কোমরে জোড়া লাগানো তোফা-তহুরা পেল ‘সুখের নীড়’
প্রকাশিত : ১৬:২৭, ১৫ মে ২০১৯
তোফা-তহুরা। দেশব্যাপী আলোচিত কোমরে জোড়া লাগানো দুই বোন। তাদের জন্য নির্মিত ‘সুখের নীড়’ উদ্বোধন করা হয়েছে। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী তাদের এ স্বাস্থ্যসম্মত ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে।
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার দহবন্দ ইউনিয়নের পশ্চিম ঝিনিয়া গ্রামের রাজু মিয়ার কন্যা তোফা-তহুরা। গতকাল মঙ্গলবার জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে সঙ্গে নিয়ে মা শাহিদা বেগমের কোলে চড়ে সুখের নীড়ে প্রবেশ করে তোফা-তহুরা।
জেলা প্রশাসকের নির্দেশে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অর্থায়নে তাদের জন্য একটি টিনশেড বিল্ডিং নির্মাণ করা হয়। ‘সুখের নীড়’ উদ্বোধন উপলক্ষে গতকাল এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সোলেমান আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক আবদুল মতিন। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক টিআইএম মকবুল হোসেন, যুগ্ম আহ্বায়ক সাজেদুল ইসলাম এবং দহবন্দ ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম কবির মুকুল।
অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক বলেন, চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী তাদের স্বাস্থ্যসম্মত ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে। যদি আরও কোনো সহায়তার প্রয়োজন হয়, সে ব্যাপারে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জন্মানোর পর থেকে তোফা-তহুরা তার নানাবাড়ি রামজীবন ইউনিয়নের কাশদহ গ্রামে অবস্থান করছিল। তাদের বাবার বাড়িতে কোনো ঘর ছিল না। চিকিৎসকের পরামর্শ ছিল, তোফা-তহুরাকে আলো-বাতাস চলাচল করে এমন ঘরে রাখার। কিন্তু তোফা-তহুরার বাবার ঘর ওঠানোর মতো সাধ্য ছিল না। পরে তিনি গাইবান্ধা জেলা প্রশাসকের কাছে ঘর নির্মাণ করে দেওয়ার জন্য আবেদন করেন। এরপর ঘরের পাশাপাশি নলকূপ স্থাপন ও শৌচাগার নির্মাণ করে দেওয়া হয়।
ঘর উদ্বোধনের সময় তোফা-তহুরার বাবা রাজু মিয়া বাড়িতে ছিলেন না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় হতদরিদ্র রাজু মিয়াকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি দিয়েছে। বর্তমানে তিনি কর্মস্থলে রয়েছেন। তোফা-তহুরার মা শাহিদা বেগম জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ঘর নির্মাণ করে দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন। পাশাপাশি তার বাড়িতে ঘর নির্মাণ করে দেওয়ায় তিনি খুবই খুশি।
শাহিদা বেগম জানান, বর্তমানে তোফা সম্পূর্ণ সুস্থ হলেও তহুরা কিছুটা অসুস্থ।
পসঙ্গত, ২০১৬ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর কোমরে জোড়া লাগানো অবস্থায় সুন্দরগঞ্জ উপজেলার রামজীবন ইউনিয়নের কাশদহ গ্রামে নানাবাড়িতে তোফা ও তহুরার জন্ম হয়। গণমাধ্যমে বিষয়টি আলোচিত হলে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় তাদের ওই বছরের ৭ অক্টোবর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এর পর ১৬ অক্টোবর তাদের প্রথম অস্ত্রোপচার করা হয়। ২০১৭ সালের ১ আগস্ট তাদের আলাদা করার জন্য করা হয় দ্বিতীয় অস্ত্রোপচার। পরে ১০ সেপ্টেম্বর ঢাকা থেকে গাইবান্ধায় ফেরে তোফা-তহুরা। তহুরা ফের অসুস্থ হলে ২০১৭ সালের ৮ অক্টোবর তাকে ঢাকায় নেওয়া হয়। পরে চিকিৎসা শেষে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি বাড়িতে ফেরে যমজ দুই বোন।
এসএ/
আরও পড়ুন