কারাগার এখন মুরগির খামার!
প্রকাশিত : ১৬:০৪, ২৫ জুলাই ২০২৩
১২ দশমিক ২ একর জমির উপর আশির দশকে অত্যন্ত সুরম্য প্রাচীর বেষ্টিতে নির্মাণ করা হয় কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায় উপ-কারাগার। নির্মাণের ৪০ বছরেও নিবাস হিসেবে কোন কয়েদীর দেখা পাইনি কারাগারটি।
দীর্ঘদিন কারাগারটি অরক্ষিত অবস্থায় থাকলেও ২০১৮ সালে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের এক চিঠিতে বর্তমানে কারাগারটি নিয়ন্ত্রণ করে জেলা সমাজসেবা কার্যালয়। সেখানে সমাজসেবা কার্যালয়ের একজন স্টাফ স্ব-পরিবারে বসবাস করেন। তবে স্থানীয়দের দাবি কারাগারটি যথাযথ ব্যবহার করা হোক।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, উপ-কারাগারটির প্রবেশ পথে দেহরক্ষী থাকার কথা থাকলেও রয়েছে অরক্ষিত। মূলফটকে প্রবেশ করতেই বাম হাতে চোখে পড়বে মহিলা কয়েদীর ওয়ার্ড। একটু সামনে গেলেই পুরুষ ওয়ার্ডে। সেখানে কোন কয়েদী না থাকলেও রয়েছে কয়েকটি গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগি। পাশেই রয়েছে মুরগী পালনের ছোট একটি কক্ষ। হাঁস, মুরগী, গরু আর ছাগল পালনের খামার হিসেবেই বর্তমানে কারাগারটি ব্যবহার করছে জেলা সমাজসেবা অফিসের একজন নাইট গার্ড।
দীর্ঘদিন ধরে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে দেয়াল থেকে খসে খসে পড়ছে ইট সিমেন্ট। দরজা জানালার কাঠগুলো অনেক আগেই হারিয়ে গেছে। অফিস স্টাফদের তিন কক্ষ বিশিষ্ট কোয়ার্টারটি অনেক আগেই দখল করে নিয়েছে স্থানীয়রা।
জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, আশির দশকে সারা দেশের ১৭টি জেলায় ২৩টি উপ-কারাগার নির্মাণ করেন। তন্মেধ্যে একটি হল কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার উপ-কারাগারটি।
বর্তমানে কুষ্টিয়া রাজবাড়ি আঞ্চলিক মহাসড়কস্থ খোকসা পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডে অবস্থিত। এই উপ-কারাগারটিতে রয়েছে একটি প্রবেশ পথ, দুটি কয়েদী রাখার হলরুম, দুটি সাক্ষাৎকার কক্ষ, একটি স্টোর রুম, দুই কক্ষ বিশিষ্ট একটি অফিস রুম। তিন কক্ষ বিশিষ্ট একটি কোয়াটার। রয়েছে বেশ কয়েকটি টয়লেট।
এবিষয়ে স্থানীয় দিনমজুর মাসুদ শেখ বলেন, কারাগারটি বানানোর সময় আমি লেবারের কাজ করেছিলাম। কিন্তু আজও এটি কাজে লাগেনি। নাম প্রকাশ না করা শর্তে একজন বলেন, বহু টাকা ব্যয়ে নির্মিত কারাগারটি দিনে দিনে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। খোকসাবাসীর দাবি কারাগারটি চালু করা হোক।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিপন বিশ্বাস বলেন, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে চুক্তির মাধ্যমে হস্তান্তর করা হয়েছে। ভবিষ্যতে শিশু কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্র তৈরি করা হবে। কারাগারটি পতিত অবস্থায় রয়েছে এটি নির্মাণ হলে সরকার একটি ভালো উদ্যোগ গ্রহণ করবে বলে জানান।
উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের কর্মকর্তা হাসানুজ্জামান বলেন, বর্তমানে কারাগারটি পরিত্যক্ত অবস্থা রয়েছে । শিশু কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্র নির্মাণ করা হলে বাংলাদেশে আরও ৩টি প্রতিষ্ঠান সংযুক্ত হবে বলে জানান।
কেআই//
আরও পড়ুন