ঢাকা, শুক্রবার   ১০ জানুয়ারি ২০২৫

ক্রীড়াঙ্গনে শায়েস্তাগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়

প্রকাশিত : ২০:১৪, ১০ মে ২০১৮ | আপডেট: ২০:১৫, ১০ মে ২০১৮

স্বপ্নহীন পথ চলা যেমন অসম্ভব তেমনি স্বপ্নের বাস্তবায়ন করাটাও সহজ ব্যাপার নয়। এর জন্য প্রয়োজন শৃঙ্খলা, সাধনা আর কঠোর পরিশ্রম। মানুষ তার স্বপ্ন পূরণের উদ্দেশ্যে ভিন্ন ভিন্ন লক্ষ্যকে সামনে রেখে এগিয়ে যায় নিরন্তর। আর মানুষের লক্ষ্যের ভিন্নতা তাকে করে তোলে স্বতন্ত্র ও বৈচিত্র্যময়। জীবনের লক্ষ্য পূরণে বিদ্যালয়ের ভ‚মিকা অনস্বীকার্য। তেমনি এক মহান বিদ্যাপীঠ আমার প্রাণের বিদ্যালয় ‘শায়েস্তাগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়’। আজ আমি উচ্ছ¡সিত একই সঙ্গে শিহরিত যে, আমার বিদ্যালয়ের শতবর্ষ উদযাপনের এই বিশাল আনন্দযজ্ঞে আমিও এক গর্বিত অংশীদার। কৈশোরের নতুন ভোরের আলোয় এই বিদ্যালয় আমাকে যে নতুন জীবনের, নতুন আলোর হাতছানি দিয়েছিলো আজ গোধূলির আলোতেও তা আমার কাছে অমলিন। তাই তো এই বিদ্যালয়ের সাথে আমার সম্পর্ক শুধু শিক্ষার নয়Ñ এ যেন এক প্রাণের সম্পর্ক, আত্মার বন্ধন। শায়েস্তাগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের রয়েছে এক গৌরবময় অতীত। সেই গৌরবময় অতীত শিক্ষার পাশাপাশি সাহিত্য, সংস্কৃতি, ক্রীড়াসহ নানা ঐতিহ্যময় কর্মকাণ্ডে পরিপূর্ণ। তাই তো শায়েস্তাগঞ্জ, হবিগঞ্জ তথা সমগ্র বাংলাদেশের প্রতিটি ক্ষেত্রেই রয়েছে এর তেজস্বী ছাত্রদের দৃপ্ত পদচারণ। বিদ্যালয়ের প্রতিটি ছাত্র যোগ্য সৈনিক হিসাবে তাদের স্ব-স্ব অবস্থানে বিদ্যালয়ের সুমহান মর্যাদাকে অক্ষুণ্ন রেখেছে আপন আপন জ্যোতিতে। লেখাপড়ার পাশাপাশি ছাত্রদের শরীর গঠনে খেলাধুলার প্রয়োজনীয়তা সর্বজন স্বীকৃত। শায়েস্তাগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ে ছাত্রদের শরীরচর্চা ও খেলাধুলার প্রতি সর্বদাই তীক্ষ্ম দৃষ্টি ছিল। তাই জেলা, বিভাগীয় ও জাতীয় পর্যায়ে এই বিদ্যালয়ের আশীর্বাদপুষ্ট বহু খ্যাতিমান ক্রীড়াবিদের গর্বিত অংশগ্রহণ বরাবরই প্রশংসাযোগ্য। আর এই বিদ্যালয়ের একজন প্রাক্তন ছাত্র হিসেবে আমি সেইসব কৃতী ক্রীড়াবিদের পরিচয় তুলে ধরতে প্রাণান্তকর চেষ্টা করছি। তথ্য-উপাত্তের মাধ্যমে সঠিক ইতিহাস সংগ্রহে যাঁরা আমাকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন তাঁরা হলেন :

আমার অগ্রজ প্রতিম জাতীয় ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড় সৈয়দ অলিউর রহমান (সাবেক চেয়ারম্যান ৬৬ ব্যাচ), আবুল হাসিম (বীর মুক্তিযুদ্ধা ও সাবেক চেয়াম্যান ৬৬ ব্যাচ), মো. আলী হোসেন (ফুটবলার), মো. মোক্তার হোসেন (জাতীয় ফুটবলার), আলী আহমেদ খান (সাবেক চেয়ারম্যান, ফুটবলার) ও আমার স্নেহভাজন মো. আশফাকুর রহমান পলিন (ক্রিকেট ও ভলিবল খেলোয়াড় ৯০ ব্যাচ), সৈয়দ আকিকুর রহমান রিমেল (ক্রিকেট খেলোয়াড় ৯২ ব্যাচ), শামীমুর রহমান শামীম (ফুটবলার ৯৯ ব্যাচ)।


শায়েস্তাগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের সৃষ্টির ইতিহাস শতবছর হলেও সূচনালগ্নে ক্রীড়াক্ষেত্রে যাঁরা কৃতিত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিলেন, তাঁদের সঠিক ইতিহাস সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি। যে কারণে পঞ্চাশ ও ষাটের দশকের ক্রীড়াবিদদের নিয়েই আমার লেখার সূচনা, আর যার ধারাবাহিকতা বর্তমান সময় পর্যন্ত।

ফুটবল
পৃথিবীতে যত রকম খেলা আছে তার মধ্যে অত্যন্ত জনপ্রিয় খেলা ফুটবল। এই ফুটবল বাংলাদেশের একটি প্রাচীন খেলা। আবহমান বাংলার ঐতিহ্যের সাথে ফুটবল খেলা ওতপ্রোতভাবে জড়িত। পঞ্চাশ ও ষাটের দশক থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত শায়েস্তাগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র হিসেবে ফুটবল খেলায় যাঁরা কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছিলেন, তাঁদের একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা উল্লেখ করা হলো :

ছাব্বির হোসেন (কটন), দাউদনগর : ষাটের দশকে শায়েস্তাগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের এক কৃতী ফুটবলারের নাম ছাব্বির হোসেন কটন। পাকিস্তান আমলে ইপিআর এবং স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বিডিআর ফুটবল টিমের একজন অপরিহার্য খেলোয়াড় ছিলেন। ইপিআরে থাকা অবস্থায় পশ্চিম পাকিস্তানের পক্ষে পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তানের বিভিন্ন ফুটবল টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ করেন। হবিগঞ্জ জেলা দলের মাঝমাঠের একজন নির্ভরযোগ্য খেলোয়াড় ছিলেন। এছাড়াও হবিগঞ্জ প্রথম বিভাগ ফুটবল টুর্নামেন্টে আজাদ স্পোর্টিং ক্লাবের পক্ষে অংশগ্রহণ করেন।

মো. আজব আলী : পাকিস্তান আমলে সেন্ট্রাল স্টেশনারি ক্লাবের একজন নিয়মিত খেলোয়াড় ছিলেন। দেশ বিভাজনের আগে ইজি প্রেস ও পরবর্তীকালে বিজি প্রেস ক্লাবের পক্ষে ঢাকা প্রথম বিভাগ ফুটবল টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ করেন। তিনি হবিগঞ্জ জেলা দল, সিলেট জেলা দল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব, হবিগঞ্জ মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের একজন অপরিহার্য খেলোয়াড় ছিলেন। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে ‘স্বাধীন বাংলা ফুটবল টিমে’র নিয়মিত খেলোয়াড় হিসেবে মুক্তিযোদ্ধারের জন্য তহবিল সংগ্রহ করেন। ফুটবলের পাশাপাশি একজন খ্যাতিমান ভলিবল খেলোয়াড় ছিলেন। প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সময়ে ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

তৈয়ব আলী (নাথবাড়ী, পশ্চিম লেঞ্জাপাড়া): হবিগঞ্জ মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবে নিয়মিত খেলোয়াড় ছিলেন। মো. আনজব আলী (লস্করপুর), মো. রফিক মিয়া (বাগুনীপাড়া), গোলজার হোসেন (নিশাপট), মো. আব্দুল মতিন গোলকিপার (আদ্যপাশা), হাফিজ উদ্দিন (শহীদ মুক্তিযুদ্ধা, বাগুনীপাড়া), বাবর আলী (কাজীরগাঁও), শৈলেশ চন্দ্র দাস (লস্করপুর), মো. আব্দুল জলিল (প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক, লাকড়িপাড়া), আবুল আউয়াল (বিরামচর), আলী আকবর চৌধুরী (ওয়ার্কশপ এরিয়া), মো. আজিজুর রহমান (কেউন্দা), শামসুল ইসলাম (আদ্যপাশা), মো. সিরাজ আলী (ঠিকাদার বাড়ী, পশ্চিম লেঞ্জাপাড়া), মো. রফিকুল ইসলাম (কালা মিয়া, পশ্চিম লেঞ্জাপাড়া), মনতাজ আলী (নূরপুর), মো. কুতুব আলী (সুরাবই), লেচ্চু মিয়া (সুরাবই), আকছির মিয়া মেম্বার, সুরাবই), আব্দুল জাব্বার (খুর্শেদ আলী, সুরাবই)।

মো. ছাবেদ আলী (নূরপুর) : তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে এএমসি কোরে প্রথম যোগদান করেন। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে থাকা অবস্থায় সেনাবাহিনী ফুটবল টিমের একজন নিয়মিত খেলোয়াড় ছিলেন। তিনি বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে ফুটবল খেলায় অংশগ্রহণ করেন।

সৈয়দ অলিউর রহমান (সাবেক চেয়ারম্যান, শায়েস্তাগঞ্জ ইউপি) : ১৯৬৬ ব্যাচের ছাত্র। তিনি মূলত একজন জাতীয় ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড় ছিলেন। তদুপরি ফুটবল খেলায়ও যোগ্যতার স্বাক্ষর রেখেছেন। সৈয়দ অলিউর রহমান হবিগঞ্জ মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব, বৃন্দাবন সরকারি কলেজ একাদশের হবিগঞ্জ প্রথম বিভাগ ফুটবল টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ করেন। তিনি হবিগঞ্জ জেলার একজন উন্নতমানের প্রথম বিভাগের রেফারি ছিলেন।

আবুল হাসিম (সাবেক চেয়ারম্যান ভাদেশ্বর ইউপি) : ১৯৬৬ ব্যাচের ছাত্র। তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও হবিগঞ্জ জেলা দলের একজন নিয়মিত খেলোয়াড় ছিলেন। এছাড়া হবিগঞ্জ প্রথম বিভাগ ফুটবল টুর্নামেন্টে বৃন্দাবন সরকারি কলেজ একাদশ, শেরে বাংলা স্পোর্টিং ক্লাব ও আগমনী ক্রীড়াচক্রের হয়ে খেলায় অংশগ্রহণ করেন।

আলী আহমেদ খান (সাবেক চেয়ারম্যান শায়েস্তাগঞ্জ ইউপি) : সত্তরের দশকে একজন উদীয়মান ফুটবল খেলোয়াড় ছিলেন। শায়েস্তাগঞ্জ একাদশ, বৃন্দাবন সরকারি কলেজ একাদশ, মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব ছাড়াও জেলা পর্যায়ে বিভিন্ন টুর্নামেন্টে তিনি অংশগ্রহণ করেন।

আবদুল মালেক (মাস্টার) ও হায়দার আলী (মাস্টার), চরহামুয়া : তারা দুজনই শায়েস্তাগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের কৃতী ফুটবল খেলোয়াড় ছিলেন।

মো. আলী হোসেন : তিনি পূর্ব পাকিস্তান ও পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ফুটবল দলের একজন অপরিহার্য খেলোয়াড় ছিলেন। ১৯৭৫ সালে আগা খান গোল্ডকাপ টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দলের পক্ষে থাইল্যান্ড জাতীয় দলের বিপক্ষে অংশগ্রহণ করেন। আলী হোসেন ঢাকা প্রথম বিভাগ ফুটবল লীগে বিজি প্রেস, ওয়ান্ডারার্স ক্লাব, আজাদ স্পোর্টিং ক্লাব ও ঢাকা মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের নিয়মিত খেলোয়াড় ছিলেন। ঢাকা মোহামেডানের স্পোর্টিং ক্লাবের পক্ষে ১৯৭৯ সালে জার্মান জাতীয় দল, উত্তর কোরিয়া জাতীয় দল ও কলকাতা মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের বিপক্ষে অংশগ্রহণ করেন। এছাড়া হবিগঞ্জ জেলা দল, সিলেট ভিক্টোরিয়া স্পোর্টিং ক্লাব, যশোর টাউন হল ক্লাব, কুমিল্লা মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব, হবিগঞ্জ মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব, সবুজ বাংলা যুবসংঘ ও নবারুন ক্রীড়াচক্রের নিয়মিত খেলোয়াড় ছিলেন।

মো. বদিউজ্জামান কামাল : তিনি ১৯৭০ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন। সেনাবাহিনীতে থাকা অবস্থায় ইন্টার সার্ভিসেস চ্যাম্পিয়নশিপে (১৯৭১-১৯৭৭) অংশগ্রহণ করেন। ঢাকা প্রথম বিভাগ ফুটবল টুর্নামেন্টে তিনি বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ক্লাবের খেলোয়াড় ছিলেন। এছাড়া হবিগঞ্জ জেলা দল ও যুবসংঘ, ব্রাদার্স ইউনিয়ন ক্লাবের পক্ষেও অংশগ্রহণ করেন।

মো. মোক্তার হোসেন, নূরপুর : শায়েস্তাগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের একজন গর্বিত খেলোয়াড় ছিলেন। বাংলাদেশ জাতীয় দলের একজন নিয়মিত খেলোয়াড় হিসেবে তিনি ১৯৭৬ সালে ব্যাংক কিংস ক্লাব ফুটবল টুর্নামেন্ট, প্রেসিডেন্ট গোল্ডকাপ, ১৯৭৫ সালে আগা খান গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ করেন। জাতীয় দলে থাকা অবস্থায় ভারত, পাকিস্তান, দক্ষিণ কোরিয়া, মালয়েশিয়া ও ভুটানে অংশগ্রহণ করেন। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী টিমের অধিনায়ক হিসেবে ইন্টার সার্ভিসেস টুর্নামেন্টে চীন, পিকিং, সাংহাই, সানিয়াং, ক্যান্টন ও হংকং-এ অংশগ্রহণ করে যোগ্যতার স্বাক্ষর রাখেন। জাতীয় শেরেবাংলা গোল্ডকাপ ও ১৯৮৬ সালে জাতীয় সোহরাওয়ার্দী গোল্ডকাপ টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ ছাড়াও ঢাকা প্রথম বিভাগ ফুটবল লীগে ঢাকা ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের একজন নিয়মিত খেলোয়াড় ছিলেন। এছাড়াও জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে হবিগঞ্জ জেলা দল, কুমিল্লা, চিটাগাং, হবিগঞ্জ মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব, খুলনা ব্যাংকার্স ক্লাব, সিলেট ভিক্টোরিয়া স্পোর্টিং ক্লাব, যুবসংঘ, হোয়াইট এলিভেন, নবারুন ক্রীড়াচক্রসহ দেশের বিভিন্ন ক্লাবে অংশগ্রহণ করেন।

তাজুল ইসলাম ফারুক, পশ্চিম লেঞ্জাপাড়া : শায়েস্তাগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের একজন কৃতী ফুটবলার ছিলেন। তিনি মূলত একজন ক্রীড়া সংগঠক হিসেবে সমধিক পরিচিত। তিনি ওয়ান্ডারার্স ফুটবল ক্লাব ও ওয়ান্ডারার্স ক্রিকেট ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা। ফুটবল ছাড়াও ব্যাডমিন্টন ও ভলিবল খেলায় সমান পারদর্শী ছিলেন।

মো. আকছির মিয়া, শ্রীক‚টা : তিনি একজন কৃতী গোলকিপার ছিলেন। শায়েস্তাগঞ্জ একাদশ, হবিগঞ্জ মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব, বৃন্দাবন সরকারি কলেজ একাদশ, ব্রাদার্স ইউনিয়ন ক্লাবসহ হবিগঞ্জ জেলা দলের একজন নিয়মিত গোলকিপার ছিলেন।

আব্দুল মজিদ, শ্রীক‚টা : তিনি একজন ফুটবলার হিসেবে চুনারুঘাট উপজেলা দল শায়েস্তাগঞ্জ একাদশ, হবিগঞ্জ ব্রাদার্স ইউনিয়ন ক্লাবের একজন কৃতী খেলোয়াড় ছিলেন।

কুতুব আলী, আতুড়াকান্দি : তিনি শায়েস্তাগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র হিসেবে অ্যাথলেটিকস ও ফুটবল অঙ্গনে একজন পরিচিত মুখ ছিলেন। শায়েস্তাগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের পক্ষে সিলেট জেলা ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় অ্যাথলেটিকস প্রতিযোগিতায় (১০০ মিটার, ২০০ মিটার দৌড়) অংশগ্রহণ করেন। হবিগঞ্জ জেলা দলের একজন নিয়মিত ফুটবলার হিসেবে সিলেট প্রথম বিভাগ ফুটবল টুর্নামেন্টে, হবিগঞ্জে ব্রাদার্স ইউনিয়ন ক্লাব, মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব, বৃন্দাবন সরকারি কলেজ একাদশ ও চুনারুঘাট উপজেলা একাদশের একজন অপরিহার্য খেলোয়াড় ছিলেন।

মো. তরিকুল ইসলাম হারুন (৮২ ব্যাচ, পশ্চিম লেঞ্জাপাড়া) : আশির দশকে শায়েস্তাগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের একজন কৃতী ফুটবলার ও অ্যাথলেট। তিনি ১৯৮৬ সালে জাতীয় সোহরাওয়ার্দী গোল্ডকাপের একজন নিয়মিত খেলোয়াড় ছিলেন। ঢাকা প্রথম বিভাগ ফুটবল লীগে ঢাকা আবাহনী ক্রীড়াচক্রের কৃতী খেলোয়াড় কাজী কামালের নেতৃত্বে সাধারণ বীমা কর্পোরেশনের একজন অপরিহার্য খেলোয়াড় ছিলেন। ঢাকা দ্বিতীয় বিভাগ ফুটবল লীগে মালিবাগ অভিযাত্রিক ক্লাব ও ঢাকা সিটি ক্লাবের পক্ষে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৮২ সালে হবিগঞ্জ প্রথম বিভাগ ফুটবল টুর্নামেন্টে শায়েস্তাগঞ্জ ক্রীড়াচক্রের পক্ষে প্রথম অংশগ্রহণ ও পরবর্তীকালে ১৯৮৩-১৯৮৫ পর্যন্ত হবিগঞ্জ ওয়ান্ডারার্স ক্লাবে অধিনায়কত্ব করেন। হবিগঞ্জ জেলা দলসহ হবিগঞ্জ বৃন্দাবন সরকারি কলেজ একাদশ, মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব, সিলেট ভিক্টোরিয়া স্পোর্টিং ক্লাবের একজন নিয়মিত খেলোয়াড় ছিলেন।

আব্দুল কাইয়ূম (৮২ ব্যাচ, পূর্ব লেঞ্জাপাড়া) : হবিগঞ্জ প্রথম বিভাগ ফুটবল টুর্নামেন্টে শায়েস্তাগঞ্জ ক্রীড়াচক্র ও ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের একজন নিয়মিত খেলোয়াড় ছিলেন। তিনি একজন কৃতী (১০০ মিটার) দৌড়বিদ ছিলেন।
শাহ্ মো. এমরান (সাবেক কমিশনার, বাগুনীপাড়া), মো. ফয়জুল ইসলাম মামুন (গোলকিপার, পশ্চিম লেঞ্জাপাড়া), স্বর্গীয় ধীরেন্দ্র শীল (গঙ্গানগর), মো. আব্দুল মতিন (সুদিয়াখলা), মো. আশিকুর রহমান নাসিম (৮২ ব্যাচ দাউদনগর), মো. আলাউদ্দিন খোকন (দাউদনগর), জাকির হোসেন আসাদ (৮২ ব্যাচ, পশ্চিম বড়চর), মো. রফিক মিয়া (চর নূর আহমেদ), মো. ফরিদ আহমেদ অলি (৮৭ ব্যাচ, সাবেক মেয়র, শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভা), মো. তৈয়ব আলী (৮৮ ব্যাচ, শরীফাবাদ), মো. আক্তার (লস্করপুর), মামুনুর রশীদ ও মাহবুবুর রশীদ মনু (বড়চর), হারুনুর রশিদ হারুন সাঁই (৯০ ব্যাচ, নাট্য সংগঠক, বড়চর), বিশ্ব (শায়েস্তাগঞ্জ পুরান বাজার), অপু (গোলকিপার), সুমন (৯৬ ব্যাচ, প্রা. প্র. শি., খালেক স্যারের ছেলে), মো. নাজমুল (শায়েস্তাগঞ্জ ওয়ার্কশপ এরিয়া), আব্দুস শহীদ ও শাহিনুর রহমান (চরহামুয়া), মো. জামাল (শায়েস্তাগঞ্জ ওয়ার্কশপ এরিয়া)। তারা সবাই হবিগঞ্জ জেলা প্রথম বিভাগ ফুটবল লীগের নিয়মিত খেলোয়াড় ছিলেন।

আকিকুর রহমান টিপু ও জুনাইদ আহমেদ, লেঞ্জাপাড়া : এই দুই ভাই হবিগঞ্জ জেলা প্রথম বিভাগ ফুটবল লীগের নিয়মিত খেলোয়াড় ছিলেন। বিশেষ করে আকিকুর রহমান টিপু ১৯৯৬ সালের আন্ডার-১৪ হবিগঞ্জ জেলা দলের খেলোয়াড় হিসেবে নির্বাচিত হন। তিনি হবিগঞ্জ জেলা দলে ও প্রথম বিভাগ ফুটবল লীগে হবিগঞ্জ রাজনগর ক্লাবের পক্ষে অংশগ্রহণ করেন।

মো. শামীমুর রহমান, চরহামুয়া : ৯৯ ব্যাচের ছাত্র। ১৯৯৬ সালে আন্ডার-১৪ হবিগঞ্জ জেলা দলের হয়ে খেলোয়াড়ী জীবন শুরু। তার পরে আর পেছনে তাকাতে হয়নি এই গুণী খেলোয়াড়কে। তিনি হবিগঞ্জ জেলা ফুটবল দলে চারবার অধিনায়কত্ব করেন। ২০০৯ সালে বাসাবো তরুণ সংঘ ঢাকা, ২০১০ সালে যাত্রাবাড়ী ক্রীড়াচক্র ঢাকার পক্ষে দ্বিতীয় বিভাগ ঢাকা প্রিমিয়ার লীগে অংশগ্রহণ ছাড়াও সিলেট প্রথম বিভাগ ফুটবল লীগে ২০০৭ সালে বঙ্গবীর অগ্রগামী ক্লাব, ২০১৩ সালে সিলেট মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব, ২০১৪ সালে চট্টগ্রাম প্রিমিয়ার লীগে চট্টগ্রাম বন্দর, ২০১৫ সালে মৌলভীবাজার জেলা দলের পক্ষে ভারতের আসাম, ত্রিপুরা ও মণিপুরে অংশগ্রহণ করেন। একাধারে তিনি একজন সফল ক্রীড়া সংগঠক ছিলেন। তার হাত ধরেই প্রতিষ্ঠিত হয় শায়েস্তাগঞ্জ কলিমনগর ফুটবল একাডেমী।

মো. জসিম মিয়া, চরহামুয়া : তিনি বর্তমান প্রজন্মের একজন পরিচিত ফুটবলার। তিনি হবিগঞ্জ জেলা দলের একজন নিয়মিত রাইট ব্যাক পজিশনের খেলোয়াড়। ২০১৪ ও ২০১৮ সালে জেলা প্রশাসক আন্তঃউপজেলা ফুটবল টুর্নামেন্টে হবিগঞ্জ সদর উপজেলা দলের চ্যাম্পিয়ন স্কোয়াডের নিয়মিত খেলোয়াড়। সিলেট মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব ও ঢাকা দ্বিতীয় বিভাগ প্রিমিয়ার ফুটবল লীগে বিজি প্রেস ক্লাবের পক্ষে অংশগ্রহণ করেন।

সোহাগ মিয়া কমিশনার (ছামাদ মিয়ার ছেলে) : বর্তমানে হবিগঞ্জ জেলাদল, সদর উপজেলা দল ও ঢাকা তৃতীয় বিভাগ ফুটবল লীগে যাত্রাবাড়ী ঝটিকা ক্লাবের একজন নিয়মিত ফুটবলার।

ক্রিকেট
বর্তমান বিশ্বে ক্রিকেট খেলা অত্যন্ত জনপ্রিয় ও চিত্তাকর্ষক খেলা। সাম্প্রতিক কালে ক্রিকেট খেলা ‘খেলার রাজা’ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। এই খেলা সময়সাপেক্ষ, ব্যয়সাধ্য ও আভিজাত্যপূর্ণ। বাংলাদেশে সুদীর্ঘকাল ধরে ক্রিকেট খেলার প্রচলন থাকলেও ১৯৯৯ সালে বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশ যোগ্যতা অর্জন করে। বর্তমানে ক্রিকেট বাঙালি জাতির অনেক আশা-আকাক্সক্ষা এবং প্রেরণার উৎস হয়ে উঠেছে। কিন্তু ক্রিকেটের দীর্ঘকালের ইতিহাস খুঁজলে দেখা যায় শায়েস্তাগঞ্জ তথা শায়েস্তাগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ে এর প্রভাব পড়ে নব্বই দশকে। শায়েস্তাগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের ১৯৬৬ ব্যাচের ছাত্র, জাতীয় ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড় সৈয়দ অলিউর রহমানের হাত ধরে শায়েস্তাগঞ্জে আধুনিক ক্রিকেট খেলার যাত্রা শুরু। ইতিমধ্যে যারা জেলা, বিভাগ ও জাতীয় পর্যায়ে ক্রিকেট খেলায় কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছেন, তাদের একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা নিচে দেয়া হলো :


হবিগঞ্জ জেলা দল ও হবিগঞ্জ প্রথম বিভাগ প্রিমিয়ার ক্রিকেট টুর্নামেন্টে যারা অংশগ্রহণ করেছেন :
মো. জাকির হোসেন (আসাদ ৮২ ব্যাচ)- বড়চর, মো. আশফাকুর রহমান (পলিন ৯০ ব্যাচ)- দাউদ নগর, সৈয়দ আজিজুর রহমান (সাইফুর, দাউদনগর), মো. আব্দুস ছালেক (বর্তমান ওসি ডিবি, মৌলভীবাজার), ৯০ ব্যাচ - লস্করপুর), ফজলে এলাহী- লস্করপুর, মীর সজল- নূরপুর, মো. ছালেহ চৌধুরী- নূরপুর, সৈয়দ আরিফুর রহমান রাসেল- দাউদনগর, সৈয়দ আকিকুর রহমান (রিমেল) দাউদনগর (তিনি হবিগঞ্জ জেলা দল ও হবিগঞ্জ প্রথম বিভাগ ক্রিকেট টুর্নামেন্টের একজন নিয়মিত ব্যাটসম্যান ছিলেন), মো. কামরুল হাসান রিপন- পশ্চিম লেঞ্জাপাড়া, মো. সুমন ও মো. সুজন (দুই ভাই)- শায়েস্তাগঞ্জ রেলওয়ে জংশন, সৈয়দ রাসেল ও সৈয়দ রোহেল (দুই ভাই)- বিরামচর, রাফেল (নাতবাড়ী)- পশ্চিম লেঞ্জাপাড়া, নাজমুল হাসান মুর্শেদ- পশ্চিম লেঞ্জাপাড়া, রকিবুল হাসান নওশেদ- পশ্চিম লেঞ্জাপাড়া, মো. সজল- পশ্চিম লেঞ্জাপাড়া, সুমন- হবিগঞ্জ জেলা দল ও হবিগঞ্জ প্রথম বিভাগ প্রিমিয়ার (মনিকা সিনেমা হলের পাশে, বাগুনীপাড়া, ক্রিকেট টুর্নামেন্টের একজন নিয়মিত খেলোয়াড় ছিলেন), বিলাল- (মনিকা সিনেমা হলের পাশে, বাগুনীপাড়া), সৈয়দ ওয়াসিওর রহমান- দাউদনগর, এজাজ- লস্করপুর, ফয়সল- লস্করপুর, সৈয়দ রাজু আহমেদ- লস্করপুর, মোশারফ হোসেন (মন্টু), রকিবুল হোসেন (সান্টু), দেলোয়ার হোসেন জন্টু ও নাজমুল হোসেন রিন্টু (চার ভাই)- নূরপুর।

নাজমুল হোসেন রিন্টু ফুটবলার হিসেবে খেলোয়াড়ী জীবন শুরু করলেও একজন ক্রিকেট খেলোয়াড় হিসেবে হবিগঞ্জ তথা সমগ্র বাংলাদেশে সমধিক পরিচিত। শায়েস্তাগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াশোনা শেষ না করেই বিকেএসপিতে যোগদান করেন। বিকেএসপিতে থাকা অবস্থায় অনূর্ধ্ব-১৯ ওয়ার্ল্ড কাপে বাংলাদেশ জাতীয় দলে অন্তর্ভুক্ত হন। অনূর্ধ্ব-১৯ ওয়ার্ল্ড কাপে থাকা অবস্থায়ই বাংলাদেশ জাতীয় দলে ডাক পান। জাতীয় দলের পক্ষে ভারত, পাকিস্তান, সাউথ আফ্রিকা, ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, জিম্বাবুয়ে, নেদারল্যান্ডস, আয়ারল্যান্ডসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে খেলায় অংশগ্রহণ করেন। এছাড়া প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লীগে ঢাকা আবাহনী ক্রীড়াচক্রের পক্ষে এবং বিপিএলে সিলেট ও রংপুরের পক্ষে প্রতিনিধিত্ব করেন।


লিটন তরফদার- চুনারুঘাট, শাওন পাল- দাউদনগর বাজার, রনি মাধব রায়- দাউদনগর বাজার, বলরাম পাল- দাউদনগর বাজার, সাকিব- দাউদনগর বাজার, তানভীর ইয়াজদানী সাকিল- মহলুল সুনাম, মো. ফয়সল রহমান- তালুগড়াই, সিহাব আহমেদ- তালুগড়াই, মিজানুর রহমান রুমন- চর নূর আহমেদ, সৈয়দ সাজ্জাদুর রহমান সজিব ও সৈয়দ সাবিকুর রহমান সাকিব- দাউদনগর : তারা আপন দুই ভাই। দুজনই বর্তমানে হবিগঞ্জ জেলা দলের নির্ভরযোগ্য ও অপরিহার্য ব্যাটসম্যান ও বোলার।

ভলিবল
মো. আজব আলী (সাবেক ফুটবলার) : তিনি ঢাকা প্রথম বিভাগ ভলিবল প্রিমিয়ার লীগে বিজি প্রেস ক্লাবের পক্ষে আজাদ স্পোর্টিং ক্লাবের বিপক্ষে নাইট গেমসে অংশগ্রহণ করেন। হবিগঞ্জ জেলা দল ও শায়েস্তাগঞ্জ একাদশের একজন নিয়মিত খেলোয়াড় ছিলেন। তিনি একজন সফল ভলিবল ও ফুটবল সংগঠক ছিলেন।


সৈয়দ অলিউর রহমান (সাবেক চেয়ারম্যান, শায়েস্তাগঞ্জ ইউপি)- হবিগঞ্জ জেলা দল ও শায়েস্তাগঞ্জ একাদশ, মো. তাজুল ইসলাম ফারুক (সাবেক ফুটবল সংগঠক, পশ্চিম লেঞ্জাপাড়া), আজিজুর রহমান মাখন (সাবেক মেম্বার)- দাউদনগর, মো. সফিকুল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা (তালুগড়াই), করম আলী- পশ্চিম লেঞ্জাপাড়া, মো. নূরুল ইসলাম (প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়)- পশ্চিম লেঞ্জাপাড়া, অরুণ দত্ত (বড়চর, প্রাক্তন সহকারী শিক্ষক), মো. মোক্তার হোসেন (সাবেক জাতীয় ফুটবলার)- নূরপুর, মো. তরিকুল ইসলাম হারুন (ফুটবলার, পশ্চিম লেঞ্জাপাড়া), আশিকুর রহমান নাসিম (চর নূর আহমেদ), মো. আলাউদ্দিন খোকন (দাউদনগর), মো. আক্তার আলী- চর নূর আহমেদ, মো. এংরাজ আলী (পশ্চিম লেঞ্জাপাড়া), রাজু- ৮৫ ব্যাচ, টিপু- ৮৫ ব্যাচ, কাজী আব্দুল মোক্তাকিম শামীম- ৮৫ ব্যাচ, মনির- ৮৮ ব্যাচ, মীর্জা গালিব রুমি- ৮৭ ব্যাচ, নাহিদ-৮৭ ব্যাচ, মো. মোহায়েমীম- ৮৭ ব্যাচ, তাপস- ৮৮ ব্যাচ, নাজমুল হাসান মুর্শেদ- ৯৬ ব্যাচ, রকিবুল হাসান নওশেদ- ৯৮ ব্যাচ, মো. সজল- ৯৮ ব্যাচ। শামীমুর রহমান শামীম- ৯১ ব্যাচ (চরহামুয়া)। তিনি শায়েস্তাগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের পক্ষে সিলেট বিভাগীয় চ্যাম্পিয়নশিপ ভলিবল টুর্নামেন্টের একজন নিয়মিত খেলোয়াড় ছিলেন। সৈয়দ সাজ্জাদুর রহমান সজিব- ২০০০ ব্যাচ।

ব্যাডমিন্টন
সৈয়দ নজিবুর রহমান ইকবাল ও সৈয়দ মুজিবুর রহমান আবদাল (দাউদনগর সৈয়দ বাড়ী) : তারা আপন দুই ভাই। পঞ্চাশের দশকে সৈয়দ নজিবুর রহমান ইকবাল একক ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্টে ইস্ট পাকিস্তান চ্যাম্পিয়ন ছিলেন। সৈয়দ নজিবুর রহমান ইকবাল ও মো. মাহতাব আলী (ঠিকাদার বাড়ী, পশ্চিম লেঞ্জাপাড়া) দ্বৈত ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্টে ইস্ট পাকিস্তান রানার আপ ছিলেন। পরবর্তী সময়ে সৈয়দ নজিবুর রহমান ইকবাল ও সৈয়দ মুজিবুর রহমান আবদাল ইস্ট পাকিস্তান দ্বৈত ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্টে রানার আপের কৃতিত্ব অর্জন করেন। স্বাধীনতা পরবর্তীকালে শায়েস্তাগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের কৃতী ছাত্র, যারা ব্যাডমিন্টন খেলায় হবিগঞ্জ জেলাসহ জাতীয় পর্যায়ে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছিলেন, তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য-
নিরঞ্জন পাল- দাউদনগর বাজার, আব্দুল মোক্তাদির মুকুল- দাউদনগর বাজার, আলতাব আলী- ঠিকাদার বাড়ী, পশ্চিম লেঞ্জাপাড়া।

সৈয়দ অলিউর রহমান, দাউদনগর : জাতীয় ক্রীড়াবিদ হিসেবে দেশব্যাপী তার পরিচিতি ছিল। তিনি বৃহত্তর সিলেট জেলায় ব্যাডমিন্টনে একক ও দ্বৈত খেলায় ১১ বছর চ্যাম্পিয়ন ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ জাতীয় ব্যাডমিন্টন চ্যাম্পিয়নশিপ প্রতিযোগিতায় বৃহত্তর সিলেট জেলার পক্ষে তৃতীয়বার সুনামের সাথে অংশগ্রহণ করেন। তিনি বাংলাদেশ সরকারের জাতীয় ব্যাডমিন্টন প্রশিক্ষক। ১৯৮১ সালের ১ জানুয়ারি বৃহত্তর সিলেটের কৃতী খেলোয়াড় হিসেবে বঙ্গভবনে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের দেয়া রাষ্ট্রীয় সংবর্ধনায় গ্রহণ করেন। এছাড়াও তিনি সরকার কর্তৃক শ্রেষ্ঠ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে মিসর ও সৌদি আরবে শিক্ষা সফরেও অংশগ্রহণ করেন।
মো. আতাউর রহমান মাসুক- দাউদনগর, মো. আলাউদ্দিন খোকন- দাউদনগর, কাজী আব্দুল মোক্তাকিম শামীম- চর নূর আহমেদ, সৈয়দ আকিকুর রহমান রাসেল- (হবিগঞ্জ জেলা দলের খেলোয়াড় ছিলেন, দাউদনগর)।

মো. ফয়সল আহমেদ, তালুগড়াই : বর্তমান প্রজন্মের একজন পরিচিত খেলোয়াড় ও সংগঠক। তিনি হবিগঞ্জ জেলা ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্টের একজন জেলা চ্যাম্পিয়ন খেলোয়াড়। হবিগঞ্জ জেলা, শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজার, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় ব্যাডমিন্টন খেলায় অংশগ্রহণ করেন।

হকি, অ্যাথলেটিকস, গোলক নিক্ষেপ, চাকতি
নিক্ষেপ ও দাবা খেলায় যারা পারদর্শী ছিলেন-

হকি : মো. করম আলী (পশ্চিম লেঞ্জাপাড়া), শচীন্দ্র দাশ (চরহামুয়া), আকছির মিয়া, সৈয়দ অলিউর রহমান (দাউদনগর) প্রমুখ।

অ্যাথলেটিকস : বাবর আলী (কাজীরগাঁও), মো. আব্দুল জলিল (প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক, লাকড়ীপাড়া), মো. আব্দুল আউয়াল (বিরামচর), মো. রহিম আলী (প্রাক্তন গেম টিচার, শায়েস্তাগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়), আলী আকবর চৌধুরী (ওয়ার্কশপ এরিয়া), মো. আব্দুল কাইয়ুম (উবাহাটা), নূর হোসেন (কিশোরগঞ্জ), মো. কুতুব আলী (আতুড়াকান্দি), মো. আব্দুল হাই (বড়কোটা), মীর রায়হান (নূরপুর), স্বর্গীয় ধীরেন্দ্র শীল (গঙ্গানগর), রেজাউল করিম ভুট্টো (শায়েস্তাগঞ্জ পুরানবাজার), প্রণব পাল (দাউদনগর বাজার), মো. তরিকুল ইসলাম হারুন (পশ্চিম লেঞ্জাপাড়া), মো. আব্দুল কাইয়ুম (পূর্ব লেঞ্জাপাড়া), মো. আশিকুর রহমান নাসিম (চর নূর আহমেদ), মো. কাউছার মিয়া তালুকদার, মো. কুদ্দুছ মিয়া তালুকদার (অভি) ও মো. জাকির মিয়া তালুকদার (বিরামচর), আকিকুর রহমান টিপু (পশ্চিম লেঞ্জাপাড়া)।

দাবা : মো. এংরাজ আলী (পশ্চিম লেঞ্জাপাড়া), মো. আলাউদ্দিন খোকন (দাউদনগর), মো. মো. তাজুল ইসলাম- ৯৮ ব্যাচ (বিরামচর), মো. ইকবাল মিয়া- ৯৬ ব্যাচ, মো. মুর্শেদ কামাল- ২০০০ ব্যাচ।

চাকতি নিক্ষেপ : সৈয়দ কমর উদ্দিন (দাউদনগর), মো. ফারুক আহমেদ (লস্করপুর), ধীরেন্দ্র শীল (গঙ্গানগর), মো. গিয়াস উদ্দিন (সহকারি শিক্ষক, শায়েস্তাগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়)।

গোলক নিক্ষেপ : আব্দুল মোছাব্বির দোলাল (লস্করপুর), মো. ফারুক আহমেদ (লস্করপুর), ধীরেন্দ্র শীল (গঙ্গানগর), মো. গিয়াস উদ্দিন (সহকারী শিক্ষক, শায়েস্তাগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়)।

বিশাল এক কর্মযজ্ঞের সংক্ষিপ্ত বিবরণ তুলে ধরা অত্যন্ত দুরূহ কাজ। তাই তো ক্রীড়া জগতের যেসব উজ্জ্বল নক্ষত্রের আলোয় আমরা আলোকিত, তাদের সবার পরিচিতি এখানে তুলে ধরতে পারিনি। কারো কারো নামও হয়তো সঠিকভাবে উল্লেখ করা হয়নি। যার দায় একান্তই আমার এবং এজন্য আমার দুঃখবোধ রয়ে গেল। আমার অনিচ্ছাকৃত এই সীমাবদ্ধতা আপনাদের মনঃপীড়ার কারণ হবে না বলেই আমার বিশ্বাস। আমার এই লেখা শেষ করে দুঃখ হচ্ছে, প্রয়াত ক্রীড়াশিক্ষক মো. রহিম আলী ও স্কাউটিং অন্তপ্রাণ মো. আব্দুল জলিল (প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক, শায়েস্তাগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়) প্রমুখ শ্রদ্ধাভাজন শিক্ষকের কারো কথাই বলা হলো না। যদি আবার কখনো সময় আসে অবশ্যই শ্রদ্ধার সঙ্গে তাদের স্মরণ করব। স্মরণ করব প্রিয় সতীর্থদের, আমি ভুলে গেলেও যারা আমাকে আজো মনে রেখে কৃতজ্ঞতা পাশে আবদ্ধ করে রেখেছেন। শতবর্ষের সুন্দরের আনন্দের এই মহামিলনের দিনে সব ব্যথা, বিভেদ ভুলে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আমাদের সবারই হোক এই অঙ্গীকারÑ ‘শায়েস্তাগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের সুমহান মর্যাদা উত্তরোত্তর ছাড়িয়ে যাক সমগ্র দেশে- বিশ্বব্যাপী’।

লেখক:সহকারী অধ্যাপক, শচীন্দ্র কলেজ, হবিগঞ্জ ও ক্রীড়া সংগঠক- ৮২ ব্যাচ


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি