরোজা খান বলেন, ঢাকা একটি ব্যস্ত নগরী। এখানে প্রতি বর্গ কিলোমিটারে সাড়ে ৪৪ হাজার লোক বসবাস করেন, যাদের অধিকাংশই মধ্যবিত্ত কর্মজীবী। রাজধানীতে অধিকাংশ মানুষ ভোগেন পেটের পীড়ায়। এর অন্যতম কারণ অস্বাস্থ্যকর খাবার। বলতে পারেন, তাদের স্বাস্থ্যের কথা ভেবেই আমাদের এই উদ্যোগ `খান কিচেন`।
অাফরোজা খান এসময় বেশ কয়েকটি স্মৃতিচারণ করেন বলেন, খাদ্য অামাদের মৌলিক অধিকার। অথচ অামরা সেখানে টাকা দিয়ে অনেকে খারাপ অস্বাস্থ্যসম্মত খাবার কিনে খেতে বাধ্য হই। তেল, অতিরিক্ত মসলা, নোংরা ও বাসী খাবার অামাদের জীবনকে ঝুঁকিতে ফেলে। অামাদের দেশে হার্ট, ক্যান্সার, ডায়াবেটিস সহ নানা রোগের প্রকোপ বাড়ছে। এর জন্য অস্বাস্থ্যকর খাবার দায়ী। তাই অামি যখন ভাবলাম নিজে কিছু করব তাই প্রথমেই একটি ভালো মানসম্মত ও রুচিশীল কিচেন- এর চিন্তা মাথায় এলো। খান কিচেন এ প্রতিটি খাবার রান্না ও প্যাকেটজাত হয় মানুষের হাতের ছোঁয়া ছাড়া। তাছাড়া শেষ মুহুর্তে তেল মসল্লার মান ও পরিমাণ যাচাই অামি নিজে করি। তবে কিছু প্রতিবন্ধকতার কথাও স্বীকার করলেন, অাফরোজা খান।
তিনি বলেন, অামার এ যাত্রা এতো সহজ ছিল না। অামি প্রথম যখন এ উদ্যোগ নিই অাত্মীয় স্বজন, বন্ধু অনেকেই অাপত্তি করেছে। অামাকে বিব্রত করার চেষ্টা করেছে। এমন কাজ করার দরকার কী, চাকরি করলেই পারি এরকম মন্তব্য অনেক শুনতে হয়েছে। ব্যাংকে যখন লোনের জন্য গেলাম ব্যাংক প্রথমে পাত্তাই দিল না। নারী উদ্যোক্তা হবে এমন কথা শুনতে অামাদের সমাজে এখনো অনেকে অভ্যস্ত না। তারা প্রথমদিকে অামাকে পদে পদে হয়রানি করেছে। তবে হ্যাঁ, ওরা অামার প্রথমদিকে অায়োজন দেখে ভড়কে গিয়েছিল। তারা বুঝেছিল অামি পারব।
একুশে টেলিভিশন অনলাইনের পাঠকদের উদ্দেশ্যে অাফরোজা খান বলেন, সব মেয়েদের উচিৎ, চাকরির পেছনে না ছুটে নিজে কিছু করার উদ্যোগ নেওয়া। অামরা নিজেরা কর্মসংস্থান সৃষ্টি করব- এমন মানসিকতা অামাদের সবার থাকা উচিৎ। অাজরোজা খানের এমন চিন্তা সব তরুণদের মাঝে ছড়িয়ে পড়ুক এটাই প্রত্যাশা।
এসএইচ/
আরও পড়ুন