ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪

চক্ষুরোগে আক্রান্ত সেই বাস্টারেস-ই এখন কোটি শিশুর চিকিৎসক

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৩:৩০, ১৪ জুলাই ২০১৮

ডা. আন্দ্রে বাস্টারোস ছোটো বেলায় স্পষ্ট করে কিছুই দেখতেন না। এমনকি গাছের পাতা, চন্দ্র-সূর্য কিছুই না। শিক্ষকরা তাকে ডাকতেন অলস ও কুঁড়ে শিশু হিসেবে। ১২ বছর বয়সে তার মা তার চোখ পরীক্ষা করান। এরপর থেকেই বাস্টারোসের গল্পটা পরিবর্তন হয়ে যায়।

বর্তমানে চক্ষু ডাক্তার হিসেবে তার খ্যাতির জুড়ি নেই। বিশ্বের লাখ লাখ শিশুকে চোখের রোগ থেকে মুক্তি দিতে তার আবিষ্কৃত স্মার্টফোন টেকনোলোজি বিশ্বের অগণিত শিশুকে আশার আলো দেখাচ্ছে।

ডা. বাস্টারেস বলেন, চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার পরই আমি নতুন করে জীবন খুঁজে পাই। এরপর থেকে আমি আকাশের তারা প্রত্যক্ষ করেছি। সমুদ্রের গর্জন দেখেছি। গাছের পাতা অবলোকন করেছি। স্কুলে ভালোবাবে পড়ালেখা শুরু করতে পেরেছি।

বিশ্বে এখনো ১ কোটি ২০ লাখ শিশু রয়েছে যারা চোখের সমস্যায় ভুগছেন। তবে এখনো এমন অনেক জায়গা আছে যেখানে শিশুরা চিকিৎসকের স্মরণাপন্ন হওয়ার সুযোগ পান না। আবার চিকিৎসকদেরও সেসব জায়গায় যাওয়ার সুযোগ নেই।

কেনিয়ার একটি গ্রামে কেবল একজন চক্ষু ডাক্তার আছেন। খোদ যুক্তরাষ্ট্রেও ১৫ হাজার ৮০০ মানুষের জন্য একজন চক্ষু ডাক্তার রয়েছে। ২০১১ সালে বাস্টারোস ইংল্যান্ডে গবেষণাকালে কেনিয়া, কিটালের চক্ষু স্বাস্থ্য নিয়ে গবেষণা চালিয়েছেন।

সে ওই সময় ১ লাখ ইউরোর চিকিৎসা সংক্রান্ত যন্ত্রপাতি ক্রয় করলেও সেগুলো খুব একটা কাজে দেয়নি। তবে ওইসময় বাস্টারোস দেখতে পান ওইসব যন্ত্রপাতি কোনো কাজে না আসলেও মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সেখানে সবার কাছে পৌঁছা সম্ভব দেখতে পান। আর ওই এলাকায় ৮০ শতাংশ মানুষ মোবাইল ফোন কেনার সামর্থ্য রাখে বলে দেখতে পান তিনি।

এসব সুবিধা-অসুবিধা দেখতে পেয়ে ডা.বাস্টারোস আবিষ্কার করেন নতুন এক ফর্মুলা। ওই ফর্মুলার নাম পিক। পিক চার্টের মাধ্যমে একজন লোক দেখতে পারবেন সে কতটুকু দেখতে পারে। তার চোখের সমস্যা কতটুকুন।

চিকিৎসক থেকে শিক্ষক বাস্টারোল:

ওই ফর্মুলার মধ্য দিয়ে গ্রামের সাধারণ মানুষজনও চোখের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করতে পারবে। এরইলক্ষ্য হিসেবে গ্রামের সাধারণ শিক্ষিতদের তিনি প্রশিক্ষণ দিয়ে যাচ্ছেন। এই প্রশিক্ষণ নিয়ে তারা নিজেরও চক্ষুরোগের চিকিৎসক হয়ে যাচ্ছেন। বর্তমানে এই পদ্ধতিটি বিভিন্ন স্কুলে প্রয়োগ করা হচ্ছে। এখানে সফলতা পেলেই সেটি সারা বিশ্বে প্রয়োগ করা হবে বলে জানা গেছে।

যেভাবে কাজ করে এ পদ্ধতি:

শিশুদের প্রথমে ইংরেজি বর্ণ ই আকৃতির বেশ কয়েকটি বিষয়ের সঙ্গে পরিচয় করানো হয়। শিশুরা ওইসব বর্ণের দিক বলেন, তাদের ত্রুটির উপর নির্ভর করেই তাদের সমস্যা চিহ্নিত করা হয়। যারা স্ক্রিন দেখতে পায় না, চিকিৎসকরা তারপর তাদের স্ক্রিনটা ঘুরিয়ে নেন। এরপরই তারা বলতে পারেন শিশুদের চোখের বর্তমান অবস্থা কোন পর্যায়ে আছে।

সূত্র: বিবিসি
এমজে/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি