কক্সবাজারের সৈকতে সাড়ে ৩ লাখ পর্যটকের সমাগম
প্রকাশিত : ০৯:৫৩, ২৪ ডিসেম্বর ২০২২
তিনদিনের ছুটি পেয়ে সাড়ে তিন লাখের বেশি পর্যটকের সমাগম হয়েছে কক্সবাজারে। এতে করে হোটেল-মোটেল ও রিসোর্টগুলোতে কোন ধরণের রুম খালি না থাকায় সৈকতের বালিয়াড়িতে কেউ কেউ রাত যাপন করেছেন।
শুক্রবার ও শনিবার সরকারি সাপ্তাহিক ছুটি। এর সঙ্গে বড়দিন উপলক্ষ্যে রোববার ছুটি থাকায় টানা তিনদিনের ছুটি পেয়ে কক্সবাজার সৈকতে ভ্রমণে এসেছেন এসব পর্যটক।
তবে সব ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ট্যুরিস্ট পুলিশ ও কক্সবাজার জেলা প্রশাসন সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের কলাতলী, সুগন্ধা ও লাবণী পয়েন্ট ঘুরে দেখা যায়, লাখ পর্যটক সৈকতের বালিয়াড়িতে দৌঁড়ঝাপ করছেন, কেউ সমুদ্রস্নানে ব্যস্ত। যে যার মত করে আনন্দে মেতেছেন।
শুধু কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত নয়, পর্যটকরা ঘুরে বেড়াচ্ছেন প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন, পাথুরে সৈকত ইনানী, হিমছড়ি ও রামু বৌদ্ধ মন্দির, মহেশখালী আদিনাথ মন্দিরেও।
হোটেল মালিক ও পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, সাপ্তাহিক ছুটি মিলিয়ে টানা তিনদিন সরকারি ছুটি শুরু হয়েছে। তাই, শুক্রবার সকাল থেকেই পর্যটকরা কক্সবাজারমুখী হয়েছে। ইতিমধ্যে সব ধরণের হোটেল-মোটেল রুম বুকিং বন্ধ রয়েছে।
হোটেলের কক্ষ পেতে লাগেজ নিয়ে এক হোটেল থেকে অন্য হোটেলে ছোটাছুটি করতেও দেখা যায় বেশকিছু পর্যটককে।
ঢাকা থেকে আগত পর্যটক জোবাইদা হোসেন বলেন, পরীক্ষা শেষে নিরিবিলি প্রকৃতির সঙ্গে সময় পার করতে কক্সবাজার চলে আসছি। রুম পেতে একটু কষ্ট হয়েছে। তবে সমুদ্রে এসে গোসল করতে পেরে সব কষ্ট ভুলে গেছি।
হোটেলে রুম না পেলে সৈকতের বালিয়াড়িতে রাত কাটানোর কথা জানিয়ে ঢাকা মিরপুর থেকে স্বপরিবারে আগত পর্যটক পারভেজ আলম বলেন, বছরের শেষে ছুটি কাটাতে কক্সবাজার এসেছি। আসার সময় রুম বুকিং দেইনি। এখানে এসে রুম না পেয়ে একটু কষ্ট হচ্ছে।
কক্সবাজার সৈকতে দায়িত্বরত লাইফগার্ড কর্মী রুবেল জানান, সৈকতে বিপুল পর্যটক সমাগমের কারণে চাপ পড়েছে আমাদের উপর। লাইফগার্ড থেকে শুরু করে স্থানীয় প্রশাসন খুব সতর্ক। তাই, সৈকতে যাতে অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সে ব্যাপারে সজাগ দৃষ্টি রাখা হয়েছে।
হোটেল দি প্রেসিডেন্ট ম্যানেজার মোহাম্মদ ফয়েজ বলেন, ডিসেম্বরে পর্যটক মৌসুম শুরু হলেও প্রথম দিকে পর্যটকের তেমন সাড়া পাইনি। তবে টানা তিনদিনের ছুটিতে হোটেলে শতভাগ বুকিং হয়েছে। এতে আমরা ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবো।
ট্যুর অপারেটর এসোসিয়েশন অব কক্সবাজার (টুয়াক) সভাপতি আনোয়ার কামাল বলেন, কিছুদিন ধরে আমাদের ব্যবসা মন্দা যাচ্ছিল। এতে হতাশায় ভুগে পর্যটক ব্যবসায়ীরা। টানা তিনদিনের ছুটিতে পুরো কক্সবাজারে সব হোটেল বুকিং হয়েছে। অনেক পর্যটক রুমের জন্য কল দিচ্ছে তারপরও আমরা তাদের রুম দিতে পারছি না।
কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার রিজিয়নের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেলোয়ার বলেন, টানা তিন দিনের ছুটিতে কয়েকলাখ পর্যটকের সমাগম হতে পারে। তাই আমাদের ট্যুরিস্ট পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে। পর্যটকদের নিরাপত্তায় আমরা সবসময়ই সজাগ আছি।
পর্যটন মৌসুমে বিনোদন প্রেমীদের চাপ বাড়ায় প্রতিটি স্পটে সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করছে বলে জানান কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (পর্যটন সেল) মো: মাসুম বিল্লাহ। তিনি জানান, সরকারি ছুটিতে কক্সবাজারে বর্তমানে সাড়ে তিন লাখ পর্যটক অবস্থান করছে। তাই এসব পর্যটকের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন সব ধরণের ব্যবস্থা হাতে নিয়েছে।
এদিকে, কক্সবাজারে বিপুল পর্যটক আগমনের সুযোগে কিছু কিছু হোটেল মালিক, রেস্টুরেন্ট ও পরিবহন মালিকরা পর্যটকদের কাছ থেকে নানা অজুহাতে বাড়তি টাকা নিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
অবশ্য, এসব অভিযোগের বিষয়ে দায়িত্বরত প্রশাসনের কাছে কেউ সুনির্দিষ্ট অভিযোগ করেননি বলে জানা গেছে।
এএইচ
আরও পড়ুন