ক্ষুদ্র্র ব্যবসায়ীদের অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনীতির প্রয়োজনীয়তায় গুরুত্বারোপ
প্রকাশিত : ১০:২১, ১ এপ্রিল ২০২১ | আপডেট: ২২:৪৮, ২ এপ্রিল ২০২১
মার্চেন্টস ডেভেলপমেন্ট ড্রাইভিং রুরাল মার্কেটস (এমডিডিআরএম) উদ্যোগ থেকে অর্জিত শিক্ষা ও এই উদ্যোগের অধীনে সম্পন্ন কাজ প্রদর্শনে ২৩ মার্চ রাজধানীর ওয়েস্টিন হোটেলে ‘লিভিং নো মাইক্রো মার্চেন্টস বিহাইন্ড ইন দ্য ডিজিটাল এরা ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক সম্মেলনের আয়োজন করে জাতিসংঘ ক্যাপিটাল ডেভেলপমেন্ট ফান্ড (ইউএনসিডিএফ)। ইউএনসিডিএফ পরিচালিত এই সম্মেলনটি এর কনসোর্টিয়াম পার্টনার (ডিনেট, বিডিএমএস এবং এফবিসিসিআই), নলেজ অ্যান্ড কমিউনিকেশন পার্টনার জিআইএফটি এবং ইভেন্ট পার্টনার এশিয়াটিকের সহযোগিতায় আয়োজন করা হয়।
সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিল্পসচিব কেএম আলী আজম। সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ডেলিগেশনের সহযোগিতা প্রধান মরিজিও চিয়ান এবং ইউএনডিপি বাংলাদেশের স্থানীয় প্রতিনিধি সুদীপ্ত মুখোপাধ্যায়। ইউএনসিডিএফ’র ইনক্লুসিভ ডিজিটাল ইকোনোমিজ এর ডিজিটাল হাব ফর এশিয়া’র আঞ্চলিক পরিচালক মারিয়া পারদোমো সম্মেলনটি সঞ্চালনা করেন।
আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ‘২০১৭ সালে এউএনসিডিএফ এর অধীনে বাস্তবায়িত এমডিডিআরএম প্রকল্পের যাত্রা শুরুর পর বাংলাদেশে মাইক্রো-রিটেইল ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে লক্ষ্য অর্জনে কাজ করছে। যার ফলে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী আমাদের অর্থনীতির কেন্দ্র হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।‘
বৈশ্বিক মহামারির সময়ে নতুন সুযোগের সন্ধান এবং নীতিনির্ধারক, শিক্ষাবিদ, শিল্প ও ডিজিটাল ইকোসিস্টেম নেতৃবৃন্দদের একত্রিতকরণ এবং এমডিডিআরএম (মার্চেন্টস ডেভেলপমেন্ট ড্রাইভিং রুরাল মার্কেটস) উদ্যোগের অধীনে পরিচালিত কার্যক্রম প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে এই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছিল।
অনুষ্ঠানের অন্যতম বক্তা মিস টিনা জাবিন, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক, স্টার্টআপ বাংলাদেশ বলেন, ‘আমরা অর্থ, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে অর্থায়নের মাধ্যমে উদ্যোক্তাদের সহায়তা করছি।’
অক্সফামের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, জনসংখ্যার ওপরের দিকে থাকা ১ শতাংশ মানুষের কাছে নীচের দিকে থাকা ৬.৯ বিলিয়ন মানুষের চেয়ে বেশি সম্পদ রয়েছে। এ বৈষম্যের মূল কারণ হলো পিরামিডের নীচে থাকা মানুষদের জন্য সমান অর্থনৈতিক সুযোগের অভাব। সৌভাগ্যক্রমে, বিগত কয়েক বছরে ডিজিটাল প্রযুক্তি পিরামিডের নিচের দিকে থাকা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী এবং খুচরা বিক্রেতাদের ক্ষমতায়নের মাধ্যমে সমতা আনার ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে।
নীতিনির্ধারক এবং বেসরকারি খাতের অংশীদারদের জন্য পরবর্তী পদক্ষেপ হওয়া উচিৎ ত্বরান্বিত এ ডিজিটালাইজেশনের প্রবণতার ওপর ভিত্তি করে এগিয়ে যাওয়া। এই প্রয়াসের সমর্থনে জাতিসংঘ ক্যাপিটাল ডেভেলপমেন্ট ফান্ড (ইউএনসিডিএফ) ২০১৭ সাল থেকে এমডিডিআরএম (মার্চেন্টস ডেভলপমেন্ট ড্রাইভিং রুরাল মার্কেটস) নামক উদ্যোগটি চালিয়ে যাচ্ছে এবং বাংলাদেশে দুই কোটি খুচরা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর কাছে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছে। এই উদ্যোগে অর্থায়ন করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। ডিনেট, বিডিএমএস এবং এফবিসিসিআইয়ের সাথে অংশীদারিত্বের মাধ্যমে এটি আয়ের বৈচিত্র্য, ব্যবসা প্রবৃদ্ধি এবং বাংলাদেশের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য অর্থনৈতিক সুযোগের ক্ষেত্রে উদ্ভাবনকে উৎসাহ প্রদানে কাজ করছে।
তবে, এক্ষেত্রে, সরকার, উন্নয়ন অংশীদার এবং বেসরকারি খাত কর্তৃক গৃহীত বিভিন্ন উদ্যোগ সত্ত্বেও কিছু প্রতিবন্ধকতা রয়ে গেছে যা আশু চিহ্নিত করা প্রয়োজন। এসব প্রতিবন্ধকতার মধ্যে রয়েছে খুচরা ব্যবসায় সকল লিঙ্গের মানুষের অংশগ্রহণ, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের আর্থিক এবং অ-আর্থিক উভয় ধরণের প্রয়োজন শনাক্তে ডিজিটাল মাধ্যমের ব্যবহার, বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে সাপ্লাই চেইনের সমন্বয়, আনুষ্ঠানিকীকরণের ক্ষেত্রে নীতিগত উদ্যোগ এবং ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের সুবিধায় বৈশি^ক মহামারির ক্ষতি থেকে উত্তরণে সহায়তা প্রক্রিয়া। এসব বিষয়ে সম্মেলনে গুরুত্ব আরোপ করা হয়। এছাড়াও, সম্মেলনে ‘মাইক্রো-এন্টারপ্রাইজগুলোর জন্য ডিজিটাল উদ্ভাবন-কীভাবে অ-আর্থিক পরিষেবা সংযোগ করা যায়’, ‘বৈশি^ক মহামারি চলাকালীন ও পরে ক্ষুদ্র ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা অর্জন’,
‘বাংলাদেশের খুচরা ব্যবসায় নারীদের ভবিষ্যৎ’ এবং ‘নীতি নির্ধারক সুপারিশ: সর্বশেষ পর্যায়ের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য উদ্ভাবনী আর্থিক সমাধান প্রদানে বিভিন্ন খাতের মধ্যে সমন্বয়ে সরকারের পদক্ষেপ’ এ বিষয়গুলোর ওপরে প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
আরকে//
আরও পড়ুন