ঢাকা, শুক্রবার   ০৮ নভেম্বর ২০২৪

ঘূর্ণিঝড় রিমালে পটুয়াখালীতে দেড়শ’ কোটি টাকার বেশি ক্ষতি

পটুয়াখালী প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১০:৪০, ২৯ মে ২০২৪

ঘূর্ণিঝড় রিমাল চলে গেলেও পটুয়াখালী উপকূল জুড়ে রেখে গেছে শত শত ক্ষত চিহ্ন। রিমালে প্রভাবে পটুয়াখালীতে দেড়শ’ কোটি টাকারও বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিক তথ্য পাওয়া গেছে। 

ঘরবাড়ি, ফসল, গাছপালা, বেরীবাঁধ, মৎস্য, প্রাণী ও বনাঞ্চলের প্রাথমিক ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণ শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য প্রদান করা হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়বে বলে জানিয়েছেন পটুয়াখালী জেলা প্রশাসন।

জেলা দুর্যোগ ও ত্রাণ কর্মকর্তা সুনাম দেবনাথ জানান, ঘূর্ণিঝড় রিমালের আঘাতে পটুয়াখালীর কলাপাড়া ও রাঙ্গাবালী উপজেলা সব চেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জেলায় মোট নিহত হয়েছেন তিনজন। এছাড়া ঘরবাড়ি-ফসলসহ বিভিন্ন সেক্টরে শতাধিক কোটি টাকার আর্থিত ক্ষতি হয়েছে।

তিনি জানান, জেলায় প্রাথমিকভাবে ৮৪ হাজার ৫০০ পরিবারের ৩ লাখ ৩৮ হাজার মানুষ এ ঝড়ে সরাসরি ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৬ হাজার ৮২টি এবং আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৩১ হাজার ৬৯৪টি, ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৭৫ হাজার ৪০ হেক্টর জমির, প্রাণী সম্পদের ক্ষতি হয়েছে ২৯ হাজার ২৪০টির, বেরীবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ২৪ কিলোমিটার, ১৪ হাজার ৯২৮টি পুকুর ও মাছের ঘের  ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। 

এছাড়া ৩৬১ হেক্টর বনঞ্চল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে এ তথ্য জানান তিনি । এখনো ক্ষয়ক্ষতির আর্থিক হিসেব নিরুপণের কাজ চলমান আছে। পরবর্তীতে এটি আরও বাড়তে পারে বলে জানান জেলা দুর্যোগ ও ত্রাণ কর্মকর্তা।

পটুয়াখালী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: আরিফ হোসেন জানান, জেলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের দুটি বিভাগে মোট ২৪ কিলোমিটারের মতো বেরীবাঁধ রিমালের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কোন বাঁধ কি পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা নিরুপণ করতে আরও দু’একদিন সময় লাগবে। তবে প্রাথমিকভাবে ২০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণ করা হয়েছে বলে জানান তিনি। 

তিনি আরও জানান, বর্ষা মৌসুমের আগেই এ বাঁধ মেরামত করা না হলে ক্ষতির পরিমাণ আরো বেড়ে যাবে।

জেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো: কামরুল ইসলাম জানান, জেলায় ১৪ হাজার ৯২৮টি পুকুর, মাছের ঘের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। টাকার অংকে যার পরিমাণ প্রায় ৩০ কোটি টাকা। এছাড়া নদীর জেলেদের নৌকা, জাল, ট্রলারের যে ক্ষতি হয়েছে তা এই তালিকার বাইরে। সেগুলো যোগ করলে ক্ষতির পরিমাণ আরও বেড়ে যাবে বলে দাবি করেন তিনি।

সার্বিক বিষয়ে জেলা প্রশাসক নূর কুতুবুল আলম জানান, জেলায় প্রাথমিকভাবে বিভিন্ন দপ্তর যে ক্ষতির তালিকা এবং ক্ষয়ক্ষতির হিসেব দিয়েছে টাকার অংকে তা প্রায় ৮৪ কোটি ৫৭ লাখ। এর বাইরে ৩৮ হাজার ঘরবাড়ি আংশিক ও সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এগুলোর আর্থিক ক্ষতি হিসেব করলে ক্ষতির পরিমাণ আরও ৫০ কোটি বৃদ্ধি পায়। সে হিসেবে ঘরবাড়ি, ফসল, মৎস্য, প্রাণী, বাঁধ সব মিলিয়ে ক্ষতির পরিমাণ দেড়শ’ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে। 

তিনি জানান, প্রাথমিকভাবে ক্ষতির এ হিসেব নিরুপণ করা হয়েছে। পরবর্তীতে এটি আরও বাড়তে পারে।

এএইচ


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি