ঢাকা, সোমবার   ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

থাকছে ৪০ হাজার ভোটকেন্দ্র

একাদশ সংসদ নির্বাচন আয়োজনে ইসির তোড়জোর

প্রকাশিত : ১৫:৩৮, ১৭ জুলাই ২০১৮ | আপডেট: ১৫:৩৯, ১৭ জুলাই ২০১৮

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক এবং প্রভাবমুক্ত করার লক্ষ্য নিয়ে কর্মপরিকল্পনা প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন  ইসি। সংসদ নির্বাচনে সামনে রেখে মাঠ গোছাতে ব্যস্ত সময় পার করছে সাংবিধানিক এই প্রাতিষ্ঠানটি।

ইতোমধ্যে সংসদীয় আসনে ১০ কোটি ৪২ লাখ ভোটারের জন্য ৪০ হাজার ভোটকেন্দ্রের তালিকা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। ভোট কেন্দ্র স্থাপন নীতিমালা পাঠানো হয়েছে মাঠ কর্মকর্তাদের কাছে।

এছাড়া সম্ভব্য ঝুকিপূর্ণ কেন্দ্রের তালিকাও তৈরি করা হয়েছে। আপত্ত-নিষ্পত্তি শেষ করে মাঠ কর্মকর্তারা নির্বাচন কমিশনে পাঠালে এর চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে। এবিষয় জানতে চাইলে ইসির উপসচিব আব্দুল হালিম খান একুশে টিভি অনলাইনকে বলেন, গত বুধবার কমিশন ওই নীতিমালা অনুমোদন করার পর তা মাঠ কর্মকর্তাদের পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু হল। ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের চেয়ে এবার তিন ৩ হাজার ভোটকেন্দ্র বেশি লাগবে ধরে প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসি। এর মধ্যে ৬১৩টি কেন্দ্র হবে পার্বত্য এলাকায়; বাকি ৩৯ হাজার ৩৮৭টি হবে দেশের বাকি এলাকায়।

এছাড়া আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন একদিনে তিনশ’ আসনে না করে ধাপে ধাপে অনুষ্ঠানে সরকারের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তবে এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন (ইসি) কিছুই জানে না বলে জানিয়েছে।

এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার একুশে টিভি অনলাইনের কাছে কোন মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান। তবে তিনি বলেন, নির্বাচন ধাপে ধাপে করার বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও ইসির সচিব ভালো বলতে পারবেন।

ধাপে ধাপে নির্বাচনের কোনো পরিকল্পনা ইসির নেই জানিয়ে সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন,  এ নিয়ে এখনও আমাদের কোনো পরিকল্পনা নেই। আমাদের পরিকল্পনা সংবিধান। সংবিধানে যে ভাবে  উল্লেখ্য আছে সেভাবেই নির্বাচন হবে।

নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, অক্টোবরের মধ্যে ৩০০ আসনের ভোটার তালিকার সিডিও ভোটার তালিকা মুদ্রণ শেষ করার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। উপযুক্ত সময়ে’ ইসি তফসিল ঘোষণা করবে। নবম সংসদ নির্বাচন, ৮ কোটি ১০ লাখের বেশি ভোটারের জন্য ভোটকেন্দ্র ছিল ৩৫ হাজার ২৬৩টি; ভোটকক্ষ ১ লাখ ৭৭ হাজার ২৭৭টি।

দশম সংসদ নির্বাচন, ৯ কোটি ১৯ লাখ ভোটারের বিপরীতে ভোটকেন্দ্র ছিল ৩৭ হাজার ৭০৭টি। ৩০০ আসনে ভোটকক্ষ ছিল ১ লাখ ৮৯ হাজার ৭৮টি।

একাদশ সংসদ নির্বাচন, ১০ কোটি ৪২ লাখ ভোটারের বিপরীতে প্রয়োজন হবে ৪০ হাজার ভোটকেন্দ্র; ভোটকক্ষ লাগবে প্রায় ২ লাখ।

কমিশন ঘোষিত রোডম্যাপ অনুযায়ী, জুলাইয়ে নির্বাচনী এলাকাভিত্তিক খসড়া তালিকা প্রকাশ; অগাস্টে খসড়া তালিকার ওপর দাবি-আপত্তি ও নিষ্পত্তি; ভোটের ২৫ দিন আগে ইসি অনুমোদিত ভোটকেন্দ্রের গেজেট প্রকাশ এবং তফসিলের পর নিবন্ধিত দলগুলোর কাছে সেই তালিকা পাঠানোর কথা রয়েছে।

ভোটকেন্দ্র নীতিমালায় বলা হয়েছে, গড়ে ২৫০০ ভোটারের জন্য একটি করে ভোটকেন্দ্র এবং গড়ে ৬০০ পুরুষ ও ৫০০ মহিলা ভোটারের জন্য একটি করে ভোট কক্ষ নির্ধারণ করতে হবে।

এছাড়া নির্বাচনের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত ও সম্ভাব্য প্রার্থীদের নামে স্থাপিত প্রতিষ্ঠানগুলোতে পারতপক্ষে ভোটকেন্দ্র করা যাবে না।

কেন্দ্র নির্ধারণে সাধারণত যাতায়াত ও ভৌগলিক অবস্থানের সুবিধা বিবেচনা করা হয়। তবে এ নিয়ে প্রার্থীদেরও নানা রকম অভিযোগ- আপত্তি থাকে। প্রতিবারই ভোটের আগ মুহূর্তে ভোটকেন্দ্র পাল্টাতে কিছু প্রার্থীর তৎপরতা দেখা যায়। তফসিল ঘোষণার পর ভোটকেন্দ্র কোনো প্রার্থীর বাড়ির কাছে বা ‘প্রভাব বলয়ের মধ্যে’ পড়ছে বলে প্রতীয়মান হলে রিটার্নিং অফিসারের কাছে অভিযোগ করা যায়।

ইসির উপসচিব বলেন, সাধারণত আগের নির্বাচনে যেসব কেন্দ্রে ভোট হয়েছিল সেগুলো অপরিবর্তিত রাখা হয়। তবে নদীভাঙন ও দুর্যোগে ভোটকেন্দ্র বিলুপ্ত হলে নতুন ভোটকেন্দ্র ঠিক করতে হবে। কোথাও ভোটার বাড়লেও নতুন কেন্দ্র লাগে।” আসছে ৩০ জুলাই তিন সিটির ভোটের পর নির্বাচন কমিশন পুরোদমে সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতিতে নামবে বলে কর্মকর্তারা জানান।

উল্লেখ্য, আগামী ৩০ অক্টোবর থেকে ২৮ জানুয়ারির মধ্যে একাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আর অক্টোবর জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরিকল্পনা আছে বলেও জানান তিনি।

 টিআর/ এআর

 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি