স্বর্ণ নীতিমালার গেজেট প্রকাশ
কার্যকরের সময়সীমা নিয়ে অনিশ্চয়তা
প্রকাশিত : ১২:৫৮, ১৫ নভেম্বর ২০১৮
অবশেষে স্বর্ণ নীতিমালা-২০১৮ এর গেজেট জারি করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। গত ৮ নভেম্বর মন্ত্রণালয়ের রফতানি-১ অধিশাখা থেকে এই নীতিমালা অনুমোদনের গেজেট জারি করা হয়েছে। তবে স্বর্ণ নীতিমালার গেজেট প্রকাশ করা হলেও মাঠপর্যায়ে তা কার্যকরের সময়সীমা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
স্বর্ণ বিক্রয়ে স্বচ্ছতা প্রতিষ্ঠায়ও জোর দেয়া হয় নীতিমালায়। এতে বলা হয়, স্বর্ণ, রৌপ্য, হীরকসহ অন্যান্য মূল্যবান ধাতু এবং এর অলঙ্কার বিক্রয়ের সব ক্ষেত্রে ইলেকট্রিক ক্যাশ রেজিস্টার (ইসিআর) মেশিন ব্যবহার করতে হবে। গ্রাহকের কাছ থেকে ব্যবহৃত স্বর্ণ কেনার ক্ষেত্রে বিক্রেতার জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্টের কপি ও যোগাযোগের ঠিকানা সংরক্ষণে রাখতে হবে। স্বর্ণের মান শতভাগ নিশ্চিত করতে সবাইকে বাধ্যতামূলক হলমার্ক ব্যবস্থা প্রবর্তন করতে হবে।
বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতির (বাজুস) সভাপতি গঙ্গাচরণ মালাকার বলেন, ‘গেজেট জারি হলেও তা এখনই কার্যকর হচ্ছে না। এর জন্য আরও কিছু সময় অপেক্ষা করতে হবে। কারণ স্বর্ণ নীতিমালার মূল লক্ষ্য ছিল আমদানির মাধ্যমে সমাধানের পথ খোলা। এক্ষেত্রে আমদানির সুযোগ রাখা হয়েছে। কিন্তু ভরি স্বর্ণ আমদানিতে কী পরিমাণ শুল্ক ধার্য হবে- তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে এ নিয়ে বৈঠক হয়েছে। সেখানে প্রতি ভরিতে সর্বোচ্চ ৮০০-১০০০ টাকা হারে শুল্ক ধার্যের কথাবার্তা হয়েছে। কিন্তু সেটিই চূড়ান্ত কিনা তা সুনির্দিষ্ট করা হয়নি। এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনও জারি হয়নি।’
অন্য একটি সূত্র বলেছে, ডিলারের মাধ্যমে স্বর্ণ আমদানির পথ খুলতে যে ধরনের গাইডলাইন দরকার সেটিও পুরোপুরি প্রস্তুত হয়নি। এসবের ঝামেলা শেষ হলেই স্বর্ণ নীতিমালা কার্যকর হতে পারে। তবে এসব দাবির সঙ্গে দ্বিমত প্রকাশ করেছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা।
তারা বলেছেন, গেজেট জারির পর থেকেই স্বর্ণ নীতিমালা কার্যকর হয়েছে। এক্ষেত্রে নীতিমালা কার্যকরে যেসব সীমাবদ্ধতা রয়েছে তা দ্রুত সময়ের মধ্যে মিটে যাবে।
এদিকে নীতিমালার গেজেট পর্যালোচনায় দেখা গেছে, স্বর্ণ আমদানির জন্য ডিলার নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক সংশ্লিষ্ট ডিলার নির্বাচনের কার্যক্রম সম্পন্ন করবে এবং প্রয়োজনীয় গাইডলাইন তৈরি করবে। আমদানিকারক ডিলার সরাসরি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান থেকে স্বর্ণ আমদানি করবে। এক্ষেত্রে ডিলার প্রতিষ্ঠানকে স্বর্ণ আমদানির জন্য বন্ড সুবিধা দেয়া হবে। তবে তাদের সব ধরনের শর্তাবলী পূরণ করে ৯০ কার্য দিবসের মধ্যে চাহিদা অনুযায়ী স্বর্ণ আমদানি করতে হবে। পরে মূসক নিবন্ধিত স্বর্ণালঙ্কার প্রস্তুত ও রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান ওই ডিলার প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় স্বর্ণ কিনবে। তারও আগে দেশে সব স্বর্ণ ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানকে তাদের দখলে থাকা স্বর্ণের প্রকৃত পরিমাণ ঘোষণা দেয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। পাশাপাশি তাদের ট্রেড লাইসেন্স, মূসক নিবন্ধন, আয়কর সনদ ও ব্যবসায়িক সনদ না থাকলে এই ব্যবসায় নিষেধাজ্ঞাও দেয়া হয়েছে। সব ধরনের অনানুষ্ঠানিক আমদানি নিরুৎসাহিত করা হবে। তবে কোনো মহিলা যাত্রী বিদেশ থেকে ব্যাগেজ রুলে নির্ধারিত পরিমাণ স্বর্ণ শরীরে পরিধান করে আনতে পারবে।
এসএ/
আরও পড়ুন