ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪

কীভাবে ঘটে পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ?

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:০৯, ৪ ডিসেম্বর ২০২১

বছরের শেষ পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ শনিবার। চাঁদ যখন পৃথিবীর কক্ষপথে ঘোরে, তখন তার প্রদক্ষিণ পথে কখনও কখনও চাঁদ এসে পড়ে সূর্য এবং পৃথিবীর মাঝখানে। তখন তারা থেকে আলোর বিচ্ছুরণ বাধাগ্রস্ত হয় এবং সূর্যের গ্রহণ ঘটে।

চাঁদ এই সময় পৃথিবীকে তার ছায়ায় ঢেকে ফেলে। আর এই ধরনগুলো নির্ভর করে চাঁদ সূর্যকে কতটা ঢেকে ফেলছে তার ওপর।

যেভাবে ঘটে পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ

সূর্যের পূর্ণগ্রাস গ্রহণ ঘটে যখন সূর্য, পৃথিবী এবং চাঁদ এমন অবস্থানে আসে যখন চাঁদ সূর্যের আলোকে সম্পূর্ণভাবে ঢেকে দেয়। তখন কয়েক সেকেন্ডের জন্য (কখনও কখনও কয়েক মিনিটের জন্যও) আকাশ এতই অন্ধকার হয়ে যায় যে মনে হয় সেটা রাতের আকাশ।

নাসার কথায়, মহাজাগতিক একটা সমন্বয় ঘটলেই একমাত্র সূর্যের পূর্ণ গ্রহণ সম্ভব হয়। সূর্য চাঁদের তুলনায় ৪০০ গুণ চওড়া এবং চাঁদ পৃথিবী থেকে যত দূরে, সূর্য তারচেয়ে আরও ৪০০ গুণ বেশি দূরে।

এই ভৌগলিক অবস্থানের অর্থ হল, চাঁদ, সূর্য ও পৃথিবী যখন একই লাইনে একেবারে সঠিক জায়গায় এসে পৌঁছায়, তখন সূর্য পুরোপুরি ঢেকে যায় এবং সূর্যের পূর্ণগ্রাস গ্রহণ হয়, বলছে নাসা।

পৃথিবীপৃষ্ঠে যে লাইন বরাবর চাঁদের ছায়া পড়ে তাকে বলা হয় ‘পূর্ণ গ্রাসের পথ’। আর এই ছোট পথের মধ্যেই পুরো অন্ধকার নেমে আসার চোখ ধাঁধানো প্রক্রিয়াটি দেখা যায়। যে অংশে আলোর উৎস পুরো ঢেকে যায়, ছায়ার সেই ঘন অন্ধকারাচ্ছন্ন পথের দুপাশে কয়েক হাজার কিলোমিটার পর্যন্ত গ্রহণ দেখা যায় আংশিকভাবে।

পুরো অন্ধকারে ঢেকে যাবার এই পথ থেকে পৃথিবীতে আপনার অবস্থান যত দূরে হবে, তত আপনি দেখবেন সূর্যের অপেক্ষাকৃত ছোট অংশ চাঁদে ঢাকা পড়েছে।

আর গ্রহণ কতক্ষণ থাকবে সেটা নির্ভর করে সূর্য থেকে পৃথিবীর অবস্থান, পৃথিবী থেকে চাঁদের অবস্থান আর পৃথিবীর কোন্ অংশ অন্ধকারে ঢেকে যাচ্ছে তার ওপর। তত্ত্বগতভাবে, সূর্যের গ্রহণ সর্বোচ্চ ৭ মিনিট ৩২ সেকেন্ড পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে, বলেছেন চিলের জ্যোতির্বিজ্ঞানী।

আমরা অনেক সময় ভাবি সূর্যগ্রহণ বেশ বিরল একটা প্রক্রিয়া। তা কিন্তু নয়। প্রতি প্রায় ১৮ মাস অন্তর সূর্যগ্রহণ হয়। যেটা আসলে খুবই বিরল সেটা হল- একই স্থান থেকে সূর্যের পূর্ণগ্রাস গ্রহণ দেখতে পাওয়া। ঠিক একই জায়গা থেকে সূর্যের পূর্ণগ্রহণ দেখা যায় প্রতি ৩৭৫ বছরে একবার।

বলয়গ্রাস গ্রহণ

সূর্যগ্রহণের আরেকটি দিক বলয়গ্রাস গ্রহণ। চাঁদ যখন পৃথিবী থেকে দূরে থাকে এবং তাকে ছোট দেখায়, তখন ছোট চাঁদ বড় সূর্যকে সম্পূর্ণ ঢাকতে পারে না। ফলে সূর্যের ঢাকা না পড়া বহিঃসীমাকে একটা বলয় বা আংটির মত দেখা যায়- মাঝখানে অন্ধকার আর চারপাশে আলোর বলয়। একেই বলে বলয়গ্রাস সূর্যগ্রহণ।

সূর্যের পূর্ণগ্রাস গ্রহণের মতই বলয়গ্রাসের সময়ও একটা ‘ছায়া ফেলা পথ’ তৈরি হয়। এই পথের মধ্যে পৃথিবীর যেসব অঞ্চল থাকে সেখান থেকে বলয়গ্রাস গ্রহণ দেখা যায়।

নাসা বলছে, বলয়গ্রাস সাধারণত সবচেয়ে বেশি সময় স্থায়ী হয়। আংটির মত আলোর বলয় দশ মিনিটেরও বেশি সময় ধরে দেখা যেতে পারে। তবে সাধারণত পাঁচ থেকে ছয় মিনিটের বেশি বলয়গ্রাস স্থায়ী হয় না।

উল্লেখ্য, সূর্যের বলয়গ্রাস গ্রহণ হবে ২০২৩ সালের ১৪ অক্টোবর। যা দেখা যাবে উত্তর, মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকার কিছু কিছু জায়গা থেকে। (সূত্র: বিবিসি বাংলা)

এএইচ/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি