ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪

ঘুরে আসতে পারেন কুমিল্লার দর্শণীয় স্থানগুলো

সাদ্দাম উদ্দিন আহমদ

প্রকাশিত : ১৮:৫৫, ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৮ | আপডেট: ১৮:০৭, ৩ মার্চ ২০২২

ভ্রমণপ্রেমীরা অনেক অর্থ ব্যয় করে অনেক দেশ ভ্রমণ করে থাকেন। বিশেষ করে অনেকেই দূরের কোনো দেশ ভ্রমণ করে থাকেন। কিন্তু ঢাকার কাছেই ভ্রমণ করার মতো অনেক দর্শণীয় স্থান রয়েছে কুমিল্লা জেলায়। মনকে চাঙা ও সতেজ করার জন্য ঘুরে আসতে পারেন এই দর্শণীয় স্থানগুলো।

শালবন বৌদ্ধ বিহার

বাংলাদেশের প্রাচীন সভ্যতার নিদর্শনগুলোর মধ্যে অন্যতম নিদর্শন শালবন বৌদ্ধ বিহার। লালমাই-ময়নামতি প্রত্নতন্ত্রের অসংখ্য প্রাচীন স্থাপনা রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম এই বৌদ্ধ বিহার। এখানে ৭ম-১২শ শতকের প্রত্নতাত্বিক নিদর্শন রয়েছে।

আয়াতাকার এই বিহারের প্রতিটা বাহুর দৈর্ঘ প্রায় ১৬৭ মিটার। চারদিকের দেয়াল পাঁচ মিটার পুরু। কক্ষগুলো নির্মাণ করা হয়েছে বিহারের চার দিকের বেষ্টনীর দিকে পিঠ করে। কক্ষের মাঝে দেয়ালগুলি ১.৫ মিটার চওয়া। বিহারের ভিতরে প্রবেশ এবং বাহিরে আসার জন্য একটা রাস্তায় রয়েছে। উত্তর ব্লকের মাঝমাঝি রয়েছে এই রাস্তাটি। কেন্দ্রীয় মন্তিরটি বিহারের মাঝে ছিল।

বিহারের ১৫৫টি কক্ষ রয়েছে, যার সামনে ৮.৫ ফুট চওড়া টানা বারান্দা ও শেষ প্রান্তে অনুচ্চ দেয়াল রয়েছে। কক্ষের দেয়ালে রয়েছে তিনটি করে কুলুঙ্গী। কুলুঙ্গীতে রাখা হতো দেবদেবী তেলের প্রদীপসহ অনেক কিছুই। কক্ষগুলোতে বৌদ্ধ ভিক্ষুরা থাকতেন, বিদ্যাশিক্ষা ও ধর্মচর্চা করতেন।

এখানে একটি হল ঘড় রয়েছে, যেটিকে খাবার ঘড় বলে ধারনা করা হয়। হল ঘড়ের অবস্থান প্রবেশ দ্বারের পাশে দক্ষিণ-পূর্ব কোণে। হল ঘড়টি রয়েছে। চার দিকে দেয়াল ও সামনে চারটি বিশাল গোলাকার স্তম্ভের ওপর নির্মিত।

এছাড়াও এখানে ৮টি তাম্রলিপি, প্রায় ৪শটি স্বর্ণ ও রৌপ্য মুদ্রা ছাড়াও অসংখ্য পোড়া মাটির ফলক বা টেরাকোটা, সিলমোহর, ব্রৌঞ্জ ও মাটির মূর্তি পাওয়া গেছে।

কিভাবে যাওয়া যায়: দেশের যে কোন জেলা হতে প্রথমে কুমিল্লায় আসুন, কুমিল্লা থেকে ট্যাক্সি যোগে যাওয়া যায়। কুমিল্লা সেনানিবাস বাসট্যান্ড থেকে যাতায়াতের জন্য ট্যাক্সি, বাস, রিক্সা রয়েছে।

গোমতী নদী

গোমতীকে এক সময় কুমিল্লার দুঃখ বলে অনেকেই মনে করলেও এখন ধারনা ভিন্ন। নীরে উভয় তীরে বাঁধ থাকার ফলে কৃষি ও সেচ কাজে বয়ে এনেছে সুফল। নদীর উভর তীরে পাকা রাস্তা করা হয় তাহলে এটি পর্যটনের গুরুত্বপূর্ণ স্থান হিসেবে গড়ে উঠবে। কুমিল্লা জেলার আদর্শ সদর উপজেলার কটকাবাজার সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। বুড়িচং, ব্রাক্ষ্মণপাড়া, দেবিদ্বার, মুরাদনগর, তিতাস ও দাউদকান্দি উপজেলা হয়ে মেঘনা নদীতে পতিত হয়েছে। বাংলাদেশের অংশে নদীটির দৈর্ঘ্য ৮৩ কিলোমিটার।

কিভাবে যাওয়া যায়: কুমিল্লার কোম্পানি বাজার থেকে বাস অথবা ট্যাক্সিযোগে যাওয়া যায়। দূরত্ব ৩ কিলোমিটার।

কবি তীর্থ দৌলতপুর (জাতীয় কবি কাজী নজরুলের স্মৃতি বিজড়িত স্থান)

কুমিল্লার কবি তীর্থ দৌলতপুর কাজী নজরুল ও তার স্ত্রী নার্গিস এর স্মৃতি বিজড়িত স্থান । এখানে বসে কবি ১৬০টি গান ও ১২০ কবিতা রচনা করেন তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘বেদনা-অভিমান’, ‘অবেলা’, ‘অনাদৃতা’, ‘পথিক প্রিয়া’, ‘বিদায় বেলা’ এছাড়াও দোলনচাপা, অগ্নিবীণা, ছায়ানট, ঝিঙ্গেফুল, পুবের হাওয়া প্রভৃতি কাব্যগ্রন্থ। কুমিল্লা শহড় ও জেলার মুরাদনগরে পাঁচ বারে ১১ মাসের বেশি সময অবস্থান করেছিলেন।

কুমিল্লায় কবির প্রথম আগমন ঘটে মুরাদনগর উপজেলার দৌলতপুর গ্রামে, দৌলতপুরে আলী আকবর খানের বাড়িতে নজরুল ছিলেন।

প্রমীলা দেবীর বাড়ি, ধর্মসাগরের পশ্চিম পাড়ে কবিতা গানের আসর, নানুয়া দীঘির পাড়, দারোগা বাড়ি, ঝাউতলায় গ্রেফতার হওয়া, বসন্ত স্মৃতি পাঠাগার, ইউছুফ স্কুল রোড, মহেশাঙ্গন, নবাব বাড়ি, ধীরেন্দ্র নাথ দত্তের বাড়ি, নজরুল এভিনিউ, কান্দিরপাড়, ঝাউতলা, কুমিল্লা বীরচন্দ্র নগর মিলনায়তন ও মাঠ, দক্ষিণ চর্থায় শচীন দেব বর্মনের বাড়ি, রানীর দীঘির পাড়, রেলস্টেশন, কোতোয়ালি থানা, কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগার এবং মুরাদনগরের দৌলতপুরসহ অসংখ্য স্থানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে কবির স্মৃতিচিহ্ন।

১৯৬২ কুমিল্লার তৎকালীন জেলা প্রশাসক কান্দিরপাড়-ধর্মপুর রেলস্টেশন সড়কের নামকরণ করেন নজরুল এভিনিউ। ১৯৮৩ সালে কবির স্মৃতিবিজড়িত স্থানসমূহে তৎকালীন শ্বেতপাথরের ফলক লাগানো হয়। এসব ফলকে কবির গান, কবিতা, ছড়া ও বাণী তুলে ধরা হয়। নজরুল ইসলাম স্মরণে নির্মিত বিভিন্ন স্মৃতিচিহ্ন    

কিভাবে যাওয়া যায়: বাসে ও ট্যাক্সিতে যাতায়াত করা যায়।

উটখাড়া মাজার

বাংলাদেশ ফকির-দরবেশ-আউলিয়ার দেশ । চট্রগ্রামে বার আউলিয়া, সিলেটে  তিনশত  ষাট আউলিয়া আর তিনশত আউলিয়ার বিচরণ ভূমি  কুমিল্লা।

সম্ভবত- ত্রয়োদশ শতাব্দীর তৃতীয় দশকের প্রথম দিকে হজরত শাহজালাল (র.)এর শিষ্যদের প্রতি নির্দেশনা ছিল, তাদের এই বাহন, উটই তাদের দ্বীন প্রচার কেন্দ্র নির্দিষ্ট করে দেবে, তাদের উট যেখানে গিয়ে থেমে যাবে বা উটের পা বালি কিংবা মাটিতে গেড়ে যাবে সেখানেই তারা স্থায়ীভাবে বসতি স্থাপন ও ইসলাম ধর্ম প্রচার শুরু করবে।

কুমিল্লা জেলার দেবিদ্বার উপজেলার এলাহাবাদ গ্রামে এসে বালিতে উটের পা গেড়ে গিয়ে উট থেমে গেলে তারা এখানেই বসতি স্থাপন ও ইসলাম ধর্মপ্রচার শুরু করেন।

বর্তমানে এলাহাবাদ গ্রামের ওই জায়গাটি উটখাড়া (গ্রামের পরিচয়ে) মাজার নামে পরিচিত এবং এ অঞ্চলে আল্লাহ্`র `আবাদ` প্রচার ও প্রসার শুরু করায় উটখাড়াসহ বিশাল এলাকা আল্লহর আবাদ থেকে কালক্রমে `এলাহাবাদ` নামে পরিচিতি লাভ করে। উটখাড়া মাজারটি  কুমিল্লা জেলা সদর থেকে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়ক হয়ে প্রায় ২৯ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে এবং দেবিদ্বার সদর থেকে পূর্ব-দক্ষিণে প্রায় ৭ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।

বিভিন্ন স্থাপনাসহ একটি দিঘি ও একাধিক ছোট পুকুর রয়েছে ও মাজারে ৪১টি কবর আছে। তবে বংশানুক্রমে হজরত শাহ কামাল (র.) ও হজরত শাহ জামাল (র.) এর অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায় না।

কিভাবে যাওয়া যায়: দেবিদ্বার শহর হতে রিকসা অথবা ট্যাক্সিযোগে যাওয়া যায়।

বীরচন্দ্র গণপাঠাগার ও নগর মিলনায়তন

কুমিল্লার গনপাঠাগার ও নগর মিলনায়তন, যা কুমিল্লা টাউন হল নামে পরিচিতি পেয়েছে। পাঠাগারে এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকা, রাজমালা থেকে শুরু করে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের কবি, সাহিত্যিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় মনীষীদের রচনাসমগ্র রয়েছে। এখানে  বাংলা ভাষার ২৪ হাজার বই ও ইংরেজি ভাষার ০৬ হাজার বই আছে। ৬৩টি আলমারি সজ্জিত আছে ৩০ হাজার বই দিয়ে। সদস্যরা একসঙ্গে এক সপ্তাহের জন্য ৩টি বই নিতে পারেন।

টাউন হল ভবনের দ্বিতীয় তলায় অধ্যয়নের ব্যবস্থা আছে। টাউন হলের নিচতলায় সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত, এখানে আছে ৪৪টি জাতীয় আঞ্চলিক, স্থানীয় দৈনিক পত্রিকা ও সাময়িকী। পুরোনো পত্রিকার কপি দেখতে ব্যাবস্থাও আছে। এ  টাউন হলে পদধূলি দিয়েছেন মহাত্মা গান্ধী, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম, দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাস, মওলানা ভাসানী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আরও অনেক মনীষি ।

কিভাবে যাওয়া যায়: রিক্সা অথবা ট্যাক্সি যোগে যাওয়া যায়।

শাহ সুজা মসজিদ- 

শাহ সুজা মসজিদ ৩৫২ বছর ধরে স্ব মহিমায় টিকে আছে। মসজিদটি পাক ভারত উপমহাদেশের প্রাচীন মসজিদগুলোর মধ্যে অন্যতম । এই মসজিদ  আয়তনের দিক দিয়ে খুব বেশী বড় না হলেও এর কৃষ্টি, ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং সার্বিক অবয়ব বহন করে আভিজাত্যের প্রতীক ।

এর বাহ্যিক কারুকাজ প্রমাণ করে তৎসময়ে এর প্রতিষ্ঠাতাদের স্রষ্টার প্রতি সুবিশাল আনুগত্য এবং রুচির পরিচায়ক। সাম্প্রতিকালে মসজিদের দুই প্রান্তে ২২ ফুট করে দুটি কক্ষ এবং সম্মুখ ভাগে ২৪ ফুট প্রশস্ত একটি বারান্দা নির্মাণ করায় আদি রূপ কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে। মসজিদের উত্তর-পূর্ব কোণে নির্মাণ করা হয়েছে একটি সুউচ্চ মিনার।

উত্তর দক্ষিণে লম্বা মসজিদের চার কোনে ৪টি অষ্ট কোনাকার মিনার ছিল। এগুলি মসজিদের ছাদের অনেক উপরে উঠে গেছে। সামনের দেয়ালে ছিল ৩টি দরজা এবং ভেতরে পশ্চিম দেওয়ালে ছিল ৩টি মেহরাব। কেন্দ্রীয় প্রবেশ পথ ও মেহরাব অন্য দুটির চেয়ে অনেক বড়। কেন্দ্রীয় দরজাটির বাইরের দিকে কিছুটা প্রসারিত এবং দুপাশে আছে দুটি সরু গোলাকার মিনার। মসজিদের সম্মুখ ভাগে প্যানেল দ্বারা সুশোভিত ছিল এবং কার্নিশের উপরে ছিল ব্যাটলম্যান্ট, তার ওপরে ছিল একটি গম্বুজ।

কুমিল্লার গোমতীর তীরের শাহ সুজা মসজিদটি পাক ভারত উপ মহাদেশের প্রাচীন সভ্যতার অপূর্ব নিদর্শন।

কিভাবে যাওয়া যায়: রিক্সা অথবা ট্যাক্সি যোগে যাওয়া যায়।

বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমী

রাজধানী ঢাকা থেকে ১০০ মিলোমিটার দূরত্বে কুমিল্লার ময়নামতি-লালমাই এর পাহাড়ি অঞ্চলে কোটবাড়ির, আঁকাবাঁকা পাহাড়ি এলাকায় প্রায় ১৫৬ একর জমির উপর বিএআরডি ক্যাম্পাসটি অবস্থিত।

সেখানে বিশাল অংশ জুড়ে রয়েছে রয়েছে অর্কিড গাছ, সবজি বাগান, নার্সারি, পার্ক। এখানকার রাস্তাগুলোর পাশে রয়েছে নয়নাভিরাম ছায়াবৃক্ষ। এলাকার ভৌগলিক চরিত্রের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে তৈরি কারা হয়ছে এখানকার অফিস, বাংলো, ডরমিটরি ও কর্মকর্তা কর্মচারীদের বাসভবনগুলো। সবুজে ঘেরা বিএআরডি ক্যাম্পাসটিতে বছরের সব সময়ই একধরনের প্রশান্তি বিরাজ করে।

কিভাবে যাবেন-

কুমিল্লা শহর থেকে ৮ কিলোমিটার দূরত্বে সদর দক্ষিণ উপজেলার কোটবাড়ী নামক স্থানে বার্ডের অবস্থান। বিএআরডি তে যেতে হলে ঢার গুলিস্থান থেকে বাসে উঠে কুমিল্লা সেনানিবাসে নেমে যাওয়াই ভাল কারন সড়কপথে বাসগুলোর গন্তব্য হল কুমিল্লা শহর আর বিএআরডি সেনানিবাসের কাছেই অবস্থিত। সেনানিবাস থেকে সিএনজি অটোরিকশায় করে ৬০ টাকা থেকে ৮০ টাকা ভাড়ায় বিএআরডিতে যেতে পারবেন যদিও অটোরিকশা চালক আপনার কাছে এর চেয়ে বেশি ভাড়া চাইতে পারে। এছাড়া সেনানিবাস থেকে বিএআরডি তে হিউম্যান হলার অথবা মিনিবাসে করে ১০ টাকা থেকে ১৫ টাকা ভাড়ায় যেতে পারবেন। সেনানিবাস থেকে বিএআরডিতে পৌঁছাতে ১০ থেকে ১৫ মিনিট সময় লাগবে।

ময়নামতি ওয়ার সিমেট্রি 

ময়নামতি ওয়ার সিমেট্রি বাংকুমিল্লাতে অবস্থিত কমনওয়েলথ যুদ্ধ সমাধি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে বার্মায় সংঘটিত যুদ্ধে যে ৪৫০০০ কমনওয়েলথ সৈনিক নিহত হন, তাদের স্মৃতি রক্ষার্থে মায়ানমার (তৎকালীন বার্মা), আসাম, এবং বাংলাদেশে ৯টি রণ সমাধিক্ষেত্র তৈরি করা হয়েছে। বাংলাদেশে দুটি কমনওয়েলথ রণ সমাধিক্ষেত্র আছে, যার একটি কুমিল্লায় এবং অপরটি চট্টগ্রামে অবস্থিত। প্রতিবছর প্রচুর দেশি-বিদেশি দর্শনার্থী যুদ্ধে নিহত সৈন্যদের প্রতি সম্মান জানাতে এ সমাধিক্ষেত্রে আসেন।

ময়নামতি ওয়ার সিমেট্রি, কুমিল্লাতে সমাহিত ব্যক্তিগণ যে সব দেশের বাহিনীতে কর্মরত ছিলেন, সেগুলো হলো- যুক্তরাজ্য    ৩৫৭, কানাডা ১২, অস্ট্রেলিয়া    ১২, নিউজিল্যান্ড ০৪,  দক্ষিণ আফ্রিকা       ০১,  অবিভক্ত ভারত* ১৭৮,  রোডেশিয়া ০৩,  পূর্ব আফ্রিকা       ৫৬,  পশ্চিম , আফ্রিকা    ৮৬,  বার্মা (বর্তমান মিয়ানমার)       ০১,  বেলজিয়াম  ০১,  পোল্যান্ড      ০১,  জাপান  ২৪,

নিরিবিলি শান্ত পরিবেশে নির্বিঘ্নে কাটিয়ে দিতে পারবেন বেশ কিছুক্ষণ। এখানের পরিবেশটা সবুজে ঘেরা নানা ফুলগাছে বেষ্টিত।

সময়সূচি-

সমাধিস্থলটি সব সময়ই খুব সুন্দর করে সাজানো-গোছানো থাকে। প্রতিদিন সকাল ৭টা থেকে দুপুর ১২টা এবং দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত দর্শনার্থীরা দেখতে পারেন। এ ছাড়া ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার জন্য বছরে দুবার  তিন দিন করে মোট ছয়দিন  সমাধিস্থলে দর্শনার্থীদের প্রবেশ বন্ধ থাকে। ভেতরে প্রবেশের আগেই মূল ফটক থেকে কিছু নির্দেশাবলি দেওয়া আছে।  বসে গল্প করবেন না, গেট বন্ধ থাকলে খোলার জন্য অনুরোধ করা যাবে না, যাঁরা শায়িত আছেন তাদের প্রতি যথাযথ সম্মান দেখাতে হবে, এখানের পরিবেশ নোংরা করবেন না, ভিতরে ক্যামেরা নিয়ে প্রবেশ করবেন না।

যেভাবে যাবেন- কুমিল্লা শহর থেকে প্রায় ৯ কিলোমিটার দূরে কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্টের খুব কাছেই এই যুদ্ধ সমাধির অবস্থান। কুমিল্লা শহর হতে বাস অথবা ট্যাক্সি যোগে যাওয়া যায়।

সায়েদাবাদ থেকে কুমিল্লাগামী বাসে ঢাকা থেকে কুমিল্লাগামী যেকোনো বাসে উঠে কুমিল্লার ময়নামতি ক্যান্টনমেন্টে পর্যন্ত যেতে হবে। ভাড়া জনপ্রতি ১৫০ থেকে ২৫০ টাকা। সেখান থেকে উত্তরে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কে ১০ মিনিটের হাঁটার পথ, রিকশা অথবা অটোরিকশায়ও যাওয়া যায়। ভাড়া জনপ্রতি ১০ টাকা।

কোথায় থাকবেন- আবাসিক হোটেলের জন্য আপনাকে কুমিল্লা শহরে যেতে হবে।

নূর মানিকচর জামে মসজিদ

প্রায় ৫০০ বছরের মসজিদটি দেবীদ্বারের সবচেয়ে পুরাতন মসজিদ।  চুন-সুরকী দিয়ে নির্মিত মসজিদটির ভেতরে রয়েছে অপরুপ কারুকাজ। এই সমসজিদে এক সঙ্গে দাড়িয়ে প্রায় ২৫ লোক নামাজ আদায় করতে পারে। মসজিদটি দৈর্ঘ্য ১০ ফুট বাই ৫ ফুট।  মসজিদের চারকোনায় চার গম্ভুজ, আর ছাদে রয়েছে ৭ টি গম্ভুজ। সবগুলি গম্বুজই ধ্বংশ প্রায়।

কিভাবে যাওয়া যায়: নূরমাকিচর মসজিদটি কুমিল্লা শহর থেকে পশ্চিমে ১৮ কিলোমিটার দূরত্বে এবং `ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক`র নূরমানিকচর বাস স্টেশনের  থোকে আধা কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত। উভয় স্থান থেকে রিক্সা বা ট্যাক্সি যোগে যাওয়া যায়।

বায়তুল আজগর জামে মসজিদ

মসজিদটির নির্মাণশৈলির দিক থেকে দেশের বিখ্যাত মসজিদগুলোর অন্যতম মসজিদ হিসেবে দাবি করা হয়। নতুন এবং পুরাতন নির্মাণ পদ্ধতির সংমিশ্রণে অসংখ্য ক্যালিওগ্রাফিতে আঁকা মসজিদটি দেশব্যাপী দৃষ্টি আকর্ষণ করছে।

৪৮ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৩৬ ফুট প্রস্থের এই মসজিদটির চার কোনায় ৮০ ফুট উচ্চতার ৪টি মিনার ও ০৭ টি গম্ভুজ রয়েছে। মসিজদে লিখা আল্লাহু শব্দটি অনেক দূর থেকেও দেখা যায়, জ্বল জ্বল করতে থাকে তারকার মতো।

মসজিদের পাশে ফল ও ফুল বাগান এবং বিশালাকার জরাধার রয়েছে।

মোঘল তুর্কী ও পারস্যের সংমিশ্রণে কারুকার্য করা এই মসজিদটিতে ইট, সিমেন্ট, বালির পাশাপাশি চিনামাটি ও টাইলস ব্যবহার করা হয়েছে।

একটি আধুনিক মসজিদে যা কিছু থাকার কথা সবই এই মসজিদে আছে।

কিভাবে যাওয়া যায়: মসজিদ`টি কুমিল্লা জেলা সদর থেকে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়ক হয়ে উত্তর-পশ্চিম কোনে দেবীদ্বার পৌর এলাকায় এবং দেবীদ্বার সদর থেকে ২` কিলোমিটার পশ্চিম দক্ষিণে গুনাইঘর গ্রামে অবস্থিত। দেবিদ্বার বাসস্ট্যান্ড থেকে রিক্সা বা সিএনজি যোগে যাওয়া যায়।

যেভাবে যাবেন- সায়েদাবাদ থেকে কুমিল্লাগামী বাসে ঢাকা থেকে কুমিল্লাগামী যেকোনো বাসে উঠে কুমিল্লার ময়নামতি ক্যান্টনমেন্টে পর্যন্ত যেতে হবে। ভাড়া জনপ্রতি ১৫০ থেকে ২৫০ টাকা। সেখান থেকে আপনার গন্তেব্যে যাওয়ার জন্য সিএনজি / অটোক্সায় পেয়ে যাবেন।

এসএইচ/

 

 

 

 


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি