ঢাকা, মঙ্গলবার   ০৫ নভেম্বর ২০২৪

কেমন বিশ্ববিদ্যালয় ও উচ্চশিক্ষা চাই; বাংলাদেশ প্রেক্ষিত

মুহাম্মদ তাজুল ইসলাম

প্রকাশিত : ১৫:৪৫, ৬ জুলাই ২০২০ | আপডেট: ১৫:৪৭, ৬ জুলাই ২০২০

মুহাম্মদ তাজুল ইসলাম

মুহাম্মদ তাজুল ইসলাম

বর্তমানে বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস‘র বিচারক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছেন। তিনি আইন বিষয়ে গবেষণা করছেন এবং বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক ও অনলাইন পত্রিকায় আইন ও বিচার সম্পর্কে নিয়মিত কলাম লেখেন।

বাংলাদেশ ক্রমশ উন্নয়নশীল দেশ থেকে উন্নত দেশ হিসাবে স্বীকৃতি পাওয়ার দিকে ধাবমান। কোন দেশ বিভিন্ন সূচকে যখন এগিয়ে যায় তখন সে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা ও অবকাঠামগত দিক বিবেচনায় রাখা হয়। টেকসই উন্নয়ন তথা শিক্ষা ক্ষেত্রে কেমন উন্নতি করল তাও কঠোরভাবে দেখা হয়। টেকসই উন্নয়নের অন্যান্য সূচকে বাংলাদেশ এগিয়ে থাকলেও পিছিয়ে আছে শিক্ষা ক্ষেত্রে। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে বিবিসি বাংলায় প্রকাশিত রিপোর্ট মতে লন্ডন ভিত্তিক শিক্ষা বিষয়ক সাময়িকী টাইমস হায়ার এডুকেশন প্রতি বছর বিশ্বের বিশ্ব্যবিদ্যালয়গুলোর যে র‌্যাংর্কিং প্রকাশ করে তাতে বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান এক হাজারের পরে। অন্য বিশ্ব বিদ্যালয়ের কথা বাদই দিলাম। বিশ্বের বিশ্ববিদ্যালয় র‌্যাংকিং ১০০০ ইউনিভার্সিটির তালিকায় নাম থাকাটা তারই সুস্পষ্ট ইঙ্গিত। ২০১৮ সালে বিশ্ববিদ্যালয়টির অবস্থান গিয়ে দাঁড়ায় এক হাজারেরও পরে। এ বছরই মে মাসে সাময়িকীটি এশিয়ার সেরা বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর একটি তালিকা প্রকাশ করেছিল। সেই তালিকায় উল্লেখিত এশিয়ার ৪১৭ টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে বাংলাদেশের একটি বিশ্ববিদ্যালয়েরও উল্লেখ ছিল না। এই র‌্যাংকিং বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কে একটা ধারনা ও বার্তা দিয়ে যাচ্ছে যেটি কোনভাবেই কাম্য এবং সুখকর নয়।

বাংলাদেশের ইতিহাস, ভাষা আন্দোলন, ছয় দফা, ঊনসত্তরের গনঅভূথ্থান এবং ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠিানের ও শিক্ষকদের একটি অনস্বীকার্য ভূমিকা রয়েছে। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ব্যবস্থা তথা গবেষণার দিকে কোন সরকারই ঠিকভাবে মনোযোগ দেয়নি। ফলে বর্তমান বিশ্বের শিক্ষা ব্যবস্থা ও র‌্যাংকিং এ পিছেয়ে পড়েছি যা সত্যিই হতাশার ও উদ্বেগের। সাম্প্রতিককালে প্রিয় বিদ্যাপিঠের রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকলেও সেখানকার বিরোধী মত ও পথের কন্ঠরুদ্ধ থাকায় ঠিক খোলস থেকে বের হতে পারছে না। ১৯৯০ সালের পরে ২০১৮ সালের শেষ নাগাদ ঢাকসু নির্বাচন হলেও সেখানে গণতন্ত্র চর্চার সুষ্ঠু বিকাশ না হওয়ায় ছাত্রদের মৌলিক সমস্যা সমাধানেও খুব বেশি এগুতে পেরেছে বলে মনে হয় না।

যাই হোক তবুও ঢাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে পারাটা ইতিবাচক এবং ভবিষ্যতে নতুন নেতৃত্ব তৈরি করা ও হওয়ার পথ তৈরি যে হয়েছে তা নিঃসন্দেহে বলা যায়। সাথে সাথে ঢাবিসহ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যদি ছাত্র সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে তাহলে বাংলাদেশে শিক্ষিত ও সৎ নেতৃত্ব যে তৈরি হতো তা এক বাক্যে স্বীকার করা যায়। শিক্ষার পরিবেশ, গবেষণার সংখ্যা ও সুনাম, সাইটেশন বা গবেষণার উদ্ধৃতি, এখাত থেকে আয় এবং আন্তর্জাতিক যোগাযোগ বা সংশ্লিষ্টতাসহ ৫টি মানদণ্ড বিশ্লেষণ করে এই তালিকা তৈরি করা হয়েছে। র‌্যাংকিংয়ে বিদেশী ছাত্রের ক্ষেত্রে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পেয়েছে শূন্য। অর্থাৎ বিশ্ববিদ্যালয়টির ৪ হাজার ১০৮ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে কোন বিদেশী শিক্ষার্থী নেই কিংবা থাকলেও সেই সংখ্যা সন্তোষজনক নয়।

এবার তাত্ত্বিক আলোচনায় আসি তার মানে আমরা কেমন বিশ্ববিদ্যালয় চাই। ধরুণ যে মানুষটির শরীরে মোটেও পোষাক নাই তার স্বাভাবিক চিন্তা হবে তার যে কোন একটি পোষাক হলেই চলবে বা যে মানুষটির খাবার নাই তার প্রথম লক্ষ্য হবে খাবারের সংস্থান করা। অর্থনীতির ভাষায় যাকে বলে সীমিত সম্পদের মধ্য থেকে অসীম চাহিদার অতি গুরুত্বপূর্ণ চাহিদা গুলো মিটানো। যে সুতি কাপড় সামর্থ্য অর্জন করেনি এবং চেষ্টাও করে না তার জামদানির চিন্তা করা বা যে একবেলা খেতে পারেনা তার তিন বেলা বিরিয়ানির স্বপ্ন শুধুই স্বপ্নই হতে পারে এমনকি সম্ভাবনাও হতে পারে না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা নিয়ে আমাদের নানা কথা থাকতে পারে তবে সময়ের চাহিদায় একটি প্রশ্ন বার বার ঘুরপাক খাচ্ছে যে, বাংলাদেশে বিশ্ববিদ্যালয় কেমন হওয়া উচিত? ১৮ বছর বয়সের শক্তি, সাহস এবং সম্ভাবনা নিয়ে কারোই কোন সন্দেহ নাই। আর তাই কবি, সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবীসহ সকল সচেতন মহল এই সময়কে কাজে লাগানোর প্রতি আগ্রহ দেখিয়েছেন একই সাথে গ্রন্থগত বিদ্যা থেকে বেরিয়ে এসে ব্যাবহারিক শিক্ষার পরিবেশ তৈরীর দাবী সকলের। কিন্তু জাতির সবচেয়ে ক্ষতির বিষয় হচ্ছে এই ১৮ বয়সের মূল্যবান সময়কে কাজে লাগানোর পরিবেশ তৈরী করে দিচ্ছি না। যার ফলে আমাদের দেশের অর্থনৈতিক, সামাজিক কাঠামোসহ সার্বিক উন্নয়ন কাঠামোকে দুর্বল করে ফেলছি

বাংলাদেশে বিশ্বদ্যিালয়ের ছাত্র-ছাত্রীর স্বাভাবিক বয়স তুলনা করলে ১৮ বয়সের সামান্য আগে বা পরে বিশ্ববিদ্যালয় জীবন শুরু হয়। কিন্তু এই সম্ভাবনাময় সময়কে বিশ্ববিদ্যালয় সাফল্যের শক্তিতে পরিণত করতে পারছে না যার নেতিবচক প্রভাব পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের সব ক্ষেত্রে দেখতে পাই। সকল শিক্ষার্থীর মেধা, সৃজনশীলতা ও আগ্রহ থাকা স্বত্তেও বিশ্ববিদ্যালয়ের কমপক্ষে ৮০ শতাংশ শিক্ষার্থী কোন না কোনভাবে ঝরে পড়ে। একটি হিসাবের দিকে তাকালে বিষয়টির ভয়ংকর সত্যতা ফুটে উঠবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০০ জন শিক্ষার্থীর উপর অনুসন্ধান চালালে দেখা যায় ৬০ শতাংশ শিক্ষার্থী পরীক্ষার পূর্ব ব্যাতিত সিলেবাস বা সিলেবাসের বাইরে তেমন কোন পড়াশুনাই করেনা । এরা অনেক বেশী বিনোদনমুখী এবং অপ্রয়োজনীয় কাজে তাদের জীবনের প্রয়োজনীয় সময়কে নষ্ট করে। ১০ শতাংশ ছাত্র-ছাত্রী পরীক্ষার ১ বা ২ মাস আগে থেকে সিলেবাসের পড়াশুনা করে। এবং সারা বছরের বাকী সময় গুলো কাজে লাগার মত তেমন কিছুই করেনা। ১৫ শতাংশ ছাত্র-ছাত্রী ২ বা ৩ মাস আগে থেকে সিলেবাসের উপর পড়াশুনা করে। যদিও এক্ষেত্রে শুধু তাদের ফলাফল ভালো করার ইচ্ছাই প্রধান। আর বাকী ১৫ শতাংশ ছাত্র-ছাত্রী প্রায় সারা বছর স্যারদের কাছে ভালো হবার জন্য, ভালো ফলাফল করার জন্য বা শিক্ষক হবার করার জন্য সিলেবাস অনুযায়ী পড়াশুনা করে। প্রত্যেক গ্রুপে ০ থেকে ৮ ভাগ ব্যতিক্রম আছে যারা সিলেবাসের পড়াশুনার সাথে বাইরের সৃজনশীল কাজে নিজেকে জড়িত রাখে, সৃজনশীল চিন্তা এবং কাজ করার চেষ্টা করে। বিশ্ববিদ্যালয়ে জ্ঞানসৃষ্টি, বিতরণ এবং সমাজের কাজে লাগানোর কথা থাকলেও আমাদের জ্ঞান তৈরী করাও হয় না আবার কাজের মূল্যবোধও তৈরী করা হয় না যার ফলে সমাজে সম্ভাবনাগুলো কমে আসছে।

যে বয়সে আমাদের উদ্যোমী আর পরিশ্রমী হবার কথা সে সময়টা আমরা বিশেষ কোন কাজেই লাগাতে পারছিনা। আমরা যথেষ্ঠ আগ্রহ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া শুরু করি এবং তবে পাশ করে বের হওয়ার সময় পাহাড়সম হতাশা নিয়ে বের হই। সম্মান (অনার্স) পর্যায়ের শিক্ষার্থী গন সমাজের সবচেয়ে বেশী কাজে লাগতে পারে কিন্তু সেই শক্তি কাজে না লাগানোর ফলে আমাদের সমাজে সম্ভবনাময় খাত নষ্ট হচ্ছে; নষ্ট হচ্ছে দেশের মূল্যবান সম্পদ

জাতীয় বাজেটে শিক্ষাখাতে বরাদ্দ সহজ ও গভীর বিশ্লেষণ করে শিক্ষার মানোন্নয়নে প্রত্যেকটি বাজেটে উৎপাদনশীল সম্ভাবনয়খাত গুলোতে জোর দিতে হবে। এবং তার দীর্ঘ মেয়াদী মুনাফা বা সেবা যেন সাধারণে পায় তার ব্যাবস্থা থাকতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্ভাবনাময় শিক্ষার্থীদের কাজে লাগানোর কোন বিকল্প নেই। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা পদ্ধতিতে কিছু বিশেষ পরিবর্তন অবশ্যই আনতে হবে এবং হবেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের যে ব্যাবস্থা গুলো পরিবর্তন হলে জাতির ইতিবাচক পরবির্তন হবে সে সমন্ধে আমার কিছু সুপারিশ আছে।

১) গবেষণা ও শিক্ষার পরিবেশ, গবেষণার সংখ্যা ও সুনাম, সাইটেশন বা গবেষণার উদ্ধৃতি, এখাত থেকে আয় এবং আন্তর্জাতিক যোগাযোগ বাড়াতে হবে। জার্ণাল প্রকাশনা বাড়িয়ে ভালোমানের গবেষকদের উৎসাহিত করতে হবে।

২) বিশ্ববিদ্যালয়কে শুধু ইংরেজি মাধ্যমে করার চেষ্টা না করে সম্পূর্ণ বাংলায় করতে হবে। ইংরেজিসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ভাষায় কিছু দক্ষ জনগোষ্ঠী তৈরী করতে হবে যাতে করে তারা সকল দরকারী বই গুলো সহজ অনুবাদ করে আমাদের সরবরাহ করতে পারে।

৩) ঢাকসুর মতো অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচন নিয়মিত অনুষ্ঠিত করে ছাত্রদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় মনোযোগী হতে হবে। হল ছাত্র সংসদকে সব দলের অংশগ্রহণে গনতান্ত্রিক পদ্ধতিতে করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান হিসাবে চাইলে ছাত্র রাজনীতি আইন করে বন্ধ করতে পারবে।যদি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করে সেক্ষেত্রে ছাত্রদের অধিকার নিশ্চিতে প্রতি ৪ বা ৬ মাসে আলোচনা সমালোচনার মাধ্যমে প্রশাসনকে দ্বায়বদ্ধ রাখার ব্যাবস্থা করতে হবে।

৪) প্রয়োজনে শিক্ষকদেরও রাজনীতি সংশ্লিষ্টতা বন্ধ করার পাশাপাশি প্রশ্নপত্র এবং ফলাফল তৈরীতে তাদের প্রত্যক্ষ অংশ গ্রহণ বন্ধ করতে হবে। এতে করে শিক্ষক নিয়োগের বা শিক্ষাদানে স্বচ্ছতার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে।

৫) ছাত্র-ছাত্রীদের আবাসন তথা হলে ও হোস্টেলে সিট বা থাকার সংকট দূর করতে হবে। হলের ভিতরে ছাত্রদের উন্নত ও মানসম্পন্ন খাবার নিশ্চিতে মনিটরিংসহ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পর্যাপ্ত সাবসিডি দেওয়া নিশ্চিত করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় এখন সান্ধ্য কোর্স, বৈকালিক কোর্স, ছুটির দিনে বিশেষ প্রোগ্রাম চলছে। এই মুক্তবাজার আবহাওয়ায় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় মেধাবী অথচ দরিদ্র শিক্ষার্থীদের পড়ার সুযোগ ধীরে ধীরে কঠিন হয়ে উঠছে। সুতরাং সান্ধ্যকালীন কোর্স বন্ধের বিষয়ে বা সীমিত পরিসরে করতে পদক্ষেপ নিতে হবে।

৬) কেন্দ্রীয় লাইব্রেরীর পাশাপাশি প্রত্যেকটি আবাসিক হলে উন্নতমানের লাইব্রেরী প্রতিষ্ঠা করতে হবে। উচ্চ প্রযুক্তি সম্পন্ন লাইব্রেরী ও গবেষণাগার স্থাপনে পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ দিতে হবে।

৭) শিক্ষক রাজনীতি করতে গিয়ে শিক্ষকদের মূল কাজ পাঠদান ও গবেষণা হতে সরে গেলে চলবে না। শিক্ষক রাজনীতি প্রযোজনে বন্ধ ঘোষণা করে বিশ্ববিদ্যালয় তথা শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতির জন্য গবেষণার রাজনীতি কাজে মনোযোগী হবে। শুধু দলীয় বিবেচনায় শিক্ষক নিয়োগ বন্ধ করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। তবে সমমনা কেউ যোগ্য থাকলে তাকে বাদ দিলেও চলবে না।

৮) ছাত্র, শিক্ষক, ও কর্মকর্তা সুচিকিৎসার ব্যবস্থাসহ চিকিৎসা বা মেডিকেল বিষয়ে ব্যাপক উন্নতি সাধনে মনোযোগী হতে হবে। উচ্চ শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টদের সুচিকিৎসার বিকল্প নেই।

৯) করোনার সময়ে শিক্ষাকার্যক্রম যাতে মারাত্নকভাবে বিঘ্নিত না হয় সেজন্য অনলাইনে ক্লাস, পরীক্ষা কিভাবে নেওয়া যায় বিশ্ববিদ্যালয় মজ্ঞুরী কমিশনকে (ইউজিসি) সেদিকে নজর দিতে হবে।

১০) বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্ভাবনাময় শিক্ষার্থীদের পড়াশোনাকালে বৎসরে বাধ্যতামূলক ৩-৪ মাস শ্রমের ব্যাবস্থা করতে হবে। বিষয় ভিত্তিক পার্ট টাইম কাজ থাকলে সেগুলোতে তা না থাকলে যে কোন কাজে।বিষয়ভিত্তিক কর্মক্ষেত্র ও কর্মমুখী শিক্ষাব্যবস্থা তৈরি করতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে।

১১) শিক্ষার্থীর উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত চিন্তার ও প্রতিভার বিষয়টি বিবেচনা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয় নির্ধারণ করাতে হবে। বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়কেও উচ্চ শিক্ষার পরিবেশ ও মানোন্নয়নে কঠোর নজর দারীতে নিয়ে আসতে হবে।

একদিনে উচ্চশিক্ষায় আমূল পরিবর্তন বা বিশ্ববিদ্যালয়ে বা বাংলাদেশের সব কিছু পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। কিন্তু আমার বিশ্বাস সম্ভাবনাময় উপরের সুপারিশগুলো বাস্তবায়নে আমরা খুব দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার মৌলিক কাঠামোর দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে পারবো । বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কাঠামোতে এই স্বল্প মেয়াদী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপগুলো খুব দ্রুত নিশ্চিত করবে সমাজের দীর্ঘমেয়াদি ইতিবাচক পরিবর্তন।

লেখক: মুহাম্মদ তাজুল ইসলাম, আইন গবেষক ও লেখক। ই-মেইল: tajul_jdjbd71@yahoo.com

এমএস/


** লেখার মতামত লেখকের। একুশে টেলিভিশনের সম্পাদকীয় নীতিমালার সঙ্গে লেখকের মতামতের মিল নাও থাকতে পারে।
Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি