ঢাকা, বুধবার   ২৭ নভেম্বর ২০২৪

এনায়েতপুরে থানার গাছ আত্মসাতের চেষ্টা 

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: 

প্রকাশিত : ১৭:৪২, ৩ মে ২০২০ | আপডেট: ০৫:২৫, ৪ মে ২০২০

করোনা ভাইরাসের সংক্রামন রোধে প্রশাসনের জারি করা লকডাউনে জনজীবন স্থবিরতার সুযোগ নিয়েছেন সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোল্লা মাসুদ পারভেজ। কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে পরিবারের জন্য পছন্দের আসবাবপত্র তৈরী করতে তিনি থানার পুকুর পাড়ের মুল্যবান একটি বড় মেহগনি গাছ গোপনে রাতের আধারে কেটে ফেলেছেন লোকজন দিয়ে। শুধু কি তাই রাতেই পাশ্ববর্তী স-মিল থেকে গাছের বেশ কিছু অংশ চেরাই করেছেন। তবে কাটা গাছের একটি মুল অংশ ও অন্যান্য ডালপালা সরাতে না পারায় সেখানেই পড়ে আছে। এদিকে ওসি মোল্লা মাসুদ পারভেজ গাছটি আত্মসাৎ করতে সাবধানতা অবলম্বন করলেও তা জানাজানি হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে পুলিশ বিভাগ তদন্ত করছে। 

জানা যায়, ২০০১ সালের ১৪ জুলাই সিরাজগঞ্জের নির্মিত এনায়েতপুর থানা ভবনের পশ্চিম পাশে অবস্থিত একটি বড় পুকুর। পুকুরটি বছর ভেদে মাছ চাষের জন্য লিজ দিয়ে আসছে পুলিশ। অন্তত ২০/২৫ বছর আগে পুকুর পাড় জুড়ে লাগানো মুল্যাবান মেহগনি ও ইউক্যালেপটার্স গাছ গুলো বেশ সবল দেহ নিয়ে বেড়ে উঠেছে। চলমান করোনা পরিস্থিতিতে পুরো এনায়েতপুর থানা জুড়ে লকডাউনের আওতাভুক্ত। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘরের বাইরে বের না হওয়ায় অনেকটা নিরব এলাকা। সে তুলনায় থানার পুকুর পাড় আরো জনশুন্য। হঠাৎ ঝড়ে একটি বড় মুল্যবান মেহগনি গাছ একটু হেলে পড়ে। সেটার উপরেই লোলুপ দৃষ্টি পড়ে ওসির মোল্লা মাসুদ পারভেজের। তিনি গত ২৯ এপ্রিল গভীর রাতে সুযোগ বুঝে গোপনে তার দালাল মুজাম্মেল হক মুজামকে দিয়ে প্রায় ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা মুল্যের গাছটি কেটে ফেলে। পরে এর একটি অংশ রাতেই পাশের একটি সমিল থেকে চেরাই করা হয়। ৩০ এপ্রিল সকালে মুজাম ওসির বাসায় ভ্যান যোগে নিয়ে আসে কাঠ গুলো বলে জানিয়েছে নাম প্রকাশে অনিচ্ছক পুলিশ সদস্যরা। তারা জানান, বাকি বড় গুড়িটি সরাতে না পারায় তা পুকুর পাড়ে ফেলে রাখা হয়েছে। এছাড়া আরো কিছু গুড়ি থানার ভিতরে নিরাপত্তা প্রাচীর ঘেষে রাখা হয়েছে। 

সুত্রটি অভিযোগ করে জানান, করোনা লকডাউনের সুযোগে এভাবে থানা পুলিশের বড় কর্তা থানার গাছ কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে কাটবে তা কখনো ভাবিনি। বিষয়টি পরে খবর পেয়ে একজন সহকারী পুলিশ সুপার তদন্ত করছেন। 

এদিকে গত বছরের ১০ নভেম্বর মোল্লা মাসুদ পারভেজ এনায়েতপুর থানায় যোগদানের পর নানা অনিয়ম দুর্নীতির সাথে জড়িত। থানা এলাকায় যে কয়েকটি আলোচিত সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের ঘটনা ঘটেছে তার যথাযথ পদক্ষেপ নিতে ব্যার্থ হয়েছেন তিনি। থানাকে বানিয়েছেন গ্রাম্য সালিশের নামে দোষী-নির্দোষী উভয় পক্ষের কাছ থেকে টাকা আদায়ের আড্ডা খানা। এছাড়া আসামী ধরে এনে টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেয়া তার নিয়মিত কাজ বলে অভিযোগ রয়েছে। সবিশেষ থানার গাছের লোভও সামলাতে না পেরে তা আত্মসাৎ এর চেষ্টা করে ধরা খেয়েছেন। 

এ ব্যাপারে এনায়েতপুর থানার ওসি মোল্লা মাসুদ পারভেজ জানান, গাছটি ঝড়ে পড়েছিল বলে তা কাটা হয়েছে। 

এদিকে বিষয়টি জানতে পেরে পুলিশ সুপারের নির্দেশে একজন সহকারী পুলিশ সুপার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ ব্যাপারে সিরাজগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. হাসিবুল আলম বিপিএম জানান, গাছটি কাটার ঘটনা ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে। দু-এক দিনের মধ্যে তা উদ্ধার করে আনা হবে। 

আরকে//


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি