ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪

এবিএম মূসা ও সেতারা মূসার জন্মবার্ষিকী আজ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:০২, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

প্রখ্যাত সাংবাদিক ও কলমিস্ট এবিএম মূসার ৯৩তম ও বাংলাদেশ নারী সাংবাদিকতার অন্যতম অগ্রদূত সেতারা মূসার ৮৪তম জন্মবার্ষিকী আজ ২৮ ফেব্রুয়ারি।

এবিএম মূসা ১৯৩১ সালে তার নানার বাড়ি ফেনী জেলার ধর্মপুর গ্রামে জন্ম নেন এবং ২০১৪ সালের ৯ এপ্রিল চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। এবিএম মূসা দীর্ঘ ৬৪ বছর ধরে সাংবাদিকতার বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রেখেছেন। ১৯৫০ সালে দৈনিক ইনসাফ থেকে তার সাংবাদিকতার জীবন শুরু হয়। ঐ বছরে তিনি ইংরেজি দৈনিক পাকিস্তান অবজারভারে যোগ দেন।

১৯৭১ সাল পর্যন্ত তিনি পাকিস্তান অবজারভারে রিপোর্টার, স্পোর্টস রিপোর্টার, বার্তা সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনের সময় তৎকালিন পাকিস্তান সরকার পাকিস্তান অবজারভার বন্ধ করে দিলে তিনি সংবাদে যোগ দেন। ১৯৫৪ সালে তিনি অবজারভারে ফিরে আসেন। ১৯৭১ সালে যুদ্ধের সময় বিবিসি, সানডে টাইমস প্রভৃতি পত্রিকার সংবাদদাতা হিসাবে তিনি রণাঙ্গন থেকে সংবাদ প্রেরণ করতেন। 

স্বাধীনতার পর তিনি বিটিভির মহাব্যবস্থাপক, মর্নিং নিউজের সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭৮ সালে এবিএম মূসা ব্যাংককে অবস্থিত জাতিসংঘের পরিবেশ কার্যক্রমের (এসকাপ) এশিয়া প্যাসেফিক অঞ্চলে আঞ্চলিক পরিচালক পদে যোগ দেন। দেশে ফিরে এসে ১৯৮১ থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ প্রেস  ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক এবং ১৯৮৫ থেকে ১৯৮৭ সাল পর্যন্ত বংলাদেশ সংবাদ সংস্থার মহাব্যবস্থাপক ও প্রধান সম্পাদক ছিলেন। 

২০০৪ সালে তিনি কিছুদিন দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। এবিএম মূসা জাতীয় প্রেস ক্লাবের চারবার সভাপতি এবং তিনবার সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি পাকিস্তান সাংবাদিক ইউনিয়নের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা এবং পূর্ব পাকিস্তান সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। 

এবিএম মূসা একুশে পদকসহ দেশী-বিদেশী নানা পুরস্কারে ভুষিত হয়েছেন। জীবনের শেষদিনগুলোতে একজন দর্শক প্রিয় আলোচক এবং সংবাদ বিশ্লেষক হিসাবে বিভিন্ন টিভি চ্যানেলের  অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে গেছেন তিনি। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থ ‘মুজিব ভাই’ ও ‘আমার বেলা যে যায়’।

সেতারা মূসার জন্ম ১৯৪০ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লার লাকসামের নানার বাড়িতে। ১৯৪৭ সালের দেশভাগের পর কলকাতা থেকে তিনি স্বপরিবারে ঢাকায় চলে আসেন। প্রথমে নারী শিক্ষা মন্দির ও পরে কামরুন্নেসা স্কুলে পড়াশোনা করেন। নবম শ্রেণীতে পড়া অবস্থায় এবিএম মূসার সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি। 

পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে মাস্টার্স ডিগ্রী অর্জন করেন। এরপর দৈনিক পূর্বদেশ-এর নারী পাতার দায়িত্ব পালন করেন। এর পাশাপাশি তিনি রেডিও এবং টিভিতে ছোট একাঙ্কিকা লিখতেন, অংশ নিতেন নানা অনুষ্ঠানে। এরপর তিনি দৈনিক জনতায় নারী পাতাসহ আরও কিছু দৈনিক ও সাপ্তাহিককে কাজ করেন। 

সাংবাদিকতার পাশাপাশি তিনি সমাজ সেবামূলক কাজও করেন। সেতারা মূসা রেডক্রিসেন্ট, বাংলাদেশ পরিবার পরিকল্পনা সমিতি, বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সমিতি, সুরভি সঙ্গীত একাডেমী ও গার্লস গাইডসহ অসংখ্য সংগঠনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। নিজ উদ্যোগে পাড়ার মহিলাদের নিয়ে গড়ে তোলেন সুরুচি সংসদ। 

এ সমিতির মাধ্যমে পথশিশুদের জন্য বিনা বেতনে একটি স্কুল পরিচালনা করতেন। ২০২৩ সালে ১৪ মার্চ ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এবিএম মূসা-সেতারা মূসা ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে আজীবন সম্মাননা প্রদান ও স্মারক বক্তৃতা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। দৈনিক আজাদীর সম্পাদক এম এ মালেককে এ অনুষ্ঠানে আজীবন সম্মাননা প্রদান করা হবে। 

‘গণমাধ্যমে জেন্ডার পরিসর: নারীর নির্মিত এবং নারীর অংশগ্রহণ’ শীর্ষক স্মারক বক্তৃতা উপস্থাপনা করবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. কাবেরী গায়েন। উক্ত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন দৈনিক আজকের পত্রিকার সম্পাদক ড. গোলাম রহমান।

এএইচ


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি