কমলাপুরে বাথরুমে ভারতীয় নারীর সন্তান প্রসব
প্রকাশিত : ১১:৩৫, ২০ জুন ২০১৮
কমলাপুর রেলওয়ে থানার বাথরুমে সন্তান প্রসব করেছে রোকসানা আক্তার (৩০) নামে এক ভারতীয়। সোমবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে ছেলে সন্তানের জন্ম দেন ওই নারী। মা-ছেলেকে উদ্ধার করে প্রথমে মুগদা জেনারেল হাসপাতাল এরপর ঢামেকে ভর্তি করা হয়। রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়াসিন ফারুক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
ওসি ইয়াসিন ফারুক বলেন, সোমবার রাতে নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকার কমলাপুরে আসছিলেন রোকসানা। পথে গেন্ডারিয়া স্টেশনে ব্যথা অনুভব করেন। তার সঙ্গে কেউ ছিল না। কমলাপুর স্টেশনে এলে ট্রেন কর্তৃপক্ষ রোকসানাকে ঢাকা রেলওয়ে থানা পুলিশের কাছে বুঝিয়ে দেন। থানায় আসার পর রোকসানা বাথরুমে যেতে চান। বাথরুমে গিয়ে তিনি বেশ কিছুটা সময় নেন। পরে বাথরুম থেকে পুলিশ সদস্যরা বাচ্চার কান্নার আওয়াজ শুনতে পান। বাথরুমের দরজা খুললে রোকসানাসহ তার সন্তানকে উদ্ধার করা হয়।
ওসি জানান, রোকসানা ভারতীয় নাগরিক। তার স্বামীর নাম আবদুল। তিনি বাংলাদেশি নাগরিক। রোকসানা বাংলায় কথা বলতে পারেন না।
ওসি আরও বলেন, বিষয়টি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। সুস্থ হওয়ার পর মা ও ছেলেকে পুলিশের নিরাপত্তা হেফাজতে রাখা হবে। এরপর সরকারিভাবে ভারতে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে বলে জানান তিনি।
এদিকে, ঢামেকে ভর্তির সংবাদ শুনে মঙ্গলবার দুপুরে প্রসূতি ও নবজাতককে দেখতে আসেন হাসপাতালের উপপরিচালক শাহ আলম তালুকদার। জানতে চাইলে তিনি বলেন, সন্তান ও মা দুই জনই ভালো আছে। মা আছেন গাইনি ওয়ার্ডে। শিশুটিকে নবজাতক ইউনিটে রাখা হয়েছে।
জানা গেছে, রোকসানার বাবার নাম রাসুল এবং মায়ের নাম খারুন্নেসা। তাদের গ্রামের বাড়ি ভারতের মাইসুর জেলার বেঙ্গল থানা এলাকায়। এক সপ্তাহ আগে সন্তানসম্ভবা স্ত্রী রোখসানা আক্তারকে নিয়ে ভারত থেকে দেশে ফেরেন আবদুল। ছয় দিন ঢাকায় থাকার পর সোমবার সকালে স্ত্রীকে নারায়ণগঞ্জে নিয়ে যান তিনি। ওই দিন রাত সাড়ে ১০টার দিকে স্ত্রীকে নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকাগামী ট্রেনে উঠিয়ে দিয়ে পালিয়ে যান। ট্রেনের মধ্যে প্রসব বেদনা ওঠে রোখসানার। ট্রেনের অন্য যাত্রীদের সহায়তায় কমলাপুর রেলস্টেশনের নারায়ণগঞ্জ প্লাটফর্মে নামেন। প্রসব বেদনা আরও তীব্র হয়। লোকজন তাকে নিয়ে যায় কমলাপুর রেলওয়ে থানায়। পরে থানার বাথরুমে ছেলে সন্তান জন্ম দেন ভারতের এই নাগরিক। স্বামী আবদুল তাকে ফেলে পালিয়ে যাওয়ায় সদ্য ভূমিষ্ঠ সন্তান নিয়ে বিপাকে পড়েন তিনি। তবে অসহায় এই নারী ও সন্তানের পাশে দাঁড়িয়েছে ঢাকা (কমলাপুর) রেলওয়ে থানা পুলিশ। সন্তানসহ তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশ পাহারায় সেখানে মা-ছেলের চিকিৎসা চলছে। তাদের শারীরিক অবস্থা উন্নতির দিকে। কিন্তু তার স্বামীর বাড়ির ঠিকানা তিনি সঠিকভাবে বলতে পারছেন না। কখনও বলছেন নারায়ণগঞ্জে, কখনও চাঁদপুরে। স্বামীর ফোন নম্বরও নেই তার কাছে। স্বামী তার সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। ট্রেনে তুলে দিয়ে পালিয়েছেন।
একে//
আরও পড়ুন