এবার আসিফ প্রসঙ্গে মুখ খুললেন ন্যান্সি
প্রকাশিত : ১২:২০, ১১ জুন ২০১৮
কণ্ঠশিল্পী আসিফ আকবরের ফেসবুক লাইভ, এরপর সংগীতশিল্পী শফিক তুহিনের মামলা, তারপর কারাগারে আসিফ, কয়েকদিন কারাগারে থেকে অবশেষে জামিন। পুরো বিষয়টি নিয়ে সংগীতাঙ্গন বেশ উত্তপ্ত। দ্বন্দ্বের সূত্রপাত হয়েছিল বিভিন্ন শিল্পীর গাওয়া ৬১৭টি গান নিয়ে। যেটি সবার সামনে সবার আগে প্রথম তুলে আনেন সংগীতশিল্পী প্রীতম আহমেদ। তথ্য মতে, যেগুলো ‘অন বিহাফ’ সিগনেচার করে আসিফ আকবর একাই বিক্রি করেছেন বিভিন্ন মুঠোফোন প্রতিষ্ঠানে। যে তালিকায় শফিক তুহিনের গানও রয়েছে। রয়েছে কণ্ঠশিল্পী ন্যান্সির গাওয়া ১২টি গানও।
চলমান বিতর্ক নিয়ে এবার মুখ খুললেন জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী ন্যান্সি। জানালেন, আসিফ আকবরের বিরুদ্ধে তারও অভিযোগ রয়েছে। তবে সেই অভিযোগ বা প্রতিবাদ অর্থনৈতিক নয়, নৈতিক।
বিষয়টি নিয়ে ন্যান্সি বলেন, ‘আমি ফেসবুক লাইভটি সরাসরি দেখিনি। পরে একজন শিল্পী আমাকে উনার লাইভে আসার বিষয়টি জানায়। সেখানে শিল্পীদের নিয়ে তিনি (আসিফ) বেশ আপত্তিকর কথা বলেছেন। আমি তো ভেবেছিলাম আমাকে নিয়েও বলবেন। তবে তিনি তা করেননি। সেটাই অবাক হলাম। আর আমার সঙ্গে তার দ্বন্দ্ব তেমন কিছু নয়। একটি অ্যালবামকে ঘিরে। এটা ছিল ‘ঝগড়ার গান’ অ্যালবাম। এটি একটি দ্বৈত অ্যালবাম। সেখানে আমি ছাড়াও অনেকে কাজ করেছেন। গান লিখেছিলেন কবির বকুল, রাজীব আহমেদ। সুর করেছিলেন মনোয়ার হোসেন টুটুল। এখানে অন্যদের মতো আমিও ২৫ শতাংশ মালিক। সে হিসেবেই কাজটি করা। পরবর্তীতে কোনও টাকা পয়সা আমি পাইনি। যেহেতু আমি কোনও ইউনিটি নিয়ে চলি না, আমাদের তেমন কোনও বন্ধুবান্ধব নাই। তাই আগ বাড়িয়ে আর বিরোধে যাইনি। প্রথমে তিনি (আসিফ) ২৫ পার্সেন্ট মালিকানার কথা বলেছেন, কিন্তু পরবর্তীতে তিনি তার কথায় থাকেননি। শেষ পর্যন্ত আমি টাকা পয়সার কিছু দেখিনি।
পরবর্তী সময়ে তিনি যখন আবারও অ্যালবামের কথা বলেন, আমি তখন সোজা ‘না’ করে দিই। তখন তিনি আমাকে বললেন, তাহলে পার্সেন্টেজের হিসাব বাদ, এককালীন হলে কত নিবে?
তখনও বললাম যে আমি অ্যালবাম করবো না। কারণ, যে লোকটার প্রথম লেনদেনই ভালো নয়, তার সঙ্গে এককালীনই কী আর ‘দশকালীনই’ কী!
তখন আমার বিরুদ্ধে অনেক কথাই আসিফ ভাই বলেছেন। এরমধ্যে একজন আমাকে বললেন, আসিফ ভাই নাকি আমাকে গুলি করবেন! বিষয়টি আমি গুরুত্ব দিতে চাইনি। তবে সবার কথায় এটা বুঝেছি, আসিফ ভাই আমার বিষয়ে ক্ষুব্ধ।
১২টা গান দিয়েছিলাম, সেখানে সবই ছিল দ্বৈত। তবে একটি একক গান শ্রোতারা শুনেছেন। কিন্তু সে গানটি যে অ্যালবামে রাখা হবে তা আমার জানা ছিল না। বা আমার অনুমতিও তিনি নেননি। আরও একটি বিষয়, পরবর্তী সময়ে জানতে পারি তিনি (আসিফ) ‘অন বিহাফ’ লিখে গানগুলো বিক্রি করে দিয়েছেন! ‘অন বিহাফ’ দেওয়া সিগনেচার আর মালিকানা তো এক নয়। আমার পক্ষেও যদি কেউ সিগনেচার করে, তার মানে সে সব টাকা নিয়ে নিতে পারে না। আর এই ‘অন বিহাফের’ বিষয়টিও আমি জানতাম না। আমাকে অগোচরে রেখেই আসিফ ভাই এটা করেছেন। এটা অন্যায়।
তিনি আরও বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে কেউ জানতে চায়নি। শুধু একটি পত্রিকা (আমাদের সময়) জানতে চায়, আমি তখন তাদের বিস্তারিত বলি। কিন্তু পরবর্তী সময়ে দেখেছি, পত্রিকাটি তাদের অনলাইন থেকে নিউজটি নামিয়ে রেখেছে। কেন এটা করল, আমি জানি না।’
ন্যান্সি বলেন, ‘বিনা টাকায় অনেক শিল্পীই গান করেন। আমিও করেছি। আজ যে সমস্যা প্রীতম আহমেদ ও শফিক তুহিন ভাই সামনে এনেছেন, এটা যদি আসিফ ভাই সরাসরি তাদের বলতেন, সব সমাধান হতো। তাহলে হয়তো প্রীতম আহমেদ ও শফিক তুহিন মামলা থেকে সরে আসতেন। আমার তো মনে হয় আমাদের শিল্পীদের এই মানসিকতা এখনও আছে। আমি যতটা অর্থনৈতিক কারণে কষ্ট পেয়েছি, তারচেয়ে কষ্ট হয়েছে নৈতিক অস্পষ্টতা নিয়ে। শিল্পী আসিফ আকবরের বিরুদ্ধে আমার প্রতিবাদটি অর্থনৈতিক নয়, নৈতিক!’
এসএ/