ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪

কষ্টকে কীভাবে শক্তিতে রূপান্তর করবেন?

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৭:১০, ৪ জানুয়ারি ২০২৩

জীবনে সফল মানুষরা বলেন,‘যত বড় ব্যর্থতা, তত বড় সাফল্য’। সফল মানুষদের এমন কেউ নেই যার জীবনে বহুমুখী ব্যর্থতা নেই।

বিশ্ববিখ্যাত চিত্রশিল্পী ভ্যান গগের জীবন একসময় ছিল ব্যর্থতায় ভরা। তার শিল্পকর্ম এখন কততে বিক্রি হচ্ছে? পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি দাম অর্থাৎ এক একটা শিল্পকর্ম, ছবি ১৫০ মিলিয়ন বা তার চেয়ে বেশী।

এই ভ্যান গগ কিন্তু তার জীবদ্দশায় একটা ছবিও বিক্রি করতে পারেনি এবং অনেকটা না খেয়ে মারা গেছেন। মানে অপমান, লাঞ্ছনা, অবমাননায় ভরা ছিল জীবন।

কিন্তু শিল্প থেকে তিনি বের হননি। তার নীতি থেকে তিনি বিচ্যুত হননি। ভ্যান গগের আপন বড় ভাই তাকে খুব ভালোবাসতেন। যেহেতু শিল্পকর্ম বিক্রি হচ্ছে না, তাই তার ভাই একজনকে পাঠিয়ে দিল যে, সে যেন তার একটা শিল্পকর্ম কেনে, যাতে একটা বিক্রি হলে ভ্যান গগ সান্ত্বনা পান।

যখন শিল্পকর্ম কিনল, ভ্যান গগ খুব খুশি হলেন যে, এতদিন পর একজন সমঝদার পেলাম!

তিনি জিজ্ঞেস করলেন, ‌‍‌‍আচ্ছা আপনি যে আমার পেইন্টিং কিনলেন, কী জন্যে কিনলেন? কী দেখে কিনলেন?

ওই ব্যক্তি তো পেইন্টিংয়ের কিছুই বোঝে না। বলল- ছবিটা ভালো, সুন্দর।

তো ভ্যান গগের অর্থাৎ শিল্পীর তো একটা অন্তর্দৃষ্টি থাকে। বলেন, সুন্দর, কী সুন্দর?

ভ্যান গগের জেরার মুখে সে বলল, আসলে আমি তো শিল্পকর্ম বুঝি না। আপনার ভাই আমাকে পাঠিয়েছে এটা কিনতে।

ভ্যান গগ ছবিটা রেখে দিলেন। তার টাকা তাকে ফেরত দিয়ে বলেন, তুমি আমার শিল্প বোঝো না। তুমি আমাকে দয়া করতে এসেছ? তোমার দয়ার প্রয়োজন নেই।

সেই ভ্যান গগ আজকে আমরা এখানে বসে তা আলোচনা করছি।

কষ্টকে শক্তিতে পরিণত করতে আর দুঃখ-কষ্টকে সবসময় শক্তিতে রূপান্তর করতে হয়। এবং কষ্টকে শক্তিতে রূপান্তর করার প্রক্রিয়ায় প্রবেশ করলে আপনার যেকোনো কষ্টই লাঘব হবে।

কার কষ্ট নেই? প্রত্যেকের জীবনে কষ্ট আছে। সফল সে, যে কষ্টকে শক্তিতে রূপান্তরিত করে। আর ব্যর্থ সে, যে কষ্টের বৃত্তে আটকে যায়। এই কষ্টের বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। অতীত থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।

ভবিষ্যৎ লক্ষ্যটাকে স্থির করুন এবং লক্ষ্য স্থির করে কাজ করুন। ছোট না, বড় লক্ষ্য। লক্ষ্যটা ঠিক থাকতে হবে। প্রাপ্তির আনন্দ যখন জীবনে ঘটবে, ব্যস দেখবেন যে, আপনার কোনো কষ্ট নেই।

কারণ কষ্ট দূর হতে পারে কী দিয়ে? আনন্দ দিয়ে। বঞ্চনা দূর হতে পারে প্রাপ্তি দিয়ে। হতাশা দূর হতে পারে তৃপ্তি দিয়ে। তো এজন্য কী করতে হবে? জীবনে বড় লক্ষ্য স্থির করতে হবে।

কেউ যদি বলে, তার জীবনে সে কখনো অপমানিত হয়নি, লাঞ্ছিত হয়নি, এটা ভুল। 

কিন্তু কষ্টটাকে মহামানবরা সবসময় শক্তিতে রূপান্তরিত করেছেন। আপনাদের যেকোনো কষ্ট থাকতে পারে। শক্তিতে রূপান্তরিত করেন। 

লক্ষ্য বড় করুন, লক্ষ্যের জন্য মেহনত করুন, কষ্ট থাকবে না। কষ্ট চিন্তা করার সময়ই পাবেন না তো।

কষ্ট নিয়ে চিন্তা করার সময় তারা পায়, যাদের কোনো কাজ থাকে না।  বড়-সফল মানুষরা বলেন, আমার মন তো খারাপ হওয়ার সময়ই পায় না। কখন মনটা খারাপ হবে? কারণ একটার পর একটা কাজ লাইন দিয়ে থাকে।

অতএব কাজের মধ্যে ডুবে যান; দেখবেন, আপনার কোনো কষ্ট নেই। আর লাঞ্ছনা, অবমাননা তো যেকোনো সময় হতে পারে। 

মেয়েরা হয়রানি বা অবমাননার (Abused) শিকার হলে ওটা নিয়ে মাথা ঘামাবেন না! একজন পুরুষ কি দুর্ঘটনা হলে সেটা নিয়ে মাথা ঘামায়?

তাহলে একজন নারী কেন একটা দুর্ঘটনার ঊর্ধ্বে উঠতে পারবে না? দুর্ঘটনাকে দুর্ঘটনা মনে করতে পারবে না? কারণ তার তো কোনো দোষ ছিল না।

হয়রানি কিংবা অবমানন তো তার দোষে হয় না। সে কেন লজ্জিত হবে? লজ্জিত তো সে হবে যে হয়রানি করলো।

যে হয়রানি করে তার কোনো লজ্জা নাই। যে হয়রানির শিকার হয় তার লজ্জা- এটা কখনো নয় । একটা দুর্ঘটনা, দুর্ঘটনাই।

দুর্ঘটনা ঘটলে মানুষ যেরকম নিজেকে শুশ্রূষা করে, নিজের যত্ন করে, নিজেকে আবার কর্ম উদ্দীপনা এবং কর্মক্ষম করার চেষ্টা করে, একজন নারীও সেটাই করবেন সবসময়।

এমএম/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি