ঢাকা, মঙ্গলবার   ২২ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

এনজিওপ্লাস্টি ও বাইপাস : কোনটি কখন?

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৭:২৮, ১১ জুলাই ২০২১

Ekushey Television Ltd.

এনজিওগ্রাম করে ধমনীতে ব্লকেজের পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়। তারপর রোগীর শারীরিক অবস্থা ও ব্লকেজের পরিমাণ অনুসারে এনজিওপ্লাস্টি বা বাইপাস সার্জারি করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ধমনীর যে অংশে কোলেস্টেরল জমে ব্লকেজ ও রক্ত চলাচলে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়েছে, সে জায়গাটিকে প্রসারিত করার একটি পদ্ধতি হচ্ছে এনজিওপ্লাস্টি।

এনজিওপ্লাস্টি মূলত দু-ধরনের। একটি হচ্ছে বেলুনিং অর্থাৎ ধমনীর যে জায়গায় ব্লকেজ রয়েছে, সেখানটায় ক্যাথেটারের (লম্বা সরু তার) সাহায্যে একটি বেলুন প্রবেশ করানো হয়, তারপর সে বেলুনটিকে ফুলিয়ে সেই জায়গাটিকে প্রসারিত করা হয়। ইদানীং এটি খুব কমই করা হয়ে থাকে।

দ্বিতীয়টি অর্থাৎ বর্তমানে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত পদ্ধতিটি হচ্ছে স্টেন্টিং বা রিং পরানো। এ পদ্ধতিতে আগের মতোই ক্যাথেটারের সাহায্যে বেলুন ঢুকিয়ে ধমনীর সংকুচিত অংশটিকে প্রসারিত করা হয়। তারপর একটি স্টেন্ট বা ধাতব রিং প্রবেশ করিয়ে সেটি ওখানে স্থাপন করা হয়, যাতে তা ধমনীকে প্রসারিত করে রাখে এবং রক্তপ্রবাহ   থাকে স্বাভাবিক।

কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, ধমনীর যে জায়গায় রিং পরানো হয়, পরবর্তীতে কখনো কখনো একই জায়গায় পুনরায় ব্লকেজ তৈরি হতে পারে (Re-stenosis)। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিজ্ঞানীরা ভাবলেন, যদি রিং-এর গায়ে কিছু ওষুধ লাগিয়ে দেয়া যায় তবে এই পুনঃব্লকেজ প্রতিরোধ করা যেতে পারে। এটাই মেডিকেটেড স্টেন্ট। অর্থাৎ রিং দু-ধরনের : মেডিকেটেড এবং নন-মেডিকেটেড। স্বাভাবিকভাবেই দামও ভিন্ন।

এখন প্রশ্ন, স্টেন্টিং করা হয় কাদের? এটি করা হয় সাধারণত যাদের একটি করোনারি ধমনীতে ব্লকেজের পরিমাণ ৭০-৮০% কিংবা যাদের দুটি করোনারি ধমনীতে ৫০-৬০% ব্লকেজ এবং একটিতে ৮০% ব্লকেজ, তাদের শুধু ৮০% ব‌লক্ ড ধমনীতেই স্টেন্টিং করা হয়। এ-ছাড়া যাদের বাইপাস সার্জারি করা হয়েছে কিন্তু সেই বাইপাস-রক্তনালীর ভেতরেই আবার ব্লকেজ তৈরি হয়েছে, সেটিকে প্রসারিত করার জন্যেও স্টেন্টিং করা হয়ে থাকে।

স্টেন্টিং করার পরও যাদের পুনরায় ব্লকেজ হচ্ছে কিংবা যে-সব রোগীর স্টেন্টিং করা সম্ভব নয়, তাদের পরামর্শ দেয়া হয় বাইপাস অপারেশনের। অর্থাৎ যাদের ব্লকেজের পরিমাণ বেশি—দুটো করোনারি ধমনীতেই একাধিক ব্লকেজ বা যে-কোনো একটি ধমনী থাকে পুরোপুরি বন্ধ। বাইপাস অপারেশনে ব্লকেজের স্থানটিতে কিছুই করা হয় না; বরং শরীরের অন্যত্র থেকে একটি রক্তনালী নিয়ে হৃৎপিন্ডের দুই প্রান্তে লাগিয়ে দেয়া হয়। যার মাধ্যমে বিকল্প পথে হৃৎপিন্ডের বিভিন্ন স্থানে রক্ত পৌঁছে যায়।

লেখাটি ডা. মনিরুজ্জামান ও ডা. আতাউর রহমান এর লেখা এনজিওপ্লাস্টি ও বাইপাস সার্জারি ছাড়াই ‘হৃদরোগ নিরাময় ও প্রতিরোধ’ শীর্ষক বই থেকে নেয়া। 

আরকে//


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি