একসঙ্গে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ক্যাডেটদের
প্রকাশিত : ১৬:৪৩, ২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮
‘একসাথে উন্নতির দিকে’ এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় নিয়ে আয়োজিত হলো ঢাকা কলেজ প্লাটুন ক্যাডেটদের প্রথম পুনর্মিলনী। বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর (বিএনসিসি) এর অন্যতম সেরা শাখা ঢাকা কলেজ প্লাটুনের এ পুনর্মিলনীতে অংশ নেয় প্রায় শতাধিক সাবেক ও বর্তমান ক্যাডেট, সামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ এবং শিক্ষক-শিক্ষিকা।
আজ শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮) সকাল ৯টায় ঢাকা কলেজ প্রাঙ্গণে শুরু হয় এ অনুষ্ঠান। দিনের শুরুতেই অনুষ্ঠানে আগত অতিথিদের গার্ড অব অনার প্রদান করে ক্যাডেটদের একটি চৌকষ দল। এরপর ‘ঢাকা কলেজ প্লাটুন এক্স ক্যাডেট অ্যাসোসিয়েশন’ এর লোগো উন্মোচন করেন অতিথিরা। এতে অংশ নেন প্লাটুন অধিনায়ক প্রফেসর আন্ডার অফিসার (পিইউও) আখতারা বানু, অনুষ্ঠানের সভাপতি মেজর মোজাম্মেল হক, বিটিএফও, লেফটেন্যান্ট হাফিজুর রহমান, পুনর্মিলনী উদযাপন কমিটির আহবায়ক এ এম এ ওহিদুজ্জামানসহ অন্যান্যরা।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পিইউও আখতারা বানু বলেন, বিএনসিসি দেশের অন্যতম সেরা ও বৃহত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। আর তাদের মধ্যে অন্যতম সেরা প্লাটুন ঢাকা কলেজ প্লাটুন। দেশ ও জাতির প্রয়োজনে স্বেচ্ছাশ্রম ভিত্তিতে কাজ করে ইতোমধ্যে তারা ব্যাপক সুনাম কুড়িয়েছে। এ ধারাকে অব্যাহত রাখতে হবে।
এসময় নবীন ক্যাডেটদেরকে সংগঠনের দীক্ষায় দেশের প্রয়োজনে সর্বদা প্রস্তুত থাকার আহবান জানান তিনি। অনুষ্ঠানের এ পর্যায়ে সংগঠনের ওয়েবসাইট এবং অ্যান্ড্রয়েড মোবাইলের জন্য একটি অ্যাপসেরও উদ্বোধন করা হয়।
প্লাটুনের সাবেক প্লাটুন অধিনায়ক মেজর মোজাম্মেল হক বলেন, “হাটি হাটি পা পা করে আজ এতদূর এসেছে ঢাকা কলেজ প্লাটুন। এখানকার ক্যাডেটেরা দেশ ও দেশের বাইরে দেশের নাম উজ্জ্বল করছে। বিদেশে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করছে। সাবেক ও বর্তমান ক্যাডেটদের এ জোট অন্যান্য প্লাটুনগুলোর জন্যও অনুকরণীয়”।
তিনি আরও বলেন, “ইংরেজিতে একটি কথা আছে। ইউনাইটেড উই স্ট্যান্ড, ডিভাইডেড উই ফল। একত্রিত থেকে কীভাবে ভাল কিছু করা যায় তা ঢাকা কলেজ প্লাটুন করে দেখিয়েছে। কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে সেবা দিয়েছে এ প্লাটুনের ক্যাডেটেরা। সামনেও তারা এভাবে কাজ করে যাবে বলে আমি আশা করি”।
অনষ্ঠানে এসে পুরনো সহক্যাডেটদের দেখা পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পরেন ক্যাডেটেরা। অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী মাহফুজ রমান দীর্ঘ ১৮ বছর পর আসেন কলেজ প্রাঙ্গণে। নিজের অনুভূতির কথা জানাতে গিয়ে বলেন, “আমি ঢাকা কলেজ প্লাটুনের ‘কর্পোরাল’ ছিলাম। ১৯৯৪ থেকে ৯৬ সাল পর্যন্ত ক্যাডেটশিপ করি আমি। দীর্ঘ ১৮ বছর পর আবার এখানে আসতে পেরে সত্যিই খুব ভাল লাগছে। যাদেরকে এখানে এসে দেখার সুযোগ হল তাদের অনেককেই আর কোন দিন সামনাসামনি দেখব বলে ভাবিনি”।
প্লাটুনের প্রথম ক্যাডেট ইনচার্জ সাবেক ক্যাডেট সার্জেন্ট আরিফুর রহমান বলেন, আমি ১৯৮৫ সালে এ প্লাটুনের ক্যাডেট ইনচার্জ হই। শুরু থেকেই বিএনসিসি’র ‘জ্ঞান, শৃংখলা, একতা’ মূল মন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। এখন নতুনরা সামনে থেকে এর নেতৃত্ব দিচ্ছে। ভাবতেও ভাল লাগছে।`
অনুষ্ঠানে সংগঠনটির সাবেক ও বর্তমান ক্যাডেটদের সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন- রমনা রেজিমেন্টের সাবেক অ্যাডজুটেন্ট মেজর সাইদ মোখলেসুর রহমান, ১নং রমনা ব্যাটালিয়ানের সাবেক অ্যাডজুটেন্ট মেজর (অব.) এহসান ইলাহী, মেজর সৈয়দ শওকত নোমানি, ১নং বিএনসিসি প্লাটুনের বর্তমান ব্যাটালিয়ান কমান্ডার মেজর সুলতান ফরিদসহ অন্যান্যরা।
প্রসঙ্গত, দ্বিতীয় সারির বাহিনী হিসেবে স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে দেশ ও জাতির প্রয়োজনে কাজ করার উদ্দেশ্য নিয়ে ১৯৭৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় বিএনসিসি। রক্তদান, বৃক্ষরোপন, বিভিন্ন সরকারি কর্মকাণ্ডে সহায়তা প্রদান, বিদেশে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রশংসনীয় অবদান রাখছে ঢাকা কলেজ প্লাটুনের ক্যাডেট সদস্যরা।
এসএইচএস /এসএইচ/
আরও পড়ুন