গর্ভপাতের পর কী করবেন?
প্রকাশিত : ১১:২০, ২২ ডিসেম্বর ২০২১
বিভিন্ন কারণে নারীদের গর্ভপাত হতে পারে। শারীরিক-মানসিক উভয় ক্ষেত্রেই কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়ায় এই গর্ভপাত। তবে কোনও নারীর সঙ্গে এমন ঘটনা ঘটলে, তাদের স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়া হয়ে ওঠে অত্যন্ত জরুরি। মিসক্যারেজ বা গর্ভপাতের পর নারীরা অবসাদের শিকার হন, অপরাধ বোধে ভোগেন তারা, পাশাপাশি তাদের মনে চাপা ক্ষোভও দানা বাঁধে। মানসিক সমস্যার পাশাপাশি শারীরিক সমস্যাও দেখা দিতে পারে এই সময়। তাই এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে সঠিক দেখাশোনা অত্যন্ত জরুরি।
গর্ভপাতের পর কীভাবে নিজের যত্ন নেবেন চলুন জেনে নেওয়া যাক।
> এ সময় পুষ্টিকর খাওয়া-দাওয়ার ওপর অধিক জোর দিতে হবে। সবুজ শাকসবজি, শুকনো ফল, আদা, রসুন, তিল ও দুধ অবশ্যই নিজের খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করবেন। ভুলেও জাঙ্ক ও প্রক্রিয়াজাত খাবার খাবেন না। চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী ভিটামিন ডি, আয়রন-ক্যালশিয়ামের সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করতে পারেন।
> গর্ভপাতের পর ভারী কাজ করা থেকে দূরে থাকুন। এমনকি কাপড় কাচা, বাসন ধোয়া, পানির বালতি তোলার মতো কাজও করবেন না। পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন এবং প্রতিদিন কমপক্ষে ৮ ঘণ্টা ঘুমান।
> গর্ভপাতের পর শরীরে পানির অভাব দেখা দেয়। তাই এ সময় কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে বাঁচার জন্য এবং শরীরকে হাইড্রেট রাখার জন্য গরম পানি পান করুন।
> গর্ভপাতের ব্যথা ও কষ্ট সহ্য করার পর শান্ত এবং অবসাদ মুক্ত থাকতে বডি ম্যাসাজ করান। সরষে বা তিল তেল দিয়ে মালিশ করালে গর্ভপাতের পর শরীরে যে ব্যথা হয় তা থেকে মুক্তি পেতে পারেন।
>গর্ভপাতের পর শরীরে মোচড় দেখা দিতে পারে। সে ক্ষেত্রে গরম পানির ব্যাগ দিয়ে সেক দিলে ব্যথা কমতে পারে।
>গর্ভপাতের পর সঙ্গে সঙ্গে গর্ভধারণ করার মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসুন। গর্ভপাতের তিন মাস পর গর্ভধারণের পরিকল্পনা করতে পারেন। আবার ৬ মাস পর গর্ভপাত হয়ে থাকলে ১ বছর পর্যন্ত গর্ভধারণের বিষয়ে কোনও চিন্তাভাবনা করবেন না। অন্য দিকে গর্ভপাতের ৮ সপ্তাহ পর সম্ভোগ শুরু করতে পারেন।
>গর্ভপাতের পর নিয়মিত চিকিৎসা করিয়ে যান। নিজের শরীরে কোনও আকস্মিক পরিবর্তন লক্ষ্য করলে তা চিকিৎসককে জানাতে ভুলবেন না। এ সময় রক্ত কমে যেতে পারে, মথা ঘোরা, বমি পাওয়া, গা গোলানোর মতো সমস্যাও দেখা দিতে পারে। এমন কিছু হলে তৎক্ষণাৎ চিকিৎসককে জানান।
পরিবার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে
গর্ভপাতের পর যে কোনও নারীই মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েন। এজন্য আবার নারীদেরই দায়ী করা হয়। কিন্তু জেনে রাখা ভালো, এর জন্য নারীরা কোন ভাবেই দোষী নন।
তাই এই পরিস্থিতিতে সমালোচনা না করে, তাদের পাশে থাকুন। স্বামী এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা হতাশাগ্রস্ত নারীর সঙ্গে সহজ-সরল ব্যবহার করুন, হাসিঠাট্টায় পরিবেশ ভরিয়ে রাখুন। মন যত ভালো হবে, ততই সমস্ত মানসিক ও শারীরিক সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পারবেন তারা।
সূত্র: এই সময়
এমএম/