এবার দুর্গার আগমন-গমন ঘোড়ায়, কী প্রভাব পড়বে?
প্রকাশিত : ১৫:৪০, ৩ অক্টোবর ২০১৯ | আপডেট: ১৫:৪১, ৩ অক্টোবর ২০১৯
হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের প্রাণের উৎসব দুর্গাপূজা। খাতায় কলমে আজ বৃহস্পতিবার থেকে শুরু শারদীয় এই দুর্গোৎসবের। এদিনই মহাপঞ্চমী। দেবীর বোধন। আগামীকাল শুক্রবার মহাষষ্ঠী। দশমীতে দুর্গা বিসর্জন।
হিন্দুরা বিশ্বাস করেন, দুর্গতি বিনাশ করার জন্য তার আবির্ভাব, তাই দেবীর নামকরণ ‘দুর্গা’। আজ মন্দিরে মন্দিরে ঠাঁই দেওয়া হবে ঠাকুরকে। রাতের মধ্যে সাজসজ্জা, লাইটিং করা হবে। দুর্গোৎসবের প্রাক্কালে এই বোধনের মাধ্যমে দক্ষিণায়নের নিদ্রিত দেবীর নিদ্রা ভাঙার জন্য বন্দনা পূজা করা হবে।
যাইহোক, হিন্দুদের প্রাণের এই উৎসবের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে এ বছর মা দুর্গা আসছেন ঘোড়ায়। ঘোড়ায় আগমন হলে তার ফল কী?
দেবী দুর্গার সর্বক্ষণের বাহন সিংহ। কিন্তু প্রতি বছর কৈলাসে বাপের বাড়ি আগমনের সময়ে তিনি আলাদা আলাদা বাহন ব্যবহার করে থাকেন। হিন্দু শাস্ত্রানুসারে দেবীর এক একটি বাহন মানবসমাজের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে এক এক রকমের ইঙ্গিত দেয়।
৪টি আলাদা বাহনে গমনাগমন ঘটে থাকে দেবীর- অশ্ব, হস্তী, নৌকা এবং দোলা। সাধারণত একটি বাহনে দেবীর আগমন এবং অন্য একটি বাহনে তার গমন ঘটে। কিন্তু যে বছর একই বাহনে তার আগমন এবং গমন ঘটে সেই বছর মানবসমাজে বিশেষ অঘটন ঘটার আশঙ্কা থাকে বলে মনে করা হয়। এ বছরও কি তবে সে রকমই কিছু ঘটতে চলেছে? তার আগে চলুন জেনে নেওয়া যাক, দেবীর কোন বাহন কোন প্রতীকী অর্থ বহন করে-
হস্তী
অত্যন্ত শুভ প্রতীক। যে বছর হস্তীতে আগমন হয় দেবীর সেই বছর তার আশীর্বাদে মানবজীবন সুখ ও সমৃদ্ধিতে পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে।
নৌকা
নৌকায় যে বছর আসেন দেবী, সেই বছর বন্যার পাশাপাশি কৃষি-সমৃদ্ধিও দেখা দেয়।
দোলা
মহামারীর প্রতীক। বিশ্বাস অনুযায়ী, দোলায় যে বছর আসেন দেবী, সেই বছর মানুষ যদি একে অন্যের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়, তাহলেই একমাত্র এই মহামারীকে রোখা সম্ভব।
অশ্ব বা তুরঙ্গ
দেবীর অশ্ব বা তুরঙ্গে আগমন এক ঘোরতর সর্বনাশের ইঙ্গিত দেয়।
তাহলে এবারও কি সেরকম সর্বনাশের ইঙ্গত দিচ্ছে? প্রতিবারই কোনও না কোনও বাহনে মর্ত্যে আগমন ও মর্ত্য থেকে গমন হয় মা দুর্গার। এমনই মত শাস্ত্রজ্ঞদের। আর ঐতিহ্য পরম্পরা মেনে সেই বাহনের বিচারে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয় যে মায়ের গমন ও আগমনে কী ফল উঠে আসতে চলেছে।
ঘোড়ায় মায়ের আগমন মানেই হল ফল ছত্রভঙ্গ। তাতে সমস্ত কিছু ওলট পালট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। পণ্ডিতদের দাবি, এই ঘোড়ায় আগমন শুভ নয়।
আর মায়ের গমন ৮ অক্টোবর বিজয়া দশমী। মায়ের গমনও এবার ঘোটকে, অর্থাৎ ঘোড়ায়। ঘোড়ায় এই গমন মোটেও ভালো ফল নয় বলে দাবি শাস্ত্রজ্ঞদের। এতে সামাজিক অস্থিরতা ও সাংসারিক সমস্যা বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
কিন্তু কীভাবে এই দুর্যোগ এড়ানো যেতে পারে? শাস্ত্রজ্ঞরা বলছেন, ভক্ত্যবনত চিত্তে দুর্গাপূজা করাই দুর্যোগ এড়ানোর একমাত্র উপায়। পাশাপাশি ‘দিনশশী সূর্য গজারূঢ় শনিভৌমে তুরঙ্গমে’ ইত্যাদি মন্ত্রজপের মাধ্যমেও কমানো যেতে পারে আসন্ন দুর্যোগের তীব্রতা।