ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪

কিভাবে বাড়তি ওজন কমিয়ে তা ধরে রাখবেন!

সামিয়া তাসনিম :

প্রকাশিত : ১৩:২৯, ২৭ নভেম্বর ২০১৮ | আপডেট: ১৩:৩২, ২৭ নভেম্বর ২০১৮

ওজন বেড়ে যাচ্ছে! এই অভিযোগটা এখন অনেকেরি।আমাদের সমাজের এখন একটি বড় সমস্যা হলো স্থুলতা। এই স্থুলতা থেকেই সুত্রপাত হচ্ছে বড় বড় রোগের। এখন স্থুলতা নিজেই একটি রোগ। অতিরিক্ত ওজন বেড়ে গেলে নানা রকমের রোগ আমাদের শরীরে বাসা বাধে। তার মধ্যে কার্ডিওভাসকুলার রোগ, টাইপ ২ ডায়াবেটিস, ঘুমের প্রতিবন্ধকতা, নির্দিষ্ট ধরনের ক্যানসার, অস্টিওআর্থারাইটিস, বিষণ্নতা, উচ্চরক্তচাপ,  ফ্যাটি লিভারসহ নানা ধরনের রোগ অন্যতম। প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাদ্য গ্রহণ, শারীরিক পরিশ্রমের অভাব, এবং জেনেটিক কিছু কারন দ্বারা সাধারণত স্থূলতা হয়। অনেক ক্ষেত্রে প্রধানত জিন, অন্ত্রের রোগ, ওষধ, বা মানসিক ব্যাধির কারণে ওজনাধিক্য হয়ে থাকে। স্থূলতা বিশ্বব্যাপী মৃত্যুর একটি প্রধান কারণ, তার মধ্যে প্রাপ্তবয়স্কদের এবং শিশুদের বেশি। ২১ শতকের মধ্যে এটি সবচেয়ে গুরুতর পাবলিক স্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে দেখা হয়েছে।

কিভাবে এই বাড়তি ওজন কমানো যায়, এটা নিয়ে অনেকেই চিন্তিত! স্থুলতা বা বাড়তি ওজন কমানোর জন্য ডায়েট মেনে চলতে হবে এবং সঙ্গে এক্সারসাইজ করতে হবে প্রতিদিন অল্প করে। তবে মনে রাখতে হবে শুধু এক্সারসাইজ করে ওজন কমালে এটি বেড়ে যেতে পারে তখনই, যখন আপনি এক্সারসাইজ করা বন্ধ করে দিবেন। সবচেয়ে ভালো পদ্ধতি হলো প্রতিদিন একটা ব্যালেন্স ডায়েট মেনে চলা, সঙ্গে কিছু সময় এক্সারসাইজ করা।

এখন মনে হতে পারে, কিভাবে ব্যালান্স ডায়েট মেনে চলবেন! যে ডায়েট এ সব গ্রুপের খাবার দিয়ে ক্যালরি হিসাব করে করা হয় তাকে ব্যালেন্স ডায়েট বলে। ডায়েট ব্যাপার আসলেই, যে জনিসটি বেশি খেয়াল রাখতে হবে সেটি হলো প্রত্যেকের জন্য এক রকম ডায়েট হবে না। প্রত্যেকটি মানুষের বয়স, ওজন, উচ্চতা, লিংগ এবং শারীরিক অবস্থা অনুযায়ী ডায়েট প্ল্যান আলাদা আলাদা হবে।

অনেক সময় যদি কোনও মোটা ব্যাক্তি কোনও রোগে আক্রান্ত হন, তাহলে তার রোগের ধরন অনুযায়ী খাবার নির্ধারণ করা হয়। যে বিষয়গুলো আপনি মেনে চললে মোটা হওয়ার সম্ভাবনা থাকবেনা-

১. প্রতিদিন সকালের নাশতায় উচ্চ প্রোটিন রাখবেন। কারণ একটি উচ্চ-প্রোটিন ব্রেকফাস্ট ওজন কমাতে সাহায্য করে। কারণ ক্ষুধার হরমোন নিয়ন্ত্রণে প্রোটিন হেল্প করে এবং মধ্যাহ্নভোজ পর্যন্ত আপনার ক্ষুধা বন্ধ করতে সহায়তা করে। এক গবেষণায় দেখা গেছে, ব্রেকফাস্টের জন্য ডিম উচ্চমানের প্রোটিন, ভিটামিন ডি এবং কোলাইনের মতো অপরিহার্য পুষ্টির সমৃদ্ধ। এটি প্রোটিন, যা বিশেষ করে ওজন কমানোর জন্য হেল্পফুল। তাই প্রতিদিন সকালে একটি ডিম সিদ্ধ রাখতে পারেন।

২. প্রতিদিন এর খাদ্য তালিকা থেকে অতিরিক্ত শর্করা জাতীয় খাবার বাদ দিতে হবে। যেমন আলু, সুগারী খাবার (চিনি, জুস, মিষ্টি) বাইরের প্রসেস খাবার ইত্যাদি।

৩. প্রতিবার খাওয়ার আদা ঘণ্টা আগে পানি পান করুন এবং খাওয়ার আদা ঘণ্টা পর কুসুম গরম পানি খান। এক গবেষণায় দেখা গেছে, ৩ মাসে ৪৪ শতাংশ পর্যন্ত ওজন হ্রাস হতে পারে।

৪. ধীরে ধীরে খাবার গ্রহণ করুন এবং সারাদিনের খাবারকে ৬ ভাগে ভাগ করুন।

৫. রাতে ভালো ঘুম দিন।

৬. ওজন কমাতে সাহায্য করে এমন খাবার প্রতিদিন খাদ্য তালিকায় রাখুন।

৭. বাইরের ভাজা, পোড়া খাবার প্রতিদিন খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।

৮. ভালো ফ্যাট যুক্ত খাবার যেমন, ওমেগা৩, ৬ যুক্ত খাবার প্রতিদিন খাদ্য তালিকায় অল্প করে রাখুন।

৯. শারীরিক কোনও সমস্যা যেমন রক্ত স্বল্পতা না থাকলে প্রতিদিন গ্রীন টি বা ব্যাক কফি খান।

এভাবে প্রতিদিন আপনি নিয়ম মেনে খাবার গ্রহণ করলে আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকবে। আপনি অনেক রোগের ঝুকি থেকে মুক্ত থাকবেন।

লেখক : পুষ্টিবিদ, ল্যাব এইড হাসপাতাল, পল্লবী শাখা।

একে/এসএ/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি