ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪

কিংবদন্তি আমজাদ হোসেনকে হারানোর চার বছর

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৫:২০, ১৪ ডিসেম্বর ২০২২

আমজাদ হোসেন। বাংলা চলচ্চিত্র অঙ্গনের একটি নিভে যাওয়া নক্ষত্র। একাধারে তিনি ছিলেন লেখক, চলচ্চিত্র পরিচালক, চিত্রনাট্যকার, সংলাপ রচয়িতা, কাহিনিকার, গীতিকার, প্রযোজক ও অভিনেতা। চলচ্চিত্রের প্রতিটি ক্ষেত্রেই তিনি প্রতিভার স্বাক্ষর রেখে গেছেন। তার হাতে নির্মিত হয়েছে বহু কালজয়ী সিনেমা। সেসবের স্বীকৃতিও পেয়েছেন দুহাত ভরে।

সেই আমজাদ হোসেন পৃথিবী ছেড়েছেন চার বছর হয়ে গেল। বুধবার তার চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী। ২০১৮ সালের ১৪ ডিসেম্বর বিকাল তিনটায় তিনি ব্যাংককে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার আগে ১৮ নভেম্বর গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় তাকে রাজধানীর ইমপালস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহায়তায় উন্নত চিকিৎসার জন্য নির্মাতাকে ব্যাংককে পাঠানো হয়। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি।

আমজাদ হোসেনের চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তাকে স্মরণ করে তার নিজ জন্মভূমি জামালপুরে এক শোক র‌্যালি অনুষ্ঠিত হয়েছে বুধবার। আমজাদ হোসেন চর্চা কেন্দ্র, জামালপুরের উদীচী, খেলাঘরসহ মোট ৭৪টি সংগঠনের অংশগ্রহণে এ শোক র‌্যালি সকাল ১০টায় জামালপুর বকুলতলা মোড় থেকে শুরু হয়ে নির্মাতা যেখানে চিরশায়িত আছেন সেই পৌর কবরস্থানে গিয়ে শেষ হয়।

এ সময় শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণের মাধ্যমে আমজাদ হোসেনের প্রতি শ্রদ্ধা জানান বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও জামালপুরের সর্বস্তরের মানুষ। দিনব্যাপী কোরানখানি, বাদ আসর মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে এসব সংগঠনের পক্ষ থেকে।

এছাড়া বুধবার আমজাদ হোসেনের সারা জীবনের কর্মস্থল এফডিসিতে চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির উদ্যোগে আমজাদ হোসেন স্মরণ সভা, মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। পাশাপাশি রাজধানীর শ্যামলী দোয়ার আয়োজন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টায় শিল্পকলা একাডেমিতে আমজাদ হোসেন স্মরণে স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হবে।

আমজাদ হোসেনের দুই ছেলে সাজ্জাদ হোসেন দোদুল ও সোহেল আরমান। তারা দুজনেই পরিচালক ও চিত্রনাট্যকার।

১৯৪২ সালের ১৪ আগস্ট জামালপুরে জন্ম নেওয়া আমজাদ হোসেন চলচ্চিত্রে এসেছিলেন অভিনয়ের মাধ্যমে। ১৯৬১ সালে ‘তোমার আমার’ নামে একটি ছবিতে তিনি অভিনয় করেন। পরবর্তীতে মনোনিবেশ করেন চিত্রনাট্য রচনা ও চলচ্চিত্র পরিচালনায়। ‘আগুন নিয়ে খেলা’, ‘জন্ম থেকে জ্বলছি’, ‘দুই ভাই’, ‘পিতা পুত্র’ ‘নয়নমনি’, ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’, ‘ভাত দে’র মতো কালজয়ী ছবিগুলো নির্মাণ করে তিনি ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছেন।

এতসব অনবদ্য সৃষ্টির জন্য বহু পুরস্কারও পেয়েছেন আমজাদ হোসেন। ১২ বার জিতেছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। এর মধ্যে আছে শ্রেষ্ঠ পরিচালক, শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকার, শ্রেষ্ঠ গীতিকার, শ্রেষ্ঠ সংলাপ রচয়িতা, শ্রেষ্ঠ কাহিনিকার ও শ্রেষ্ঠ প্রযোজকের পুরস্কার।

এছাড়া আমজাদ হোসেনের ঝুলিতে ছয়টি বাচসাস পুরস্কার, একুশে পদক ও বাংলা একাডেমি পুরস্কারও রয়েছে। এমন একজন কিংবদন্তিকে হারানোর শুন্যতা চিরকালই অনুভব করবে বাংলা চলচ্চিত্র।

এসবি/ 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি