ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪

কলরেডি ইতিহাসের অংশ হয়ে গেলেও নেই স্বীকৃতি (ভিডিও)

আদিত্য মামুন

প্রকাশিত : ১২:২৭, ৩ এপ্রিল ২০২২

ঐতিহাসিক ৭ই মার্চে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের ভাষণে স্বাধীনতার দিক নির্দেশনা ধ্বণিত হয়েছিলো কলরেডির মাইকে। সেই থেকে স্বাধীনতা দীর্ঘ লড়াই-সংগ্রাম আর রাজনীতিতে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে যায় প্রতিষ্ঠানটি। স্মৃতিবিজড়িত ঐতিহাসিক শব্দযন্ত্র সংরক্ষণের দাবি কলরেডির বর্তমান প্রজন্মের। রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতিও চান তারা।

১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের পর থেকেই উত্তাল হতে থাকে ঢাকা। সামাজিক-সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের সাথে সাথে বাড়তে থাকে রাজনৈতিক কর্মসূচিও। তৎকালীন আরজু লাইট হাউজ পরিসর বাড়িয়ে বদলে আসে কলরেডি নামে। ৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট, ৬৬’র ৬ দফা, ৬৯’র গণঅভ্যুত্থান, ’৭০ এর নির্বাচন- সব কর্মসূচির সাথেই কলরেডি জড়িয়ে আছে।

৭ মার্চ ১৯৭১ সালে আঠারো মিনিটে মাত্র এক আঙুলে দাঁড়িয়ে যায় যে বাঙলা সেই ঐতিহাসিক, মহাকাব্যিক ভাষণও কলরেডিতেই দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। তৎকালীন শাসক গোষ্ঠির রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই সেইদিনের অনুষ্ঠান সফল করতে ভূমিকা রেখেছিল কলরেডি।

কলরেডি স্বত্ত্বাধিকারী বিশ্বনাথ ঘোষ বলেন, “তখন বঙ্গবন্ধুর কথায় মাইক্রোফোনগুলো যদি সেট না করত তাহলেই কি ৭ই মার্চের জনসভাটা হত। ৭ই মার্চের মিটিং শেষ হওয়ার আগেই আমাদের দোকানে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়।”
 
স্বাধীনতার পরও বিভিন্ন সময়ে বাঁধা-বিপত্তি পেরিয়ে কর্মসূচি চালিয়ে গেলেও শব্দযন্ত্রগুলো সংরক্ষণ হয়নি এখনও। কালক্রমে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ভাষণের স্বীকৃতিও পায় ৭ মার্চের অগ্নিঝরা মুক্তিরমন্ত্র। কলরেডি ইতিহাসের অংশ হয়ে গেলেও নেই স্বীকৃতি।

বিশ্বনাথ ঘোষ আরও বলেন, “ইতিহাসের সাক্ষী এরকম কোন স্বীকৃতি সরকার থেকে আমরা পাইনি।”

ইতিহাসের সাথে কলরেডির জড়িয়ে থাকাই একরকমের স্বীকৃতি বলে বলছেন বঙ্গবন্ধু স্মৃতি যাদুঘরের এই কিউরেটর।

বঙ্গবন্ধু স্মৃতি যাদুঘর কিউরেটর নজরুল ইসলাম খান বলেন, “মাইকগুলো সংরক্ষণের ক্ষেত্রে প্রথমে দেখতে হবে ওগুলো ওই সময়ের কেনা। মাইকগুলো সংরক্ষণের জন্য তাদেরকে আবেদন করতে হবে।”

স্বাধীনতা ও বাংলাদেশের জন্মের সাথে জড়িয়ে থাকা কলডেরির সেইসব দুর্লভ শব্দযন্ত্রগুলো সংরক্ষণে উপযুক্ত স্থানও খুঁজছে সরকার।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, “এটা কোথায় রাখলে সবচেয়ে বেশি দর্শন দেখতে পারবে এবং প্রাসঙ্গিক হবে। জাতীয় যাদুঘর আছে, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর আছে সেখানেও রাখা যেতে পারে।”

শুধু বঙ্গবন্ধু নয় বিভিন্ন সময়ে বিশ্ব নেতারাও বক্তব্য দিয়েছেন কলরেডিতেই। 

আজ অনাদারে-অবহেলায় সেসমস্ত শব্দযন্ত্র নষ্ট হবার উপক্রম। কিভাবে সংরক্ষণ হবে এই কলরেডি কর্তৃপক্ষ তা জানেন না।

এএইচ/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি