ঢাকা, শুক্রবার   ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

কন্যা সন্তান জন্ম দেওয়ায় কটাক্ষ, তিন মেয়েসহ  ‘গ্যাস ট্যাবলেট’ খেয়

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৮:৪৬, ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

নাটোরে পরপর তিন কন্যা সন্তান জন্ম দেওয়ায় শাশুড়ি ও স্বামীর কটাক্ষ সহ্য করতে না পেরে এক নারী নিজে বিষাক্ত গ্যাস ট্যাবলেট (একপ্রকার কীটনাশক) খাওয়ার পর তিন মেয়েকেও খাওয়ানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) মধ্যরাতে সিংড়া উপজেলার ডাহিয়া ইউনিয়নের দুর্গম বড়গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকে মুরাদ হোসেন পলাতক।

এই ঘটনায় শারমিন বেগম (৩২) নামের ওই নারীর মৃত্যু হয়েছে। অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে যমজ দুজনসহ তিন বোনকে। 

জানা গেছে, মৃত শারমিন বেগম বড়গ্রামের মুরাদ হোসেনের স্ত্রী। তাদের অসুস্থ মেয়েরা হচ্ছে জিম খাতুন (৮), মিম খাতুন (৮) ও সিনহা খাতুন (৩)। তাদের বগুড়ার শহীদ জিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। 

নিহতের স্বজন ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বুধবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে শারমিন বেগম নিজে বিষাক্ত গ্যাস ট্যাবলেট সেবন করে। এর পরপরই কৃমিনাশক ট্যাবলেটের কথা বলে ঘুমন্ত তিন মেয়েকে জাগিয়ে তিনি একই ট্যাবলেট সেবন করান। কিছুক্ষণের মধ্যে সবাই অসুস্থ হতে শুরু করলে স্বজনেরা তাদের প্রথমে সিংড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। তবে পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় তাৎক্ষণিক তাদের বগুড়ার শহীদ জিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই শারমিন বেগম অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যে মারা যান। পরে অসুস্থ তিন মেয়েকে ওই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত তারা চিকিৎসাধীন ছিল।

মারা যাওয়া শারমিনের বাবা আবদুল ছালাম বলেন, বিয়ের পর থেকে শারমিনকে নির্যাতন করতেন স্বামী মুরাদ হোসেন। কিছুদিন বিদেশে থাকার পর তিনি দেশে ফিরে আসেন। ইতিমধ্যে শারমিনের তিনটি মেয়েসন্তান জন্ম নেওয়ায় স্বামীসহ শ্বশুরড়াবির লোকজন গালমন্দ করতেন। সারাক্ষণ কটাক্ষের মধ্যে তাকে বসবাস করতে হতো।

তিনি আরও বলেন, মেয়ের দুই যমজ মেয়ের একটা (জিম) আমার কাছে থাকত। বুধবার আমি তাকে ওর বাবা–মার কাছে রেখে আসি। এরপর রাতেই গ্যাস ট্যাবলেট খাওয়ার ঘটনা ঘটে।

সিংড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোজাহেদুল ইসলাম জানান, রাতে অসুস্থদের হাসপাতালে যখন আনা হয়েছিল, তখন তাদের অবস্থা খারাপ ছিল। তাই তাৎক্ষণিক তাদের বগুড়া বা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল।

এ ব্যাপারে থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সিংড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসমাউল হক।

এসএস//


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি