ঢাকা, রবিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

চট্টগ্রামে ৯৩ শতাংশই ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৯:২৬, ৬ আগস্ট ২০২১

Ekushey Television Ltd.

চট্টগ্রামে করোনা আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে ৯৩.৩৩ শতাংশই ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত। এক দল গবেষক এক মাসে চট্টগ্রামের ৩০ জন কোভিড পজিটিভ রোগীর ওপর গবেষণা চালিয়ে এমন তথ্য জানিয়েছেন। 

চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় (সিভাসু) ও বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের (বিসিএসআইআর) ৯ জন গবেষকের ‘কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি মূল্যায়ন’ শীর্ষক এক গবেষণায় এমনটিই উঠে এসেছে।

শুক্রবার (৬ আগস্ট) চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. গৌতম বুদ্ধ দাশ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, ‘কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি মূল্যায়ন’ শীর্ষক গবেষণায় ১ থেকে ১৯ জুলাইয়ের মধ্যে চট্টগ্রামে করোনায় সংক্রমিত ৩০ ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহ করা হয়। ৩০টি নমুনার মধ্যে ২৮টিতেই ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। অর্থাৎ, ৯৩.৩৩ শতাংশ ক্ষেত্রে চট্টগ্রাম অঞ্চলের সংক্রমণ এখন ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট দ্বারা হচ্ছে। বাকি দুইটি নমুনার মধ্যে একটিতে আলফা ভ্যারিয়েন্ট (ইউকে ভ্যারিয়েন্ট) এবং অপরটিতে লিনিয়েজ-এ ভ্যারিয়েন্ট। উপজেলা পর্যায়ে সবচেয়ে বেশি রোগী পাওয়া যায় হাটহজারীতে। 

সিভাসুর উপচার্য প্রফেসর ড. গৌতম বুদ্ধ দাশ বলেন, ‘এর আগে চট্টগ্রাম অঞ্চলে আলফা বা ইউরো ভ্যারিয়েন্ট ও বিটা বা সাউথ আফ্রিকান ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতি থাকলেও এবার তা ৯৩ ভাগই ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট।’

তিনি বলেন, আলফা ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতি এখনো আছে তবে তার শতকরা হার খুবই কম ৩০টি নমুনার ১৫ টি সিটি কর্পোরেশন এলাকার রোগী এবং বাকি ১৫টি বিভিন্ন উপজেলার রোগীদের থেকে সংগ্রহ করা। প্রাপ্ত ফলাফল নির্দেশ করে যে শহর ও গ্রাম অঞ্চলের সম্ভবত সমভাবে ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়েছে। ৩০টি নমুনার জিনোম সিকোয়েন্সের তথ্য পাবলিক ডাটাবেজ জিআইএসএআইডিতে জমা দেওয়া হয়েছে। 

জিনোম সিকোয়েন্সের জন্য ২১ থেকে ৭৪ বছর বয়সীদের থেকে নমুনাগুলো সংগৃহীত ছিল। যাদের মধ্যে ১২ জন পুরুষ ও ১৮ জন নারী রয়েছেন। এরমধ্যে পনেরটি নমুনা ছিল যাদেরকে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিতে হয়েছিল।

সিভাসু উপাচার্য প্রফেসর ড. গৌতম বুদ্ধ দাশের সার্বিক নিদের্শনায় এবং পোস্ট্রি রিসার্চ ও ট্রেনিং সেন্টার (পিআরটিসি), সিভাসুর আর্থিক সহায়তায় সিভাসুর একদল গবেষক গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। গবেষক দলে আছেন প্রফেসর ড. পরিতোষ কুমার বিশ্বাস, প্রফেসর ড. শারমিন চৌধুরী, ডা. ইফতেখার আহমেদ রানা, ডা. ত্রিদীপ দাশ, ডা. প্রনেশ দত্ত, ডা. মো. সিরাজুল ইসলাম, ডা. তানভীর আহমদ নিজামী। কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি মূল্যায়ণ বিষয়ে একটি গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করছেন তারা। 

এই গবেষণা কার্যক্রমের একটি অংশ হিসেবে গত ১ জুলাই থেকে ১৯ জুলাইয়ের মধ্যে সংগৃহীত ৩০টি নমুনা থেকে করোনাভাইরাসের পূর্ণাঙ্গ জিনোম সিকোয়েন্স বা জীবন রহস্য উন্মােচন করার জন্য ঢাকায় বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদে (বিসিএসআইআর) প্রেরণ করা হয়। বিসিএসআইআর বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. সেলিম খান ও ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. মোরশেদ হাসান সরকার এ গবেষণায় অংশগ্রহণ করেন। 

অথচ গত জুন মাসে পরিচালিত এক গবেষণায় চট্টগ্রামে মাত্র ২ ভাগ ভারতীয় ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে সংক্রমণ পাওয়া গেছিল। দুই মাসের মধ্যেই তা প্রায় শতভাগের কাছাকাছি চলে যায়। 

জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সুত্র জানায়, চট্টগ্রামে এখন পর্যন্ত করোনায় এক হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছেন। তাঁদের মধ্যে জুলাই মাসে মারা গেছেন ২৬১ জন, যা অতীতের যে কোনো মাসের চেয়ে কয়েক গুণ বেশি। একই মাসে চট্টগ্রামে করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে সাড়ে ২৩ হাজারের বেশি। এই সংখ্যা আগের যে কোনো  মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। চলতি আগস্ট মাসের প্রথম ৬ দিনে চট্টগ্রামে করোনায় মারা গেছেন ৭৪ জন। শনাক্ত হয়েছেন ৬ হাজার ৭০১ জন। জুলাই মাসে রেকর্ড সংখ্যক রোগী মৃত্যুর জন্য এ ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টকেই দায়ী করছেন চিকিৎসকরা। 

এসি

 


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি