গণপিটুনিতে হত্যা, নাহিদ ও সারজিসের নিন্দা
প্রকাশিত : ১৯:০৬, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | আপডেট: ২২:৩৩, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) গণপিটুনিতে দুইজনকে হত্যার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তীব্র সমালোচনা ও প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। এর মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনায় তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।
হত্যার বিষয়টি দুঃখজনক বলে অতি দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থার দাবি জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম।
আজ বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে গণপিটুনিতে মৃত্যুর ঘটনা দুঃখজনক। অতিদ্রুত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে।
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢালাওভাবে ‘বহিরাগত’ নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়, উচিতও নয়। সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রয়োজন যাতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে একাডেমিক পরিবেশ বিঘ্ন না ঘটে। একসঙ্গে রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক পরিসর যাতে উন্মুক্ত থাকে এবং জনগণের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের মিথস্ক্রিয়ারও সুযোগ থাকে। ‘বহিরাগত’ জনগণের থেকে ঢাবি ক্যাম্পাসে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ অতি জরুরি।’
দ্বিতীয়ত, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সুনির্দিষ্ট অভিযোগসহ এই অভ্যুত্থান ও বিগত বছরগুলোতে যারা ছাত্র-ছাত্রীদের নিপীড়ন করেছে তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের পক্ষ থেকে অতিদ্রুত মামলা করতে হবে।
ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিশন করে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রশাসনের উদ্যোগে নির্যাতনকারীদের তালিকা প্রণয়ন করতে হবে এবং প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
নির্যাতনকারী ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অতিদ্রুত আইনি ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা না নিলে উত্তেজিত মবকে নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হবে না। তবে শিক্ষার্থীদেরও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। মবজাস্টিস গ্রহণযোগ্য নয় এবং কোনো সমাধানও আনবে না।
এদিকে এই হত্যাকাণ্ডে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম। আজ বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এক ফেসবুক পোস্টে তিনি এ প্রতিক্রিয়া জানান।
সারজিস লিখেছেন, মানসিক ভারসাম্যহীন হোক, চোর হোক অথবা দাগী আসামী, কাউকে এভাবে পিটিয়ে মেরে ফেলার অধিকার বা সাহস কোনো একজন ব্যক্তি কীভাবে পায়? মব জাস্টিসের নামে নরপশুর ন্যায় নির্মমতা কখনোই সমর্থনযোগ্য নয়৷ আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার ক্ষেত্রে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির এক্সামপল সেট হওয়া প্রয়োজন৷
তিনি আরও লিখেছেন, কে কোথায় পড়ে, কি করে সেটা মুখ্য নয়৷ অন্যায় সবসময় অন্যায়৷ একটা জলজ্যান্ত মানুষকে পিটিয়ে মেরে ফেলতে যাদের বুক একবারের জন্যও কাঁপে না তাদের মধ্যে মনুষ্যত্ব থাকতে পারে না৷
সবশেষে সমন্বয়ক লিখেছেন, এই মানুষটার শরীরটা দেখে বুয়েটের অবরারের কথা বারবার মনে পড়েছে৷ সকল অন্যায়কারীর বিচার হোক৷ নির্দোষ কেউ শাস্তি না পাক৷ একবার যদি অন্যায়কারীরা কোনো সূত্র ধরে ছাড় পেয়ে যায়, তবে তা পরবর্তী অসংখ্য অন্যায়ের প্রশ্রয় হিসেবে দৃষ্টান্ত তৈরি করে৷ নতুন বাংলাদেশে সেই সুযোগ যেন কেউ না পায়৷
এসএস//
আরও পড়ুন